বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের কৃষি বিজ্ঞানীরা স্বল্প জমিতে অধিক উৎপাদনের মাধ্যমে ১৮ কোটি মানুষের খাবারের যোগানের ব্যবস্থা করেছে। কৃষি বিজ্ঞানীরাই কৃষি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির পরিচয় করিয়েছেন। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে কৃষি প্রযুক্তির আরও উন্নত করতে ভার্টিক্যাল কৃষি, নিয়ন্ত্রিত কৃষি এবং সার্কুলার কৃষির উপর জোর দিতে হবে। শুধু স্মার্ট কৃষি হলেই হবে না; বরং স্মার্ট কৃষক তৈরিতে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।’
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত বাংলাদেশ কৃষিতত্ত্ব সমিতির (বিএসএ) ২২তম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য। সম্মেলনটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘বাংলাদেশে রূপান্তরিত কৃষির জন্য কৃষিতত্ত্ব নিয়ে শিক্ষা এবং গবেষণা।’
নিরাপদ কৃষি উৎপাদনের প্রতি বিশেষ আহবান জানিয়ে বাকৃবি উপাচার্য বলেন, ‘শুধু কৃষি উৎপাদন বাড়ালেই হবে না, সেই সঙ্গে নিরাপদ কৃষি উৎপাদনের দিকে নজর দিতে হবে। নিরাপদ কৃষি উৎপাদনে কৃষিতত্ত্ববিদদেরই প্রধান ভূমিকা রাখতে হবে। কৃষককে পরিমিত কীটনাশক এবং সার ব্যবহারে বাধ্য করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে আরও কঠোর হতে হবে।’
বাংলাদেশ কৃষিতত্ত্ব সমিতির সভাপতি ড. নূর এ খন্দকারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান সরকার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গিয়াসউদ্দিন মিঞাঁ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) কার্যনিবাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অধ্যাপক ড. মো. সুলতান উদ্দিন ভূঁইঞা।
এছাড়াও সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার বাংলাদেশ অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ কারিগরি উপদেষ্টা সাসো মার্টিনোভ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফ্রিল্যান্স ইন্টারন্যাশনাল কনসালট্যান্ট (কৃষি সেক্টর) ড. মঈন উস সালাম।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহফুজা বেগমসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত প্রায় পাঁচ শতাধিক কৃষিতত্ত্ববিদ।
সম্মেলনের বিশেষ অতিথি ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান সরকার বলেন, ‘দেশের ৮০ শতাংশ মানুষের প্রাথমিক জীবিকার উৎস হচ্ছে কৃষি। দেশ আজ চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে চাল রপ্তানির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সম্মেলনে যে বিষয়টি নির্ধারণ করা হয়েছে তা দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা এবং কৃষকদের একটি উন্নত জীবন নিশ্চিত করার জন্য জরুরি। দেশের কৃষিবিদরা তাদের নতুন নতুন গবেষণার মাধ্যমে কৃষির উন্নতিতে আরও প্রভাব ফেলবে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গিয়াসউদ্দিন মিয়া বলেন, ‘কৃষিবিদরা দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে রূপান্তরিত কৃষির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। আমি বিএসএকে সাধুবাদ জানাই কৃষিবিদদের নিয়ে এমন উদ্যোগ গ্রহণের জন্য।’
সাসো মার্টিনোভ বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি দেশ। এ দেশের কৃষি খাত ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। জলবায়ুর সাথে খাপ খাইয়ে কৃষিকে আরো উন্নত করতে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণা করা দরকার।’
ডেস্ক রিপোর্ট
উদ্যোক্তা বার্তা