‘উদ্যোক্তা সম্মাননা ২০২২’ পেল অর্গানিক খাদ্যপণ্যের উদ্যোক্তা শাম্মী

0

দীর্ঘ ৯ বছর উদ্যোগ পরিচালনা করেন উদ্যোক্তা মাসুমা খাতুন শাম্মী, তার উদ্যোগ মাদল অর্জন করলো উদ্যোক্তা সম্মাননা ২০২২।

পড়াশোনা শেষ করার পর বাসায় বসে একসঙ্গে দারুণ দারুণ কয়েকটি চাকরির অফার পান মাসুমা খাতুন শাম্মী। কিন্তু কোনোটাই বেছে নিতে পারেননি। কারণ, তখন শ্বশুর বাবা অসুস্থ। সন্তানদের পাশাপাশি তাঁকে দেখাশোনার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন।

২০১১ সালে শ্বশুর বাবা মারা যান। এর কিছুদিন পর থেকেই শাশুড়ি মায়ের অনুরোধ। ‘নিজে কিছু একটা করো।’ শাশুড়ি মায়ের অনুরোধ।

কিন্তু ব্যবসার ব্যাপারে ব্যক্তিগত কিংবা পারিবারিক দিক থেকে কোনো অভিজ্ঞতাই নেই।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যবসার জগতে পা রাখতে বাধ্য হন।

২০১৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর, শুরু হয় নতুন পথচলা, অন্যরকম যুদ্ধ। রাজধানীর পান্থপথে যাত্রা শুরু মাদলের। তখন তার সঙ্গে ছিলেন একজন কর্মী।

নয় বছর পর আজ মাদল অনেকের কাছেই খুব পরিচিত নাম। এই সময়ের মধ্যে তিনি মাদল নামে তিনটি প্রতিষ্ঠান গড়েছেন- মাদল, মাদল শস্যভান্ডার ও মাদল খাবারঘর। ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জে ‘কৃষি চন্দ্রিমা’ সমন্বিত কৃষি খামারের অন্যতম উদ্যোক্তা তিনি। যুক্ত আছেন ডেইরি ফার্মের সঙ্গে।

তাঁর প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখন দেড় শতাধিক কর্মী কাজ করছেন। নাটোরে তাঁর খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরির সাথে যুক্ত আছেন অনেকগুলো পরিবারের ৩৭ জন উদ্যোগে নারীকর্মী।

বিষমুক্ত আম উৎপাদনে তিনি রাজশাহী ও নাটোরের অনেক নারীকে উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছেন। তাঁর হাতে ভাজা মুড়ি, ঢেঁকিছাঁটা চিড়া, ডালের বড়ি এবং নবজাতকদের জন্য কাঁথা ও পোশাক তৈরির উদ্যোগে যুক্ত অনেকগুলো পরিবারের নারীরা। সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলে তাঁত এবং তাঁতিদের সঙ্গে যুক্ত তিনি।

একদিকে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার তৈরি করছেন, অন্যদিকে প্রাকৃতিক ও বিষমুক্ত পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি বিপণন করছেন। কাজ করছেন বাংলার ঐতিহ্যবাহী তাঁত নিয়ে। তাঁর উৎপাদিত পণ্য এখন দেশের পাশাপাশি দেশের বাইরেও যাচ্ছে।

নয় বছরের পথচলায় অনেক প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে। ছিল অনেক বাঁধা। কিন্তু থেমে থাকেননি। রাতদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, এখনো করছেন। তারই স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর নারী উদ্যোক্তা সম্মাননা ২০২২ অর্জন করেন মাসুমা খাতুন শাম্মী।

সেতু ইসরাত,
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here