কুমিল্লার মেয়ে মাকসুদা আক্তার চার ভাইবোনের মধ্যে তৃতীয়। বাবা সরকারী চাকুরী করেন আর মা একজন গৃহিনী। অনার্স মাস্টার্স কমপ্লিট করেছেন মাকসুদা কুমিল্লা শহর থেকেই। বর্তমানে এমবিএ করছেন এবং ফ্যাশন ডিজাইনের উপর কোর্স করছেন। বাবা মায়ের ইচ্ছা ছিল মেয়ে সরকারি চাকুরিজীবি হবেন। কিন্তু মাকসুদা আক্তার এর সরকারি চাকরির প্রতি কোন আগ্রহ ছিলনা। তিনি চেয়েছিলেন একজন উদ্যোক্তা হবেন। আর তাই তিনি পড়াশোনা কমপ্লিট করে হয়েছেন সফল একজন উদ্যোক্তা।
মাকসুদা আক্তার’ র জন্ম এবং বেড়ে ওঠা কুমিল্লা শহরেই। অনার্স এবং মাস্টার্স কমপ্লিট করেছেন তিনি কুমিল্লা থেকে। বর্তমানে তিনি “ম শৈলী” প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা। কাজ করছেন কুর্তি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া এবং বিভিন্ন কাস্টমাইজড ড্রেস নিয়ে। উদ্যোক্তা জীবনের শুরু করেছিলেন আশি হাজার টাকা নিয়ে আর বর্তমানে প্রতি মাসে উপার্জন করছেন দের থেকে দুই লক্ষ টাকার মত। কুমিল্লা শহরে রয়েছে দুই দুইটি শোরুম। নিজস্ব কারখানায় ১২ জন কর্মীর সাহায্যে প্রোডাক্ট তৈরি করেন তিনি। কারখানায় বর্তমানে ১৫ টি মেশিন রানিং চলছে উদ্যোক্তার।
প্রডাক্টস ম্যাটেরিয়াল সংগ্রহ থেকে উৎপাদন পর্যন্ত সমস্ত কিছুর দেখাশোনা করেন মাকসুদা আক্তার নিজেই। নিজের পছন্দের ডিজাইন কিংবা কাস্টমার এর চাহিদা অনুযায়ী প্রোডাক্ট তৈরি হয় উদ্যোক্তার কারখানায়। উদ্যোক্তা জীবনের শুরুতে কোন ট্রেনিং না নিলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন ট্রেনিং এর মাধ্যমে নিজের দক্ষতা অর্জন করেছেন তিনি। নিজের আগ্রহ আর চেষ্টার মাধ্যমে তিনি মার্কেট রিসার্চ করেছেন নিজ উদ্যোগেই। মার্কেট চাহিদা এবং কাস্টমার এর চাহিদা তিনি বিশ্লেষণ করেছেন।
পরিবারের সবাই চাকুরীজীবি হলেও নিজের আগ্রহ এবং প্যাশন থেকেই তিনি হয়েছেন পুরোদস্তুর একজন উদ্যোক্তা। পরিবারের তিনিই প্রথম যিনি বিজনেস এর সাথে নিজেকে জড়িয়ে হয়েছেন একজন সফল উদ্যোক্তা। উদ্যোক্তা হবেন বলে কখনো পড়াশোনা থেকে পিছিয়ে থাকেননি মাকসুদা আক্তার। একজন উদ্যোক্তা হয়েও তিনি পড়াশোনার সাথে সম্পৃক্ত রেখেছেন নিজেকে। শুধু তাই নয় মাস্টার্স কমপ্লিট এর পরেই থেমে যাননি তিনি। বর্তমানে এমবিএ করছেন ঢাকা থেকে। পরিবার, ব্যবসা সবকিছুর সামলে এগিয়ে চলছেন তিনি স্বপ্নের পথে। কঠিন পরিশ্রমী আর আত্মবিশ্বাসী এই উদ্যোক্তা জীবনে কোন বাধা কে যেন ভয় পাননা। জীবনে আসা সমস্ত প্রতিবন্ধকতা বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে চলছেন স্বপ্নের পথে।
শোরুম ম্যানেজার প্রোডাকশন ম্যানেজার থাকা সত্ত্বেও সমস্ত কিছুতেই চোখ বুলান উদ্যোক্তা মাকসুদা আক্তার। শুধু তাই নয় প্রোডাক্ট ম্যাটেরিয়ালস কোয়ালিটি এবং ডিজাইন সবকিছুই করা উদ্যোক্তা মাকসুদা আক্তার’র। এছাড়াও বিভিন্ন কাস্টমারের দেওয়া অর্ডার কাস্টমাইজড ডিজাইন করে তৈরি করে দেন তার কারখানা থেকেই।
জীবনে আসা সমস্ত বাধা বিপত্তিকে জয় করেছেন তিনি অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে। মহামারী করনাএ সময় ব্যবসার অনেক ক্ষতি হলেও তিনি পুষিয়ে নিয়েছে নিজের আত্মবিশ্বাস আর কঠিন পরিশ্রমের দ্বারা। জীবনে আসা যেকোনো ভালো কিংবা খারাপ সময়ের জন্য প্রস্তুত তিনি।সবকিছু সহজভাবে মেনে নেওয়ায় যেন সফলতার মুকুট পড়িয়েছে আজ মাকসুদা আক্তার কে।ভবিষ্যতে উদ্যোক্তা স্বপ্ন দেখেন দেশের বাহিরে নিজের পণ্য রপ্তানি করার।
মার্জিয়া মৌ
উদ্যোক্তা বার্তা