গৃহের অন্দরসজ্জা সবারই ভালো লাগে। নিজের ঘর সুন্দর করে সাজাতে কে না চায়। আর এই গৃহের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন বীনা।
বাবা ছিলেন একজন সামরিক কর্মকর্তা। জন্ম নোয়াখালী হলেও বাবার চাকরি সুবাদে বেড়ে ওঠা ঢাকায়। এগারো ভাই-বোনের মধ্যে বীনা অষ্টম। ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিলো আর্কিটেক্ট নিয়ে পড়াশোনা করবার কিন্তু তা হয়ে ওঠেনি। পড়াশোনা করেছেন সোশিওলোজিতে। চাকরিও করেছেন আন্তর্জাতিক সংস্থায়। কিন্তু মনের ভিতর আর্কিটেক্ট হওয়ার বাসনা থেকেই গিয়েছিলো।
এরই মাঝে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন কাজী ইসমত জাহান বীনা। স্বামী ছিলেন একটি কর্পোরেট হাউজের জেনারেল ম্যানেজার। দুজনেই চাকরি করতেন। বেশ ভালোই চলছিলো সংসার। স্বামী অফিসের কাজে সিলেট গিয়েছিলেন, সেখান থেকে ফেরার পথে এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হন। দীর্ঘ দিন অসুস্থ থাকেন অবস্থায় স্বামী খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন আর তখন থেকেই শুরু হয় জীবনের এক দূর্গম পথচলা।
সবকিছু মিলিয়ে বীনার চাকরি করা আর সম্ভব হলোনা। স্বামীর পাশে থাকা আর সেই সময়টুকুতে তিনি ইন্টেরিওর ডিজাইনের কোর্সটা কমপ্লিট করে ফেললেন। টুকটাক কাজও পেতে শুরু করেন। প্রথম দিকে কাজ পাওয়াটা খুব কঠিন ছিলো বীনার জন্য। বীনা যেহেতু আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত ছিলেন, সেই সুবাদে এক বিদেশীর সাহায্যে শ্রীলংকান একটি অফিসের ইন্টেরিওর ডিজাইন করার কাজ পেয়ে যায় বীনা। সেসময় বীনার কোন স্থায়ী কর্মী ছিলো না। ২০জন অস্থায়ী কর্মী এবং প্রায় ১৫জন সাপ্লায়ার নিয়ে কাজটি শেষ করতে প্রায় ৪ মাস লেগে যায়।
এই কাজের মধ্য দিয়েই তার বর্তমান কাজের পথচলা। এ যাত্রায় স্বামীও সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেন। ধীরে ধীরে অনেক কাজ পেতে শুরু করেন। কাজের পরিধি বাড়তে থাকে। উল্লেখযোগ্য প্রজেক্ট ভিত্তিক সরকারি-বেসরকারি অনেক বড় বড় অফিসের ইন্টেরিওর ডিজাইনের কাজ করেছেন বীনা। এফডিসি এবং পেট্রো বাংলার কাজও তিনি করেছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ ইজিপির (ইলেক্ট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট) আওয়াতায় কাজ করছেন। এছাড়াও বসুন্ধরা আবাসিক এবং প্ল্যানিং মিনিস্ট্রি’র সাথে কাজ করছেন তিনি।
একজন উদ্যমী নারী তার উদ্যম ও পরিশ্রম দিয়ে আজ হয়েছেন সফল উদ্যোক্তা। বর্তমানে অফিসের ১৫ জন পারমানেন্ট এমপ্লয়ি, ৩০ জন কন্ট্রাক্টচুয়াল এমপ্লয়ি নিয়ে কাজ করছেন সাফল্যের সাথে। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম Dot Sense & Dot’s Craft. ২০১৬ থেকে ইন্টেরিওর ডেকোরেশন ওয়েস্টেজ থেকে গৃহসজ্জা ও অফিসের ব্যবহার্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী তৈরী ও সরবরাহ করে যাচ্ছেন সফল এই উদ্যোক্তা। ভবিষ্যতে তিনি তার Dot Sense-কে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান এবং সে লক্ষেই তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।
ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা