চলতি বছর ২১ নভেম্বর পর্দা উঠবে দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ বিশ্বকাপ ফুটবলের। কাতারের আল খোর আল বাইত স্টেডিয়ামে কাতার-ইকুয়েডর উদ্বোধনী ম্যাচের মধ্য দিয়ে পর্দা উঠবে বিশ্বকাপ আসরের। বত্রিশ দলের অংশগ্রহণে আটটি ভেন্যূতে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের সব ম্যাচ। ফুটবলের এই মহাযজ্ঞ চলবে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল না থাকলেও দর্শক-ভক্তদের গায়ে জড়ানো টি-শার্টে লাল-সবুজের নাম থাকছে। চট্টগ্রামের সনেট টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড আন্তর্জাতিক ফুটবল সংস্থা বা ফিফার লাইসেন্সপ্রাপ্ত একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য তৈরি করছে এই টি-শার্ট। এবারের বিশ্বকাপ আসরে ছয় লাখ পিস টি-শার্ট সরবরাহ করছে বাংলাদেশ।
বিশ্বকাপ ফুটবলে পোশাকপণ্য ও সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য আয়োজক সংস্থা ফিফা বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলোকে লাইসেন্স দেয়। লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠানকে দেয় জার্সি, টি-শার্ট, জ্যাকেটসহ নানা সরঞ্জাম তৈরির কার্যাদেশ। কাতার বিশ্বকাপের পোশাকপণ্য সরবরাহে অনেকের মতো ফিফার লাইসেন্স পেয়েছে রাশিয়ার একটি বিখ্যাত ক্রীড়াসামগ্রী সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে গোসাইলডাঙ্গার সনেট টেক্সটাইল লিমিটেডকে ছয় লাখ টি-শার্ট বানানোর কার্যাদেশ দেয় গত বছর। সব প্রক্রিয়া শেষে ফিফার অনুমোদনের পর এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে টি-শার্ট উৎপাদন শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। ছয় লাখ টি-শার্টের রপ্তানিমূল্য ১৫ লাখ মার্কিন ডলার বা প্রায় ১৩ কোটি টাকা।
২০১৮ সালে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত ফিফা বিশ্বকাপের জন্য আড়াই লাখ জার্সি রপ্তানি করেছিলো নারায়ণগঞ্জভিত্তিক নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ফতুল্লা অ্যাপারেলস। এছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সমর্থকদের জন্য জার্সির রেপ্লিকা তৈরি করে প্রতিষ্ঠানটি। স্প্যানিশ পেশাদার বাস্কেটবল দলের অফিশিয়াল সরবরাহকারী হিসেবেও নিয়মিতভাবে অফিসিয়াল জার্সি পাঠায় ফতুল্লা অ্যাপারেলস।
নারায়ণগঞ্জের আরেক নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এমবি নিট ফ্যাশনস ২০১৮ সালে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত ফিফা বিশ্বকাপের সময় ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ ইউরোপের আটটি দেশের জন্য তিনি ১২ লাখ পিস জার্সি তৈরি করে। এর আগে ২০১৪ সালের বিশ্বকাপেও আট লাখ জার্সি রপ্তানি করে প্রতিষ্ঠানটি।
আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছ থেকে ভালো দাম পেতে সম্প্রতি ম্যানমেড ফাইবারের পোশাক তৈরির পরিমাণ বাড়িয়েছে দেশীয় গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা আশা করছে, ২০৩০ সালের মধ্যে পোশাক রপ্তানি থেকে বাংলাদেশের একশ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্য অর্জনে জার্সি স্পোর্টসওয়্যার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ৭ মাসে ২ হাজার ৯৫৪ কোটি ৮৯ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। মোট রপ্তানি আয়ের ৮১ শতাংশ এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে ২ হাজার ৩৯৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ের তুলনায় ৩০.৩ শতাংশ বেশি।
সেতু ইসরাত
উদ্যোক্তা বার্তা