বিশ্বে অন্যতম অর্থনৈতিক শিল্প হিসেবে পরিচিত পর্যটন, যা পৃথিবীর একক বৃহত্তম শিল্প হিসেবে স্বীকৃত। পৃথিবীর প্রায় সব দেশে পর্যটন এখন অন্যতম অর্থনৈতিক প্রধান অগ্রাধিকার খাত। বাংলাদেশেও পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা অপার।
অপূর্ব সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশ যার প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্র্যের কোনো অভাব নেই। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন, পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রামের অকৃত্রিম সৌন্দর্য, সিলেটের সবুজ অরণ্যসহ আরও অনেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশ। দেশীয় পর্যটকের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে প্রতি বছর।
বাংলাদেশে পর্যটন খাতে তাই আসছে নতুন নতুন সংস্থা। ট্যুরিস্টদের বিশ্বস্ততার সাথে সেবা দিয়ে যাচ্ছে তারা। এরকমই একটি প্রতিষ্ঠান Weekend Travelers BD. পর্যটন শিল্পের বিকাশের পাশাপাশি অনেকের কর্মসংস্থানও করছে তারা।
উদ্যোক্তা জোবায়ের আল-মামুন বলেন, “আমি ছোটবেলা থেকেই ভ্রমণপ্রিয় মানুষ। পড়াশোনাও করেছি ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজম্যান্ট নিয়ে। ভার্সিটি পড়াকালীন দেশের সব কমন জায়গাগুলো ভ্রমণ করি। তারপর পরিচিত অনেককে ভ্রমণে পরামর্শ বা সেবা দিতে গিয়ে এটা নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেই। গড়ে তুলি “Weekend Travelers BD”.
পুঁজি প্রথম অবস্থায় তেমন ছিল না। শুরু করতে তেমন মূলধনের প্রয়োজন না হলেও প্রতিষ্ঠান সাজাতে, প্রোফাইল রেডি করতে এবং একটা পরিবেশ তৈরি করতে মোটামুটি ভালোই টাকার প্রয়োজন পড়ে। তার ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ছিল না।
“প্রথমে আমি একা শুরু করলেও পরে ছয়জনের ম্যানেজমেন্ট টিম গঠন করি। ম্যানেজমেন্ট টিমসহ লোকাল প্রতিনিধি রয়েছে ২৭ জন, পাশাপাশি ৪৩ জেলায় জেলা এজেন্ট রয়েছে,” বলে জানালেন তিনি।
অন্যান্য সেক্টরের মতো আমাদের পর্যটন সেক্টরেও অনেক প্রতিযোগিতা রয়েছে। শুরুতে সবার সাথে তাল মিলিয়ে স্বল্পমূল্যে ট্যুর অ্যারেঞ্জ করতে না পারলেও এখন সবার সাথে পাল্লা দিয়ে কাজ করছেন তারা।
২০১৭ সাল থেকে হাঁটি-হাঁটি পা-পা করে এগিয়ে যাচ্ছে “Weekend Travelers BD. বাংলাদেশের সুন্দরবন, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, সাজেক, রাঙ্গামাটি, কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, সিলেট, টাঙ্গুয়ার হাওর, কুয়াকাটা ছাড়াও দেশের বাইরে ভারত এবং ভুটানে ট্যুর অ্যারেঞ্জ করছেন তারা। শুরুটা ট্যুর অ্যারেঞ্জ দিয়ে হলেও এখন তারা বেশ কয়েক ধরনের সেবা দিয়ে থাকেন। এর মধ্যে আছে:
★ প্যাকেজ ট্যুর ইনবাউন্ড এবং আউটবাউন্ড।
★এয়ার টিকেট।
★ভিসা প্রসেসিং (শুধুমাত্র ট্যুরিস্টদের জন্য)।
★হোটেল রিজার্ভেশন।
★ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট।
নতুন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে জোবায়ের আল-মামুন বলেন: সততা, ধৈর্য এবং সাহসের সাথে লেগে থাকতে হবে। পাশে সাপোর্ট না থাকলে ব্যাপারটা সত্যিই কঠিন এবং কষ্টসাধ্য। এক কথায় বিরতিহীন সংগ্রাম করে যেতে হবে। সফলতার দিকে পা রাখলে আর পেছনে তাকাতে হবে না।
ভবিষ্যতে তিনি নিজ বাড়ির বাগানে একটা ইকো রিসোর্ট, বিভিন্ন পর্যটন স্পটে বেশ কয়েকটি রিসোর্ট করতে চান। কিছুদিনের মধ্যে হাতে নিচ্ছেন একটা রিসোর্টের কাজ। একটা ডুপ্লেক্স হাউসবোট এবং নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাও করতে চান। চান সব জেলাতেই জেলাতেই এজেন্ট নিয়োগ দিতে।
উদ্যোক্তা জোবায়ের আল-মামুন বলেন, “পর্যটন খাতে যথেষ্ট সম্ভানা রয়েছে। বাংলাদেশে যে পরিমাণ রিসোর্স রয়েছে, সেগুলোর ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপ করতে পারলে এবং পর্যটন খাতে পরিকল্পিত বাজেট রাখলে এ খাতকে আরও অনেক দুর এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। নিরাপত্তা, পরিবেশ দুষণ, রাস্তাঘাট এবং সিন্ডিকেট ইত্যাদি নজরে আনলে পর্যটন খাত অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
হাবিবুর রহমান
উদ্যোক্তা বার্তা