ঢাকা কমার্স কলেজে স্নাতকে পড়াকালীন সময়েই বিয়ে হয়ে যায় ইরার। সেসময় আড়ং-এর বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কিছুদিন চাকরিও করেছেন তিনি। কিন্তু বিয়ের পর কর্ম জীবন অনেকটা থেমে গেলো। বিশেষ করে সন্তানকে নিয়ে সংসার সামলানো বেশ কঠিন ছিল তার জন্য। কিন্তু ইরা সব সময় স্বাধীনভাবে কিছু একটা করতে চাইতেন। যেখানে সে তার নিজের মতো করে কাজ করতে পারবে এবং তার সন্তানের পাশাপাশি সংসারেও সময় দিতে পারবে। সামাজিক পাতায় বিভিন্ন অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া থেকে ইরাও একসময় শুরু করে দিলেন। ঘরে বসে অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে তার উদ্যোগকে দাঁড় করাবার চেষ্টা করতে লাগলেন।
প্রথম প্রথম ইরা খুচরা ব্যবসায়ীদের থেকে পণ্য এনে অনলাইনে বিক্রি করতেন তখন তেমন কোনো পুঁজি ছিলনা তার। একেবারে শূন্য থেকেই শুরু করেছিলেন। তারপর ইরা তার স্বামীকে তার উদ্যোগের বিষয়ে জানালে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন তিনি। স্বামীর জমানো অল্পকিছু টাকা দিয়ে নিজে থেকে প্রোডাক্ট তৈরি শুরু করলেন ইরা। আর তখন থেকেই ইরা তার নিজস্ব পন্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তার স্বামীর সহযোগিতায়।
শুরু থেকেই মেয়েদের পোশাক নিয়ে কাজ করছেন উদ্যোক্তা ফেরদৌস আক্তার। থ্রী-পিস, কুর্তি, ওড়না, পাজামা, প্যান্ট, ব্লাউজ, বাচ্চাদের ফ্রক, ছেলেদের পাঞ্জাবী, ফতুয়া এবং গ্রাহকের পছন্দ মতো অর্ডার করা বিভিন্ন পোশাকের ডিজাইন তিনি করে থাকেন। উদ্যোক্তা ফেরদৌস আক্তার ইরা’র অনলাইন প্লাটফর্ম ‘নয়া নন্দিনী’ থেকে ১৪ জন কর্মীর সহযোগিতায় মাসে প্রায় ৩,০০০-৫,০০০ পিস পণ্য উৎপাদন হয়ে থাকে। যার বেশীর ভাগ অংশই বিক্রি করে হয়ে যায়। দেশের ভিতর প্রায় সকল বিভাগ, জেলা, থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে নয়া নন্দিনী’র পণ্য পৌঁছে যায়।
তিনি মনে করেন, ‘ সফলতা আজকেই আসবে না, কিন্তু অবশ্যই আসবে। নিজের এবং নিজের উদ্যোগের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে এবং সেই সাথে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে পরিবর্তন আনতে হবে।’
মুন্সীগঞ্জের মেয়ে ইরা,বড় হয়েছেন ঢাকায়। ঢাকা নৌবাহিনী কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং ঢাকা কমার্স কলেজ থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শেষ করেন। তিনি স্বপ্ন দেখেন,ভবিষ্যতে নয়া নন্দিনী ব্র্যান্ডের ছায়াতলে দেশের সব জায়গায় এর শোরুম থাকবে৷ সকল ক্রেতাদের হাতের নাগালে পণ্য পৌঁছে দেয়ার জন্য তিনি সর্বদা কম মুনাফা বেশী বিক্রি নীতি অনুসরণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
সেতু ইসরাত,
উদ্যোক্তাবার্তা