কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগে (সিএমএসএমই) অর্থায়নের বিপরীতে পুনঃঅর্থায়ন স্কিমে ২৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রাথমিকভাবে স্কিমটির মেয়াদ হবে তিন বছর। সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তারা এই তহবিল থেকে ৭ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবেন।
১৯ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্ট থেকে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহ (সিএমএসএমই) গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। এ খাতটি শ্রমনিবিড় ও স্বল্প পুঁজি নির্ভর হওয়ায় এবং এর উৎপাদন সময়কাল স্বল্প হওয়ায় আমদানী বিকল্প সেবা/পণ্য উৎপাদনসহ জাতীয় আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ইতিবাচক অবদান রাখতে সক্ষম হচ্ছে।
অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশেও সিএমএসএমই খাতের বিকাশ ও উন্নয়নের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশকে কর্মসংস্থানমুখী ও শিল্পভিত্তিক অর্থনীতির দেশে পরিণত করার ক্ষেত্রে সিএমএসএমই খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশের সিএমএসএমই খাতে নিয়োজিত উদ্যোক্তাদের মাঝে সহজশর্তে অর্থ প্রাপ্তির সুযোগ তৈরি করা সম্ভব হলে তা জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনকে অধিকতর গতিশীল করবে। সে লক্ষ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মাধ্যমে সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদেরকে অপেক্ষাকৃত স্বল্প সুদে/মুনাফায় ও সহজ শর্তে ঋণ/বিনিয়োগ সুবিধা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করেছে।
উদ্যোগটি “সিএমএসএমই খাতে মেয়াদী ঋণের বিপরীতে পুনঃঅর্থায়ন স্কিম’’ নামে পরিচিত হবে, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল। তহবিলের পরিমাণ ২৫ হাজার কোটি টাকা, যা আবর্তনশীল হিসেবে পরিচালিত হবে। প্রয়োজনে তহবিলের পরিমাণ বাড়ানো হবে।
সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে, ক্লাস্টারভুক্ত সিএমএসএমই উদ্যোক্তাগণকে পুনঃঅর্থায়নের ক্ষেত্রে সর্বাধিক অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে। এছাড়া নারী উদ্যোক্তা, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন উদ্যোক্তা এবং যে কোন দুর্যোগে (যেমন: নদীভাঙ্গন, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা, মঙ্গা, অগ্নিকাণ্ড, ভূমিকম্প, ভবনধ্বস, কোভিড-১৯ এর ন্যায় অতিমারী ইত্যাদি) ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাগণ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ স্কিমের আওতায় পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবেন।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ স্কিমের আওতায় বিতরণ করা মোট ঋণের ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ কুটির, মাইক্রো ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মাঝে সামগ্রিকভাবে বিতরণ করতে হবে এবং সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ মাঝারি উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণ করা যাবে।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ স্কিমের আওতায় বিতরণ করা মোট ঋণের ন্যূনতম ৭০ শতাংশ উৎপাদন ও সেবা খাতে এবং সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ ব্যবসা খাতে প্রদান করতে পারবে। স্কিমের আওতায় গঠিত তহবিলের বিতরণযোগ্য স্থিতি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া সাপেক্ষে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের মাঝারি উদ্যোগের জন্য ঋণ বিতরণ করবে। খেলাপী ঋণগ্রহীতাগণ এ স্কিমের আওতায় পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা প্রাপ্য হবেন না। ঋণ গ্রহীতার ঋণের শ্রেণীকরণ বিষয়ে সিআইবি হতে নিশ্চিত হতে হবে।
ডেস্ক রিপোর্ট,
উদ্যোক্তা বার্তা