উদ্যোক্তা সাহিদা আক্তার সুপ্তি ইডেন মহিলা কলেজ থেকে অর্থনীতিতে অনার্স ও মাষ্টার্স করেছেন। স্বপ্ন ছিল ব্যাংকার হবেন। পরে পথ বদলে তিনি এখন একজন উদ্যেক্তা।
নিজের আইডেন্টিটি তৈরি করা, স্বাধীনভাবে নিজের কাজ করার জন্য উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছেন। তার কাজের মাধ্যমে মানুষের কল্যাণ করতে চান এই উদ্যোক্তা।
উদ্যোগের শুরুটা প্রথমে ছিল অফলাইনে। ২০১৫ সালের দিকে শুরু। তখন পোশাক নিয়ে কাজ করেছেন। পরবর্তীতে জামদানি, মনিপুরি ফিউশন যার যাত্রা অনলাইনে চলতি বছরের ৩ মে।
২০২০ এর করোনার সময় তার অফলাইন বিজনেস প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। অনেক প্রোডাক্ট স্টক হয়ে গিয়েছিল। তখন এক বান্ধবী পরামর্শ দেন অনলাইন পেইজ খোলার। ওই মূহূর্তে অনলাইনে কাজ করার কোন অভিজ্ঞতা তার ছিল না।
অনেক চিন্তা ভাবনা করে অনলাইন পেইজ খুলে বিজনেসটা আবার শুরু করার চেষ্টা করেন। তখন অনলাইনে নতুনত্ব আছে এমন কোন পণ্য নিয়ে ভাবতে থাকেন। সেই ভাবনা থেকে শুরু করেন জামদানি ও মনিপুরির ফিউশন।
উদ্যোক্তা সুপ্তির মূল পণ্য জামদানি ও মনিপুরি ব্যাগ। ডেনিম নিয়ে নতুন করে কাজ করছেন। জামদানি, মনিপুরি কম্বো সেটে তিনি এখন বেশি ফোকাস করছেন।
উদ্যোক্তা জানান, উদ্যোগের ক্ষেত্রে প্রথম বাধা আসে পরিবার থেকে। পড়াশোনা শেষ করে চাকরি না করে কেন তিনি সেলার হিসেবে পরিচিত হবেন এটা আত্মীয় স্বজনরা বা তার পরিবারের কেউ মানতে চাননি প্রথম দিকে। অনলাইনে কাজ করলে মোবাইল নিয়ে বেশি সময় থাকতে হবে, বাচ্চাদের সময় দিতে পারবেন না; এসব নিয়ে অনেক কথা শুনেছেন। পরের বাধা ডেলিভারি সিষ্টেম। তৃতীয় বাধা: জামদানি খুব এক্সপেনসিভ পণ্য, মূলধন বেশি দরকার, অথচ তার পর্যাপ্ত মূলধন ছিল না শুরুর দিকে।
পণ্যের সোর্সিং থেকে শুরু করে ডেলিভারি দেয়া, পণ্যের যাবতীয় কাজ এখনও তিনি একাই করছেন।
দেশের ভেতরে ঢাকা, টাঙ্গাইল, নেত্রকোণা, সিলেট, চট্রগ্রাম, ফেনী, বরিশাল, কিশোরগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাঙ্গামাটিসহ ৩০টির বেশি জেলায় তার পণ্য গেছে বলে জানিয়েছেন সুপ্তি।
দেশের বাইরে আমেরিকা, অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা, লন্ডন, ফ্রান্সসহ ১৫টির বেশি দেশে তার পণ্য পৌঁছে গেছে। মাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার পণ্য সেল হয়। তার ক্রেতা মূলত সৌখিন নারীরা যারা জামদানি ও মনিপুরি খুব ভালোবাসেন।
প্রথম দিকে কেউ সাপোর্ট না দিলেও বর্তমানে উদ্যোক্তার স্বামী, বাচ্চারা ভীষণ সাপোর্ট করছেন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় তার ইচ্ছা নতুন নতুন কাজ উপহার দেওয়া, নিজের সাথে নিজের প্রতিযোগিতা, নিজেকে আরও বেশি দক্ষ করা।
সুপ্তির স্বপ্ন তার নিজের একটি কারখানা গড়ে তোলা। কাজের সাথে আরও কমপক্ষে ১০০ জনকে সম্পৃক্ত করা। তার কাজের মাধ্যমে যেন অনেকের কর্মসংস্থান হয় সেই স্বপ্ন দেখেন উদ্যোক্তা সাহিদা আক্তার সুপ্তি।
মাসুমা শারমিন সুমি
উদ্যোক্তা বার্তা