বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মধু রফতানির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। জাপানে এখন আমাদের মধু রফতানি হচ্ছে। এ বছর চারশ মেট্রিক টন মধুর অর্ডার পাওয়া গেছে। এটা আমাদের জন্য খুশির খবর। আমাদের যারা মধু উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত, তারা অনেক নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন মধু উৎপাদন করছে। এছাড়াও বিদেশি অনেক প্রযুক্তির মাধ্যমে মধু উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাত করছে।
রাজধানীতে চলছে মৌ মেলা। চতুর্থবারের মতো এ মেলার আয়োজন করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এবারের মেলায় সরকারি ৬ টি ও বেসরকারি ৬৮টি প্রতিষ্ঠানের ৭৪ টি স্টল স্থান পায়। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে। মেলা আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে।

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, কৃষির আধুনিকায়ন ও বাণিজ্যিকীকরণে মধু একটি নতুন সংযোজন। যা আমাদের রপ্তানি বহুমুখীকরণে সহযোগিতা করবে। আগে মধু সীমিত আকারে উৎপাদন হলেও এখন বাণিজ্যিকভিত্তিতে মধু উৎপাদন শুরু হয়েছে। জাপানে আমাদের মধু রপ্তানি হচ্ছে।

সোমবার রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) চত্বরে তিন দিনব্যাপি জাতীয় মৌ মেলা ২০২০ এর উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। মেলা উপলক্ষে বিএআরসি অডিটোরিয়ামে ‘পুষ্টি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য মৌচাষ’ বিষয়ক সেমিনারে অনুষ্ঠিত হয়।

ওই অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী বলেন: কৃষিক্ষেত্রে আমাদের অসাধারণ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। দানাদার খাদ্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। আলুতে আমরা উদ্বৃত্ত রয়েছি। এ রকম আমরা অনেক ফসলে সারপ্লাস রয়েছি। কৃষি পণ্যগুলো প্রক্রিয়াজাত ও মূল্য সংযোজন করে এমন পণ্য করতে হবে, যেগুলোর বাজারমূল্য অনেক বেশি।

ড. রাজ্জাক বলেন, তাই ফসলের মাঠে মৌ চাষ কৃষকের জন্য বাড়তি আয়ের সংস্থান করে থাকে। মৌ সম্পদের টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করার জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার, প্রসেসিং ও বাজারজাত অপরিহার্য। মূল্যবান মৌ সম্পদ এবং মধু উৎপাদন ও বিপণনের মাধ্যমে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব। কৃষির সম্ভাবনা অনেক বেশি। কৃষির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ও রপ্তানি বহুমুখীকরণের মাধ্যমে মুজিব বর্ষ হবে সমৃদ্ধির বছর।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের নির্বাচনি অঙ্গীকার ছিল পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা। এক্ষেত্রে পুষ্টি চাহিদা নিশ্চিত করতে মধু একটি অন্যন্য খাদ্য। কৃষি প্রধান বাংলাদেশে মৌমাছি পালন, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের বড় সম্ভাবনা রয়েছে। মৌ চাষ সম্প্রসারণ পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি পরাগায়নের মাধ্যমে ফল ও ফসলের উৎপাদন বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই ফসলের মাঠে মৌ চাষ কৃষকের জন্য বাড়তি আয়ের সংস্থান করে থাকে। কৃষির চ্যালেঞ্জ মোকাবিল করে ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে রফতানি বহুমুখীকরণের মাধ্যমে মুজিববর্ষকে সমৃদ্ধির বছরে রূপান্তরিত করা হবে বলে বক্তব্যে আশাবাদ জানান কৃষিমন্ত্রী।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মো: আবদুল মুঈদ এর সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার; কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান ও বিএআরসি’র নির্বাহী চেয়ারম্যান ড.শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিকল্পনা ও মূল্যায়ন উইংয়ের সাবেক পরিচালক ড. সৈয়দ নূরুল আলম। স্বাগত বক্তব্য দেন ডিএইর হর্টিকালচার উইংয়ের পরিচালক মো. কবির হোসেন।

এর আগে মেলা উপলক্ষ্যে গতকাল বিকাল ২:৩০ টায় মানব উদ্দীপন বন্ধন অনুষ্ঠিত হয় বিএআরসি চত্বর হতে বিজয় সরণি মোড় পর্যন্ত। মানব উদ্দীপন বন্ধনে মৌ চাষের বিভিন্ন ধরনের প্লেকার্ড ও ব্যানার নিয়ে অংশ নেয় কৃষি মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ সংস্থাগুলো।
ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা