তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ফ্ল্যাগশিপ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের উদ্যোগে কো-ব্র্যান্ড ভিসা কার্ডসহ স্টার্টআপদের জন্য বিশেষ ঋণ প্রোডাক্ট চালু করা হয়েছে। এতে সহযোগিতা করছে ইস্টার্ণ ব্যাংক (ইবিএল) এবং ভিসা।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সম্প্রতি রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত ইবিএল প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে কো-ব্র্যান্ড ভিসা কার্ডসহ স্টার্টআপদের জন্য বিশেষ ঋণ প্রোডাক্ট কর্মসূচি উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরষ্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরাণ।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে অভূতপূর্ব প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে এবং বাংলাদেশকে ডিজিটাল স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করার জন্য তাঁর দূরদর্শী চিন্তাধারা প্রশংসার দাবিদার। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের মতো বিশ্বের আর কোনো দেশ এত অল্প সময়ের মধ্যে ডিজিটালাইজড হয়নি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ স্টার্টআপ এবং নতুন উদ্ভাবনী ধারণার জন্য সমৃদ্ধ একটি ক্ষেত্র হয়ে উঠছে, যা স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে রূপান্তরিত করছে। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা অনুসারে, বাংলাদেশে বর্তমানে ১২০০টিরও বেশি সক্রিয় স্টার্টআপ রয়েছে এবং প্রতি বছর ২০০টি নতুন স্টার্টআপ ইন্ডাস্ট্রিতে যোগ দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এই ক্রমবর্ধমান সংখ্যক স্টার্টআপগুলো আমাদের তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের ইঞ্জিন হিসেবে কাজ করছে’।
মোস্তফা ওসমান তুরাণ বলেন, স্টার্টআপগুলো সমাজে চেঞ্জ-মেকার এবং প্রভাবকের ভুমিকা পালন করে। একটি কর্মচঞ্চল স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম তৈরির স্বার্থে সরকারি এবং বেসরকারি খাতের একযোগে কাজ করা প্রয়োজন। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রোগ্রামের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ পার্টনারশিপ গঠনের জন্য আইসিটি ডিভিশন এবং ইবিএলকে অভিনন্দন জানান।
ইবিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী আলী রেজা ইফতেখার বলেন, ‘ইবিএল ইনোভেশন এবং টেকনোলজিতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। তাই যারা বা যেসকল সংস্থা বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করছেন, তাদের সঙ্গে সহযোগিতাকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত ‘স্টার্টআপ বাংলাদেশ’ দেশের প্রথম এবং একমাত্র ভেঞ্চার ক্যাপিটাল তহবিল। দেশের ডিজিটাল অবকাঠামো তৈরিতে স্টার্টআপ বাংলাদেশ যে ভূমিকা পালন করছে তা অনুপ্রেরণাদায়ক। এই অবকাঠামোকে ভিত্তি করেই দেশে প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের বিকাশ ঘটবে। এই যাত্রায় সঙ্গী হতে পেরে ইবিএল গর্বিত।’
অন্যান্যের মধ্যে স্টার্টআপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
উল্লেখ্য, স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের স্টার্টআপদের জন্য যে ঋণ প্রোডাক্টটি উদ্বোধন করা হয়েছে তার নাম ‘স্টার্টআপ এক্সপ্লোরার’। বাংলাদেশের স্টার্টআপদের জন্য এই প্রোডাক্টটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখার পাশাপাশি বাংলাদেশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে আরো শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসির অংশ হিসেবে মাত্র ৪ শতাংশ সুদে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত এই ঋণ পেতে পারে স্টার্টআপরা। এটি স্টার্টআপগুলোকে তাদের কার্যক্রম বৃদ্ধিতে অনেকভাবে সহায়তা করবে।
অন্যদিকে ক্রেডিট, ডেবিট এবং প্রি-পেইড এই তিন ধরণের কার্ড ইস্যু করা হবে। কো-ব্র্যান্ড কার্ডগুলোতে বিশেষ কিছু সুবিধা অফার করা হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে প্রথম বছরে ‘জিরো’ ইস্যু ফি, আঠারোটি লেনদেনের ক্ষেত্রে ‘জিরো’ নবায়ন ফি, দুটি সাপ্লিমেন্টারী কার্ড ইত্যাদি। দেশে ও বিদেশে এই কার্ডগুলো ব্যবহার করা যাবে।
এছাড়াও ফ্রিল্যান্সার হিসেবে যারা কাজ করছেন তাদের জন্য ‘ইবিএল ফ্রিডম ফ্রিল্যান্সার ভিসা ডেবিট কার্ড’ অফার করছে ইস্টার্ণ ব্যাংক। এই কার্ড ব্যবহারের ফলে ফ্রিল্যান্সারদের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবস্থাপনা অনেক বেশি সহজ ও কার্যকর হবে।
অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী এবং তুরষ্কের রাষ্ট্রদূত নতুন কার্ড এবং ঋণ প্রোডাক্টের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। সেসময় উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ডেস্ক রিপোর্ট
উদ্যোক্তা বার্তা