কিছুদিন আগেও সিলেটে অনেকে শখের বশে নিজেদের টিলায় সামান্য কিছু কফি গাছের চারা রোপণ করতেন। বর্তমানে একসময়ের অনাবাদি টিলাগুলোতে কফি চাষ শুরু হয়েছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে এসব কফি বাজারজাত করার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন চাষিরা। প্রবাসী থেকে শুরু করে স্থানীয় উদ্যোক্তারা নিজেদের টিলায় বাণিজ্যিকভাবে কফি চাষে উদ্যোগী হয়েছেন। ধীরে ধীরে এ চাষ বাড়ছে।
সিলেট জেলায় বাণিজ্যিকভাবে কফি চাষ শুরু হয় ২০২১ সালে। এ পর্যন্ত গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ ও জৈন্তাপুর উপজেলার প্রায় ২০ হেক্টর টিলাশ্রেণি জমিতে কফি চাষ করা হয়েছে। অ্যারাবিকা ও রোবাস্টা জাতের কফি এখানে চাষাবাদ হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেটের অতিরিক্ত উপপরিচালক মোহাম্মদ আনিছুজ্জামান জানিয়েছেন, সিলেটের অন্যান্য টিলা অধ্যুষিত এলাকায়ও কফির চাষ বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সিলেটের টিলাগুলো চা-গাছ ছাড়া অন্য কোনো কিছু সেই অর্থে চাষ হতো না। সম্প্রতি টিলায় আনারস, কাজুবাদাম ও কফির চাষ শুরু হয়। চায়ের বিকল্প বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে কফি চাষে গুরুত্ব দিয়ে চাষিদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।
স্থানীয় কফি বাগানের উদ্যোক্তারা জানান, একটা সময়ে অনেকটা অনাবাদি হয়ে পড়ে থাকা টিলাগুলোকে চাষের আওতায় নিয়ে এসেছেন তাঁরা। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিয়ে এসব টিলায় কফি চাষ হচ্ছে। এখন যেসব কফির চারা রোপণ করা হচ্ছে, সেখান থেকে অন্তত দুই বছর পর কফি সংগ্রহ করে বাজারজাত করা হবে।
কফি চাষাবাদে সিলেটের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করায় বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কফি প্রসেসিং ফ্যাক্টরি নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তা আবদুল কালাম চৌধুরী। তাঁর ফ্যাক্টরির অবস্থান সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার আমনিয়া গ্রামে। তিনি বলেন, ‘২০২২ সালে ফ্যাক্টরি নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এটি এখনো নির্মাণাধীন। কফি চাষাবাদে অনেকেই এগিয়ে এসেছেন। অথচ কফি প্রক্রিয়াজাতকরণে কোনো ফ্যাক্টরি নেই। তাই ফ্যাক্টরিটি নির্মাণে উদ্যোগী হই।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অনেকেই এখন বাণিজ্যিকভাবে কফি চাষাবাদে উৎসাহিত হচ্ছেন। অনাবাদি টিলাগুলো আবাদের আওতায় আসায় কৃষকেরা আর্থিকভাবে অনেক লাভবান হবেন। এমনকি অনেকে অনাবাদি টিলাগুলোকে আবাদের আওতায় এনে নানা ধরনের ফলের গাছ রোপণ করছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেটের উপপরিচালক মোহাম্মদ খয়ের উদ্দিন মোল্লা বলেন, সিলেট অঞ্চল কফি চাষের জন্য বিরাট সম্ভাবনাময় একটি অঞ্চল। অনেকেই এখন কফি চাষে উদ্যোগী হয়েছেন। গত দুই বছর আগে চাষাবাদ করা কফিগাছে ফলও এসেছে। এসব কফি এখন হারভেস্ট পর্যায়ে চলে এসেছে।
ডেস্ক রিপোর্ট
উদ্যোক্তা বার্তা