নারীর জন্য শান্তিবাড়ি আয়োজন করে ‘ভালো থাকার উৎসব।’ এই উদ্যোগ পুরোটাই নারীদের ঘিরে। দুই দিনের বর্ণিল আয়োজনে নারীর সৃষ্টিশীলতা, দক্ষতা এবং একই সাথে নারীর মানসিক স্বাস্থ্য ও আইনি অধিকার রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
বৃহস্পতি ও শুক্রবার ঢাকার জাতীয় চিত্রশালা গ্যালারিতে নারী চিত্রশিল্পী, আলোকচিত্রী ও উদ্যেক্তাদের নিয়ে ‘শান্তিবাড়ি’ আয়োজন করেছিল ‘ভালো থাকার উৎসব’। সেই উৎসবেই নিজেদের তৈরি বিভিন্ন পণ্য নিয়ে এসেছিলেন উদ্যোক্তারা।
শাড়ি, হ্যান্ডমেইড গয়নাসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে কাজ করা ‘রঙদারু’ শান্তিবাড়ির উৎসবে এসেছিল তাদের নিজেদের পণ্য নিয়ে।
উৎসবের শেষ দিন বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, বাহারি দেশীয় পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন নারী উদ্যেক্তারা। উৎসবে ২৫টি স্টলে ২৭ জন নারী উদ্যেক্তা অংশ নেন।
বেশিরভাগ উদ্যোক্তাই অংশ নিয়েছেন দেশীয় পণ্য নিয়ে। পাশাপাশি ৪১ জন শিল্পীর ৫৯টি চিত্রকর্ম এবং ১১ জন আলোকচিত্রীর ১১টি আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
শান্তিবাড়ির এমন আয়োজনে প্রথম অংশ নেয় দুই বন্ধুর প্রতিষ্ঠান ‘ক তে কাপড়’। ২০১৭ এর জুলাই থেকে স্নিগ্ধা রাণী সরকার ও সৈয়দা ইফাত আরা এটি শুরু করেন।
ইফাত আরা বলেন, “আমরা প্রথম শান্তিবাড়ির কোনো আয়োজনে অংশ নিয়েছি। তাদের ব্যবস্থাপনা নারীদের জন্য চমৎকার পরিবেশ করে দিয়েছে।”
তবে ঢাকায় শুক্রবার রাজনৈতিক সমাবেশের কারণে লোক সমাগম কম ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের ধারণা ছিল শুক্রবার বেশি লোক হবে। কিন্তু বৃহস্পতিবারের তুলনায় শুক্রবারই কমই লোক হয়েছে। এরপরও অনেক লোক এসেছেন।”
‘ক তে কাপড়’ এর স্টলে ছিল দেশি সুতি পাঞ্জাবিসহ নানা পণ্য। ইফাত আরা বলেন, “আমরা মূলত সুতি কাপড় নিয়েই কাজ করি। আমরা ফোকাস করতে চাই কাপড়। কাপড় নিয়ে নানা রকম নিরীক্ষাও করতে চাই।”
শান্তিবাড়ি মূলত নারীদের স্বাস্থ্যসেবা ও আইনি সুরক্ষা নিয়ে কাজ করে। ২০২২ সালের জুলাই মাস থেকেই যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। ঢাকার লালমাটিয়ায় রয়েছে তাদের কার্যালয় এবং নারী উদ্যেক্তাদের পণ্যের প্রদর্শন ও বিক্রয়কেন্দ্র।
শুক্রবার ‘ভালো থাকার উৎসবে’ এসেছিলেন আলোকচিত্রী মনিরা মোর্শেদ মুন্নী। তিনি বলেন, “শান্তিবাড়ি নারীদের নিয়ে অনেক ভালো কাজ করছে। তাদের সম্পর্কে আমি কিছুটা দেরিতে জেনেছি। কিন্তু পরে তাদের কাজ নিয়ে যত জেনেছি, ততই মুগ্ধ হয়েছি।”
অভিনয়শিল্পী আজমেরী হক বাঁধনও গিয়েছিলেন শান্তিবাড়ির এই আয়োজনে। মনোবিদ ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদের একটি বিশেষ সেশনও ছিল।
কথা হলে অভিনেত্রী বাঁধন বলেন, “এই উৎসবে এসে আমি ভীষণ মুগ্ধ হয়েছি। ঢাকায় রাজনৈতিক সমাবেশের কারণে রাস্তায় জ্যাম হতে পারে ভেবে আমি একটু আগে রওনা হয়েছিলাম। ফলে প্রোগ্রামের নির্ধারিত সময়ের বেশ আগেই আমি এসেছি। এসে ঘুরে ঘুরে দেখতে খুব ভালো লেগেছে। নারীদের কীনঅসাধারণ শক্তি! দারুণ সব পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন।”
উৎসবে নারী উদ্যেক্তাদের আরও যেসব প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে, তার মধ্যে ছিল: আর্টপলিস- সুমাইয়া সায়েদ, কালিন্দী- মুনিয়া জামান, এথনিক হেরিটেজ- মকছিতুন নাহার, টুকরি- জাকিয়া আক্তার, পোশাক বাই তানাস- তানজিনা নাহিদ, আইরিন আফরোজ ও নাসরিন শিকদার, বাঙুরি- ঈথা চাকমা, দয়ীতা- সাইদা সুলতানা মিলি, দ্য লাভ- তাবাসসুম জাহান, শোনো মেরিলিন- ফারজানা আহমেদ, লেআউট ইন্টেরিওর- নাজমুন নাহার, চিত্রাঙ্গদা- খাদিজাতুল কোবরা, ময়ূরপঙ্খি- মিডিয়া ওসমান, কারখানা- তিলোত্তমা মাহজাবিন, মিন্ডালাম- কানিজ ফাতেমা মীম, স্রামাস ক্রিয়েশন- উম্মে হাবিবা শ্রাবন্তী, লীলাবালী- ফারজানা লিজা, হাদিকা ঢাকা- সাবিনা মোস্তাফা, শামিমা আক্তার, অরুনিকা- অরুণিতা ঘোষাল, সিয়েরন্স্ট- মুস্তারী মেহজাবীন মিম, রুজ- নাসিমা আফতাব, সিন্ধু- নীগার জাহান খন্দকার সিন্ধু, ফ্যাশন টানেল- ফাবিহা ফারজিন আহমেদ, ডা. আমান্না হক অৰ্ঘ্য, মেহউইশ- ফারিয়া ইসলাম, পাসারা- নুসরাত জাহান ও ‘মাই লিটল বিজনেস’- নুশায়বা রহমান।
ডেস্ক রিপোর্ট,
উদ্যোক্তা বার্তা