৫০ জন এসএমই কর্মীর স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মাধ্যমে শুরু হল ঐক্য হেলথের ১ম ক্যাম্প

সাঈদ নগর নতুন বাজার ১০০ ফিটের রাস্তা ধরে গেলে ঠিক হাতের বাঁপাশে একটি বোতলের কারখানা চোখে পড়বে। এলাকাবাসীরা কারখানাটিকে বোতল ফ্যাক্টরি নামেই চেনে। প্রায় ৫০ জনেরমত কর্মী কর্মরত আছেন সেখানে। বোতল সংগ্রহ থেকে শুরু করে বাছাইকরণ এবং তা সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজ হয় এখানে। তার জন্য আলাদা আলাদা কর্মী নিয়োজিত রয়েছে কারখানাটিতে। কারখানার কর্মীরা কতটুকু স্বাস্থ্যসচেতন? তা জানতে সকাল ১১টায় “ঐক্য হেলথ” ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ৮জনের একটি টিম নিয়ে পৌঁছে যায় পরিবেশ বান্ধব এসএমই উদ্যোক্তা হাবিবুর রহমান জুয়েলের সেই কারখানায়।

কারখানায় ঢুকতেই চোখে পড়লো কয়েকজন নারী কর্মী বোতল বাছাই করছিলেন। আর একটু সামনে এগোতেই কয়েকজন পুরুষ কর্মীকে দেখা গেলো সেগুলো মেশিনের মাধ্যমে কুচি করে পরিষ্কার করতে। নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত থাকা কর্মীদের কারোরই ছিলোনা সঠিক নিরাপত্তা সামগ্রী (হ্যান্ড গ্লাভস, মাস্ক, রাবার বুট) ইত্যাদি। তাদের অনেকেরই অজানা, নিরাপদ পানি কি? কেটে-ছিঁড়ে গেলে কি করণীয়? পুষ্টিকর খাবার কি? স্যানিটেশন কি? তাদের এই ধারণাটা একেবারেই নতুন। তারা হয়তো কোনোদিন ভাবতেও পারেনি যে তাদের চিকিৎসা সেবা নিয়ে কেউ ভাবতে পারে। কর্মীদের সুস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যকর কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করতে কেউ এগিয়ে আসবে। বিনা মূল্যে কারখানায় এসে তাদের স্বাস্থ্য-সেবা দিয়ে যাবে।

ঐক্য হেলথ টিমকে দেখেই তাদের মনের মধ্যে অনেক প্রশ্ন জাগে। একজন মহিলা কর্মী নাম আর্জিনা আক্তার, বেশ কৌতূহল নিয়ে ফিক করে হেসে বললেন “আপানারা কি আমাগো চিকিৎসা দিবেন?” তাকে দেখে আরও প্রায় ১০জন কর্মী এগিয়ে এলেন। বলতে শুরু করলেন তাদের সুবিধা অসুবিধার নানান কথা। একে একে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েই কাজ শুরু করে ঐক্য হেলথ টিম। যেমন- রক্তচাপ পরিমাপ, ডায়াবেটিস পরীক্ষা, রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, এবং দক্ষ চিকিৎসক দ্বারা তাৎক্ষণিক সেবা প্রদান। লক্ষ্যণীয় বিষয়গুলোর মধ্যে কয়েকটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। তারা একটিমাত্র টয়লেট ব্যবহার করেন। একই গ্লাসে পানি পান করেন। কাজের সময় মাস্ক বা হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করছেন না। অধিকাংশ কর্মীদের শরীরে চর্ম-রোগের লক্ষন দেখা গেছে।

এই বিষয়গুলো নিয়ে ঐক্য হেলথ টিম উদ্যোক্তা হাবিবুর রহমান জুয়েলের সাথে আলোচনা করায় তিনি কর্মীদের সমস্ত অসুবিধার দ্রুত সমাধান দেবেন বলে জানিয়েছেন।

সেবা কর্মসূচি পরিচালনা শেষে উদ্যোক্তা ও কর্মীদের নিয়ে আলোচনায় কর্মীরা জানান উদ্যোক্তার জুয়েলের নিবিড় ভালোবাসার কথা। কর্মীদের প্রতি দায়িত্বশীলতার কথা। উদ্যোক্তা প্রতি সপ্তাহে তাদের একদিন করে ভালোমানের খাবার প্রদান করেন। দিনে চার প্যাকেট খাবার স্যালাইন এবং সেই সাথে ব্যক্তিগতভাবে প্রতিটি কর্মীর যত্ন নেন।

আমাদের দেশের সিংহভাগ কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়না। সেখানে আজ ঐক্য হেলথ সকল এসএমই উদ্যোক্তা ও কর্মীদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্য-সুরক্ষা ও সুস্থ্য কর্ম-পরিবেশ তৈরি করতে বাংলাদেশের সকল গ্রাম, উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় শহরসহ রাজধানীর সর্বত্র কাজ করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।

 

 

ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here