বাঙালি নারীর কাছে শাড়ি অথবা কামিজ হলো তার গর্ব, শ্রেষ্ঠ অঙ্গশোভা। রমণীর সৌন্দর্য্য বহুগুণ বড়িয়ে দেয় শাড়ি ও কামিজ যে ঐতিহ্যবাহী পোশাক শতাব্দী ধরে ফ্যাশনে রয়েছে। আর এই সব নিয়ে কাজ করছেন ‘ড্রেসমিট’ ফ্যাশন হাউজের স্বত্ত্বাধিকারী সাহারা সুলতানা।
ভাইবোনদের মধ্যে সাহারা সুলতানা চতুর্থ সন্তান। মা এবং ভাইয়ের সবরকম সহযোগিতা ও উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
কোন ইচ্ছা অথবা স্বপ্ন থেকে এই উদ্যোগ জানতে চাইলে সাহারা সুলতানা বলেন, ‘প্রত্যেকটি মানুষকে জীবনে অনেক সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। আমিও এমন কিছু সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি। আর তখন থেকেই মাথায় এসেছে, নিজেকে কিছু করতে হবে। আমাকে প্রমাণ করতে হবে যে আমিও পারি। একটা সময় জব করতাম, বাট পরিবার এবং পারিপার্শ্বিক কারণে জব ছেড়ে দিতে হয়। এরপর থেকে মনে হয়েছে আমাকে কিছু করতে হবে, সেই তাগিদ থেকেই শুরু।’
তিনি বলেন: আসলে প্রত্যেকটা মানুষেরই কিছু না কিছু স্বপ্ন থাকে। স্বপ্ন ছাড়া কোন মানুষ হয় না। তেমনি আমারও অনেক স্বপ্ন আছে। আমি ছোট বেলা থেকে এমন দেখেছি যে, মানুষের ইচ্ছাশক্তি অটুট থাকলে শত চড়াই উৎরাই পেরিয়েও সেই ইচ্ছা একদিন সত্যতে রূপান্তরিত হয়। বড় হবার স্বপ্ন কে না দেখে? একজন ভালো মানুষ হবার স্বপ্ন, একজন সফল মানুষ হবার স্বপ্ন। আমি চেয়েছিলাম সবাই মিলে এক হয়ে যেন কিছু করে দেখাতে পারি। অন্তত বৃদ্ধ বয়সে গেলে সবাই যেন মনে রাখে, পাশাপাশি আমার কাজকেও মনে রাখে। এই চিন্তা থেকেই উদ্যোক্তা জীবনযাত্রা।
সাহারা সুলতানা বলেন, ‘বর্তমান সময়ে মানুষ চাকরির পেছনে ছুটে। কারণ মাস শেষে কাজ কম-বেশি যাই থাকুক, একটা ফিক্সড অ্যামাউন্ট চাকরিজীবি পায়। কিন্তু যারা উদ্যোক্তা তাদের জীবনটা অনেকটা থ্রিলার মুভির মতো। এই পথটা বেছে নিতে বেশি সময় লাগেনি। একটা জায়গায় চাকরি করা চেয়ে নিজের প্রতিষ্ঠানকে আগলে রেখে একটু একটু করে নিজের কষ্ট ও পরিশ্রম দিয়ে দাঁড় করানোটাই নিজের কাছে সুন্দর লেগেছে।’
সাহারা সুলতানা একেবারে শূন্য থেকে শুরু করেছিলেন। কষ্ট করতে করতে বর্তমানে ‘ড্রেসমিট’ নামে ফ্যাশন হাউজ আছে, আছে ‘শাহী কালাই’ নামে একটি রেস্টুরেন্টও।
‘দেখা যায় মানুষ এখন উচ্চশিক্ষিত হয়েও বেকার বসে থাকেন। যখন ব্যবসা শুরু করেছি, তখন আমার কোন অফিস ছিল না। এখন একটি নিজের অফিস আছে এবং নিজের একটি চেয়ার আছে। অফিসে মোট ১৫ জনের কর্মসংস্থান করেছি, এছাড়াও নিজের অনেক কারিগর আছেন,’ তৃপ্তির সঙ্গে বলেন সাহারা সুলতানা।
নতুনদের উদ্দেশে তিনি বলেন: বিজনেস হচ্ছে সন্তানের মতো, তাকে আস্তে ধীরে যত্ন করে গড়ে তুলতে হয়, হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। লেগে থাকতে হবে আর কাজ করে যেতে হবে। বিশ্বাস রাখতে হবে- পারবো এবং জয় আনবো। তাহলেই সফল হওয়া সম্ভব। অনেক অনেক বাধাই আসবে। এমন এমন দিন আসবে যে মনে হবে আর পারছি না। কিন্তু নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। নিজের উপর পুরো বিশ্বাস রাখতে হবে।
মেহনাজ খান
উদ্যোক্তা বার্তা