১৯৯৪ সালে দিনাজপুরে এক টেকনিক্যাল স্কুল থেকে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স এ ডিপ্লোমা করেন মোঃ গোলাম মোস্তফা। ১৯৯৫ সালে বাবার দেয়া মাত্র নয় হাজার টাকা দিয়ে ছোট্ট একটি দোকান ভাড়া নিয়ে রেডিও, টেলিভিশন, সহ বৈদ্যুতিক মোটর মেরামত ও সার্ভিসিং সেন্টার স্থাপন করেন। টুকটাক কাজ করতে থাকেন। এর মাঝে অনেক তরুণকে তিনি ইলেকট্রনিক্স সার্ভিসিং এর প্রশিক্ষণও দেন।

প্রত্যন্ত এলাকার সেচ পাম্প ও শিল্প কলকারখানার বৈদ্যুতিক মোটর মেরামত করার জন্য শহরে নিয়ে যেতে অনেক কষ্ট হয় কৃষক ভাইদের। তাদের কথা ভেবে তিনি সেচ পাম্প ও বৈদ্যুতিক মোটর মেরামত শুরু করেন।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে “বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ” এর সেচ প্রকল্পের আওতায় গভীর নলকূপ হতে ডিজেল ইঞ্জিন অপসারণ পূর্বক বৈদ্যুতিক মোটর স্থাপন করে পুনরায় সেচ কাজ চালু করেন। সাব-মারসিবল মোটর পাম্প এর যন্ত্রাংশ দেশে উৎপাদন না থাকার কারণে মেরামতের জন্য আনুসাঙ্গিক যন্ত্রাংশ ও রি-ওয়াইন্ডিং ক্যাবল এর ব্যাপক চাহিদা দেখা দেয়। উদ্যোক্তা উপলব্ধি করেন, দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহার করে শুধুমাত্র মেশিনারীজ আমদানী করে দেশের এই ব্যাপক চাহিদা মেটানো সম্ভব।

২০১০ সালে ইন্ডিয়া থেকে মেশিনারিজ আমদানি শুরু করেন। ১৪ জন কর্মী নিয়ে মহাদেবপুর, নওগাঁতে ‘প্যারাগন কেবল’ নামে একটি ফ্যাক্টরি দেন। কেবলস এবং অন্যান্য যন্ত্রাংশ প্রস্তুত শুরু করেন ফ্যাক্টরিতে। পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে স্থান পরির্তন করেন উদ্যোক্তা গোলাম মোস্তফা। ২০১৫ সালে বিসিক শিল্প নগরী, নওগাঁতে জায়গা নেন এবং সেখানে ১৮জন কর্মী নিয়ে প্রোডাকশন শুরু করেন । প্রতিষ্ঠানটির নাম দেন “প্যারাগন এগ্র্যো ইন্জিনিয়ারিং”। বর্তমানে উদ্যোক্তার তৈরি ক্যাবলস উত্তরবঙ্গ সহ সারাদেশে বৈদ্যুতিক সাব-মারসিবল মোটর রি-ওয়াইন্ডিং ওয়্যার ও রিপেয়ারিং এর কাজে খ্যাতির সাথে ব্যবহৃত হচ্ছে।

উদ্যোক্তা ইউবি প্রেসকে বলেন, “দেশের বাইরে থেকে কোন যন্ত্রাংশ বা কাঁচামাল আমদানি না করে সকল পণ্য আমি নিজেই তৈরি করতে চাই এবং দেশের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তিকে আরো সচল রাখতে চাই”।
দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহার করে উত্তরবঙ্গসহ সাড়া দেশে বৈদ্যুতিক সাব মারসিবল পাম্প এবং এর বিভিন্ন যন্ত্রাংশের চাহিদা মিটিয়ে সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছেন মাঝারি খাতের উদ্যোক্তা গোলাম মোস্তফা।
রাজশাহী থেকে রাইদুল ইসলাম শুভ
এসএমই করেস্পন্ডেন্ট ,উদ্যোক্তা বার্তা