কুমিল্লাতে জন্ম আর বেড়ে উঠা জাকির আহমেদ মজুমদারের। বিদেশ যাওয়ার মতো তখনও তার বয়স হয়নি, পাসপোর্টে দুই বছর বয়স বাড়িয়ে ড্রাইভিং ভিসায় দুবাই গিয়েছিলেন। সেখানে ড্রাইভিং-এ চাকরি হয়নি, চাকরি হয়েছিল একটা ফাষ্টফুডের দোকানে। দোকানটি খুব ভালো চলতো, খাবারগুলোও খুব সুস্বাদু। বিশেষ একটা উপকরণ দিয়ে আরবি শেফরা খাবার বানাতেন। তিনি শিখতে চাইলে তারা শেখাতে রাজি হচ্ছিলেন না। অনেক অনুরোধে বিশেষ রেসিপিগুলো তিনি শিখে নেন।
শেখার পর মনে হলো মেধা আর শ্রম দিয়ে প্রবাসে কেন পড়ে থাকবো? এই কাজটি আমি আমার দেশেই করবো এবং অন্যদেরও র্কমসংস্থানের চেষ্টা করবো। সেই থেকে শুরু জাকির আহমেদ মজুমদারের উদ্যোক্তা জীবন।
তিনি জানান, ২৪ মাস পর দেশে চলে আসেন। ‘পরিবার থেকে তেমন একটা সাহায্য পাইনি, তাই খুব অল্প পুঁজি নিয়ে ছোট্ট একটা দোকান দিয়ে ব্যবসা শুরু করলাম। সেই থেকে শুরু, আমার প্রতিষ্ঠানের নাম জে ফাষ্ট ফুড কনার্র। বর্তমানে রাপা প্লাজা, লালমাটিয়া, বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন জায়গায় সাতটি দোকান। আমার সব দোকানেই নারী কর্মী। আমার মনে হয় নারীরা বেশী পরিশ্রমী আর দায়িত্বশীল। আর আমাদের দেশের নারীরা তো নানাভাবে অবহেলিত ও নির্যাতিত। আমি চাই তারা নিজে কিছু করুক, স্বাবলম্বী হউক।’
এই উদ্যোক্তা আরও বলেন: আমার এখানে খাবারের মান খুব ভালো। চা কফি থেকে শুরু করে বাচ্চাদের স্কুল টিফিনসহ নানা ধরনের ফাষ্টফুড আইটেম পাওয়া যায়। আমি খুব ভোরে উঠে দোকানে এসে সব কিছু রেডি করে দেই, তারপর সেগুলো এখানকার নারীকর্মীরা বিক্রি করেন।
তার সঙ্গে কথা বলার পর জে ফাষ্ট ফুডে কর্মরত নারীকর্মীদের সাথে কথা বললে তাদের সকলেই জানালেন, ভবিষ্যতে তারাও নিজেরা এরকম উদ্যোক্তা হতে চান।
জাকির আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘আমি মনে করি এখনকার তরুণ প্রজন্ম সারাক্ষণ মোবাইলে অহেতুক সময় নষ্ট না করে পড়াশোনা শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে অল্প পুঁজি নিয়ে হলেও ব্যবসা শুরু করুক। এতে নিজেরও আয় রোজগারের পথ হবে, অন্যদিকে আরও কিছু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’
সফল উদ্যোক্তা জাকির স্বপ্ন দেখছেন, বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় নিজের প্রতিষ্ঠান ছড়িয়ে দেবেন। আর সেই সাথে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবেন হাজার নারীর।
আফসানা অভি
উদ্যোক্তা বার্তা