মাধ্যমিকে পড়াকালীন সময়েই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয় রাহিমা খাতুন রুহীকে। বিয়ের পর বছরখানেকের বেশি সংসার করা হয়নি। ফিরে আসেন বাবার বাড়ি। ফিরে আসার পরের অনুভূতি খুব একটা সুখকর ছিলোনা রুহীর জন্য।
পাড়াপ্রতিবেশিরা নানান কথা শোনাতো তাকে। তাদের এহেন আচরনে আশাহত হলেও ভেঙে পড়েননি তিনি। একসময় সিদ্ধান্ত নিলেন, কিছু একটা করবেন।

নিজেকে স্বাবলম্বী করার প্রয়াস থেকেই টেইলার্সের কাজ শেখা শুরু করলেন তিনি। কাজ শিখে ছয়মাস কাজও করলেন। তারপর ভাবলেন, মফস্বলে থেকে হয়তো ভালো কিছু করা সম্ভব হবেনা, স্থানান্তরিত হলেন চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে।
জীবননগরে এসে ৫ হাজার টাকা পুঁজি সাথে ৩ জন কর্মী নিয়ে টেইলার্সের পাশাপাশি শুরু করলেন হস্তশিল্পের কাজ। থ্রি পিস, ওয়ান পিস, টু পিস, বেড কাভার ইত্যাদি নানান ডিজাইনের পণ্য তৈরি করতে শুরু করলেন। অক্লান্ত পরিশ্রম আর সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজের মান, সবমিলিয়ে ব্যাপক সাড়া পেলেন উদ্যোক্তা রাহিমা খাতুন। বাড়তে থাকলো কাজের পরিধি।

উদ্যোক্তা বার্তাকে রুহী বলেন, “আমি গ্রামের বেকার নারীদের কাজ শিখিয়ে দক্ষ করে আমার প্রতিষ্ঠানে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছি, আমি চাই তারাও অন্যের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজেরাই স্বাবলম্বী হয়ে উঠুক, তারাও উদ্যোগ গ্রহণ করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে ভূমিকা রাখুক সমৃদ্ধশালী দেশ গড়তে।”

বর্তমানে উদ্যোক্তার অধীনে প্রায় ২৫০’র অধিক কর্মী মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। উদ্যোক্তার কারখানায় স্থায়ীভাবে কর্মরত আছেন ১৭ জন, তারা সকলেই স্বশিক্ষিত। যারা পড়াশোনা শেষ করে বেকারত্বের ঘানি টানেনি।
এছাড়াও আগামী বছরের শুরুতে রাজবাড়ির কালুখালিতে উদ্যোক্তার আরো একটি কারখানা চালু হবে। যেখানে কর্মসংস্থান হবে প্রায় শতাধিক মানুষের।
সামির হোসেন