উদ্যোক্তা - খুরশীদা জাহান

চাকরিজীবী পরিবারের মেয়ে ব্যবসা করবেন এটা পরিবারের অনেকেই মানতে পারত না। অনেক চড়াই উৎরাই পার করে নিজ উদ্যোগে ব্যবসা নিয়ে সামনে এগিয়ে গিয়েছেন খুরশীদা জাহান। প্রথমে অফলাইন শপ দিয়ে শুরু করলেও পরে তা অনলাইন ব্যবসায় গড়িয়েছে। তিনি যার নাম দেন ‘রেট্রো কালারস্’।

খুরশীদা জাহান পড়াশোনা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকর্ম বিভাগে। লেখাপড়া শেষে চাকরি না করে মনস্থির করেন ব্যবসা করবেন। তাই টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ী ও করোটিয়ার শাড়ী নিয়ে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করেছিলেন উদ্যোক্তা হওয়ার যাত্রা, পাশে ছিল ৬ জন করিগর। পরবর্তীতে রাজশাহী সিল্কে ডিজাইন ও বাটিক করেছেন, তাঁতের পোশাক নিয়েও কাজ করেছেন ।

‘রেট্রো কালারস্’ এ পাওয়া যায় টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ী, ডিজাইনারস শাড়ী ও ড্রেস, বাটিকের শাড়ী, ড্রেস, বেডশীট, তাঁতের থ্রি-পিস। যার সর্বনিম্ন মূল্য ৪৫০ টাকা এবং সর্বোচ্চ মূল্য ২০ হাজার টাকা।

তিনি উদ্যোক্তা বার্তাকে জানান, ‘শুরুতে অনেক ঠকেছি কারণ প্রথমে যেহেতু অফলাইন ব্যবসা ছিল তাই পাইকারি দিতে হতো, যার ফলে বাকি পরতো অনেক বেশী এবং কিছু পণ্য বাদ পড়ে যেত। ফলে আমার অনেক ক্ষতি হতো।’

তিনি আরো বলেন, সবচেয়ে বড় বাধা এসেছিল পার্টনারের বিরোধিতা করায়।

খুরশীদা জাহান অনলাইনে ব্যবসা শুরু করেন ২০১৭ সাল থেকে। অনলাইনেও অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। কপি পণ্যের ছড়াছড়ির কারণে তাঁর পণের দাম নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হতো। নতুন ব্যবসায়ীরা মূল্য বোঝে না ড্রেস পাইকারি দরে চায়, এটিও অন্যতম বড় বাধা।

উদ্যোক্তা বলেন, পরিবারে আমার বাবার ও স্বামীর পূর্ণ সহযোগিতা পেয়েছি বলেই আমার উদ্যোক্তা হওয়ার পথটা একটু সহজ হয়েছে। ব্যবসার প্রথম টাকা আমি বাবার কাছ থেকে নিয়েছিলাম। এখনো আমি ভেঙে পড়লে বাবা আমাকে সাহস দেন, এগিয়ে যেতে বলেন। আমার স্বামীও সাহায্য করেছেন অনেক।

খুরশীদা যেহেতু নিজে ডিজাইন করেন তাই তিনি আশা করেন ‘রেট্রো কালারস্’ একদিন দেশের বড় ব্র্যান্ড হবে! ক্রেতারা যেন সব সময় পণ্য নিয়ে সন্তুষ্ট থাকেন ও সৎভাবে যেন আরো উন্নতি করতে পারেন।

তিনি চাকরির চেষ্টা কখনো করেননি। স্বাধীনচেতা মনোভাবের কারণে ও নিজের কাজের পরিচয়ের জন্যই উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা।

খুরশীদার প্রতিটি ক্রেতা তার পণ্যের উপর সন্তুষ্ট এবং প্রতিদিন নতুন নতুন ক্রেতা যোগ হচ্ছেন। বর্তমানে তাঁর শপে আছেন ৩ জন এবং কারখানায় কাজ করেন ৬ জন।

নতুন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, পড়তে হবে, জানতে হবে,  প্রতিটি পণ্য সম্পর্কে জানতে হবে এবং বিশ্বাস রাখতে হবে। তাহলে সফলতা আসবেই ইনশাআল্লাহ।

 

খাদিজা ইসলাম স্বপ্না  

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here