২০০৭ সালে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেও পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন মাহমুদা নাসরীন লিমা। উপলব্ধি করেছেন কিছু একটা করা দরকার। ভেবেছেন এমন কিছু করবেন যাতে পরিবারের জন্য অবদান রাখতে পারেন, চেয়েছেন কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে।
সিদ্ধান্ত নিলেন ঘরে বসেই কিছু করতে হবে যাতে করে কাজের পাশাপাশি পরিবারকেও সময় দিতে পারেন। তখন তার এক নিকটাত্মীয় মামা থ্রি-পিসের ব্যবসা করতেন। একই এলাকায় বসবাসের সুবাদে নিয়মিত যোগাযোগ হতো।
প্রথমে মামার কাছ থেকে ৫ টা ড্রেস নিলেন লিমা। বলেছিলেন, ড্রেসগুলো বিক্রি করে তারপর মূল্য পরিশোধ করবেন। মামা রাজী হলেন। থ্রি-পিসগুলো পরিচিতজনদের কাছে বিক্রি করলেন। তখনো ব্যবসার আদ্যপ্রান্ত ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারেননি তিনি। কিছুদিন এভাবেই চলতে থাকলো।
একসময় এক বান্ধবীর কাছ থেকে জানতে পারলেন অনলাইনের মাধ্যমেও ক্রেতার কাছে পণ্য নিয়ে পৌঁছানো সম্ভব। বান্ধবীর সাহায্য নিয়ে ফেসবুকে একটি পেইজ তৈরী করলেন। ঠিক করলেন সম্পূর্ণ নিজস্ব ডিজাইনেই দেশীয় পোষাক বানাবেন।
তিনি বিলেন, “ঢাকায় বসে একটা কারখানা করার সামর্থ্য আমার ছিলোনা। কর্মী সংগ্রহ থেকে শুরু করে কাপড় আর সুতার সামঞ্জস্য এবং পণ্য ডেলিভারি সবকিছুই আমার কাছে নতুন। ধীরে ধীরে পথ খুঁজে পেলাম। ভুল করতে করতেই সবকিছু শিখেছি। প্রোডাকশনও বাড়তে থাকলো।”
তিনি আরও বলেন, “এই কাজে আমার স্বামী আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। আমার কোনো মূলধন এবং অভিজ্ঞতা ছিলোনা। তবে আমি কোনোদিন পিছুপা হইনি, ধৈর্য্য ধরে দিনরাত পরিশ্রম করেছি। চেষ্টা করেছি দেশীয় পোষাক তৈরি করে সুঁই-সুতার ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতে, নতুন কিছু উপহার দিতে।”
বর্তমানে প্রায় ৬০০ জন কর্মী প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসে Lima’s boutique এর কাজ করে থাকেন। আগামীতে ঢাকা এবং ঢাকার বাইরেও শোরুম দেয়ার মাধ্যমে আরো বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির পরিকল্পনা রয়েছে উদ্যোক্তার।
খুরশিদা পারভীন সুমী