ছোটবেলা থেকেই বড় কিছু করার স্বপ্ন ছিলো ডাঃ ফারজানা রহমানের। স্বপ্ন ছিলো মানুষের পাশে থাকার। এই স্বপ্নকে ধারণ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এম.বি.বি.এস পাশ করার পর উন্নত জীবনের হাতছানি উপেক্ষা করে ফিরে আসেন চলনবিলের মাঝে অবস্থিত নাটোরের সিংড়া থানায়।
অজ্ঞতা আর নিরক্ষরতার হার বেশি হওয়াতে এই এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা বিশেষ করে নবজাতক ও মাতৃমৃত্যুর হার অত্যন্ত বেশি ছিলো। এসব দূর করতে ‘আশার দীপ জ্বেলে যাই’ স্লোগান নিয়ে ২০১৪ সালে ডাঃ ফারজানা রহমান যাত্রা শুরু করেন ‘দীপ মেডিকেল সার্ভিসেস’ নামে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের।
বর্তমানে এটি শুধু ডায়াগনস্টিক সেন্টার নয়, এর সাথে যুক্ত হয়েছে ক্লিনিক, ফিজিওথেরাপি এবং ফার্মেসী।
উদ্যোক্তার সময়োপযোগী উদ্যোগ আর পরম মমতায় ২৪ ঘন্টা সকল প্রকার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ফলে সেখানে বর্তমানে নবজাতক ও মাতৃমৃত্যুর হার যেমনি অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে তেমনি স্বাস্থ্যসেবায় সচেতন হয়ে মানুষ পেয়েছে আশার আলো। এখন আর তাদের চিকিৎসার জন্য দূরদূরান্তে যেতে হয় না, অজ্ঞতা কিংবা সময়মতো সঠিক পরামর্শের অভাবে তাদের হতে হয় না ঝুঁকির সম্মুখীন।
বর্তমানে ৩২ জন নারী কর্মী কাজ করছেন উদ্যোক্তার প্রতিষ্ঠানে। যারা তাদের পরিবারের সমৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখছেন। যাতে নিশ্চিত হচ্ছে নারীর ক্ষমতায়ন।
ডাঃ ফারজানা রহমান বলেন, “গর্ভাবস্থা হতে পাঁচবছর পর্যন্ত শিশুদের যথাযথ মেধা বিকাশ ও স্বাস্থ্য পরিচর্যার লক্ষ্যে মায়েদের সঠিক প্রশিক্ষণ প্রদান ও মানবিক সাহায্য প্রদানের জন্য ‘ঘরে ঘরে মেধাবী মুখ, আগামীর স্বপ্ন বুনুক’ স্লোগান নিয়ে সম্প্রতি যাত্রা শুরু করছে ‘দীপাশা ফাউন্ডেশন’ নামে আমাদের আরেকটি জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান”।
এই সম্পূর্ণ যাত্রায় উদ্যোক্তাকে পাশে থেকে সাহস যুগিয়েছেন তার স্বামী মেজর মাহবুব আলম, বড় বোন আরিফা জেসমিন কনিকা এবং ভাই আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং শ্বশুর আফজাল হোসেন শিকদার বীর বিক্রম।
তিনি বলেন, “পারিবারিক আবহের কারণেই আমি এই দেশ এবং দেশের মানুষকে ভালবাসি। স্বপ্ন দেখি বাংলাদেশকে স্বাস্থ্যসেবায় স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে এবং নবজাতক ও মাতৃমৃত্যুর হার শূন্যের কোঠায় নিয়ে এসে নারীর ক্ষমতায়নের পাশাপাশি সুস্থ ও সুন্দর বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে।”
সামির হোসেন