ক্রেতাদের আবদারেই মৌসুমী কবীর হলেন প্রশিক্ষক

0
উদ্যোক্তা মৌসুমী কবীর

রেড ভেলভেট, বাটারস্কচ, ব্রাউনি, ফনডেন্ট, মডেলিং চকোলেট কেক সহ বর্তমানে প্রায় ১৫ ধরনের কেক তৈরি করছেন কেকস অ্যান্ড বেকস এর স্বত্বাধিকারী মৌসুমী কবীর।

মৌসুমী কবীরের ক্রেতাদের মধ্যে আশি শতাংশই রিপিট কাস্টমারের তালিকাভুক্ত। জন্মদিন, বিয়েবাড়ি, মুখে ভাত, প্রিয় মানুষটিকে সারপ্রাইজ করা সহ বিভিন্ন শুভ অনুষ্ঠানে নিয়মিত যাচ্ছে কেকস অ্যান্ড বেকস এর কেক সহ নানা ধরনের খাবার।

বারবার অর্ডার করতে করতে মৌসমী কবীর কে অনেকেই বলে ফেলতেন আপু আমাদের ও যদি আপনার মতো কেক তৈরি শেখাতেন তাহলে খুব ভালো হতো। এভাবে একজন দুজন করে বলতে বলতে একটা সময় মৌসুমী কবীরের অনেক ক্রেতাই প্রশিক্ষণের জন্য বলতে থাকলেন। ২০১৭ সালে মৌসুমী কবীর সকলের আবদারে নিজ বাসাতেই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা চালু করেন। ফনডেন্ট, মডেলিং চকোলেট সহ বিভিন্ন ধরনের কেক, নজেলের ব্যবহার, পেটিস, বান ইত্যাদি তৈরির প্রশিক্ষণ ও দিয়ে থাকেন উদ্যোক্তা এবং প্রশিক্ষক মৌসুমী কবীর।

চার দিনের কোর্সে ছয় জন করে শিক্ষার্থী থাকেন তার। কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা এবং সাধারণ গৃহিণী সকল ধরনের শিক্ষার্থী আসে তার কাছে। একশতরো বেশি শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে কোর্স শেষ করেছেন এবং তাদের মধ্যে অনেকে প্রফেশনালি কাজ ও শুরু করেছেন।

ছোটবেলা হতেই রান্নার প্রতি ভীষণ ঝোঁক ছিলো মৌসুমী কবীরের । টেলিভিশনে রান্নার প্রোগ্রামগুলো দেখা হতো নিয়ম করে।প্রয়াত অধ্যাপিকা সিদ্দিকা কবীরের রান্নার অনুষ্ঠানের নিয়মিত দর্শক ছিলেন মৌসুমী কবীর। আজকের পর্বে সিদ্দিকা কবীর যা রান্না করেছেন তা অবশ্যই আজ রাতেই বা কাল বিকেলের মধ্যে মৌসুমী কবীর কে রান্না করতেই হবে। এই কাজ টি ঐসময়ে মৌসুমী কবীরের জীবনে দৈনিক রুটিনের মতোই ছিলো। কখনো মিষ্টি, কখনো বিরিয়ানি, মাংস, কেক, পেটিস ইত্যাদি নানা ধরনের খাবার তৈরি এক এক করে আয়ত্ত করে ফেলেন এ উদ্যোক্তা।

অনেক আগে থেকেই রান্নাবান্নাতে পারদর্শী হলেও ২০১২ সালের দিকে প্রথম কেক ডেলিভারি করেন উদ্যোক্তা মৌসুমী কবীর। তখন শুধুমাত্র তিনি সুস্বাদু কেক তৈরিই জানতেন। ঐকেকের মূল্য কিভাবে নির্ধারণ করবেন, উপকরণ গুলো সহজে কোথায় পাবেন ইত্যাদি খুটিনাটি বিষয়গুলো সম্পর্কে তখনো খুব একটা ধারণা ছিলো না তার। উদ্যোক্তা বার্তাকে তিনি বলেন _প্রথম অবস্থায় আমি মূল্য নির্ধারণের বিষয়ে খুব কাচা ছিলাম এমনো হয়েছে ছয়শত টাকার পিজ্জা আমি একশত টাকায় বিক্রয় করে দিয়েছি। আমার বাসায় থাকা উপকরণ দিয়ে কেক বানিয়েছি বলে আমি পাঁচশত টাকার কেক দুইশো আড়াইশো তেও দিয়ে দিতাম। তখন আমি জানতাম না এই শিল্পগুলোর মূল্য কিভাবে নির্ধারণ করতে হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন স্থান হতে আমি এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমি চেষ্টা করি আমার শিক্ষার্থীদেরকে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিতে।

আমার এ কাজে সর্বদা সহযোগিতা করেন আমার স্বামী। বাজার করা থেকে খাবার প্যাকেজিং সকল ক্ষেত্রেই তিনি আমাকে সহযোগিতা করেন।করোনা পরিস্থিতিতে যখন সব ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিলো সে সময় আমার কাজের চাপ কিছুটা কম থাকায় অভিজ্ঞতা বাড়াতে বেশ কিছু অনলাইন কোর্স করেছি রান্না বিষয়ে। আমি নিজেও আরো শিখতে চাই এবং অন্যদের শেখানোর কাজটি ও বজায় রাখতে চাই যাতে অন্যরাও আত্মনির্ভরশীল হতে পারে।

তামান্না ইমাম,
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here