অনিক কুন্ডু পড়াশুনা করেছেন ঢাবির চারুকলা অনুষদের অংকন ও চিত্রায়ন বিভাগ হতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। বলরাম পাল পড়াশুনা করেছেন শাবিপ্রবির কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ হতে স্নাতক ও জাবি তে একই বিভাগে স্নাতকোত্তর।
দুই বন্ধুর উদ্যোক্তা জীবন একদমই সহজ ছিলোনা। কিন্তু সহজ করার প্রত্যয়ে এগিয়ে চলছেন। মানুষ স্বপ্ন দেখে অনেক কিছুই। ভালো মানুষ হবার স্বপ্ন দেখেছেন তারা। ভাল কিছু করার সপ্ন দেখেছেন। স্বপ্ন দেখার চাইতে এই দুই উদ্যোক্তা স্বপ্ন বাস্তবায়নে বেশি বিশ্বাসী। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন।
ইকমার্স,ফ্যাশন ও ডিজাইন নিয়ে অনেক দূর যেতে চান তারা। সেই লক্ষে যাত্রা শুরু করেছেন মাত্র। তাদের মতে তারা সফলতাও পাচ্ছেন,বাধার সম্মুখিন হচ্ছেন প্রতিনিয়ত শিখছেন আর এগোচ্ছেন।
২০১৮ সালের শেষের দিকে তাদের এই উদ্যোগের সূচনা। উদ্যোগের পেছনের গল্প টা আপাতন গোপন। তারা এখনই উন্মোচন করতে চান না। কারণ সেটা সুখকর নয়। যেদিন একদম লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন সেদিনই নাকি সেই গল্পটা প্রকাশ করবেন।
তাদের উদ্যোগের পণ্যগুলো হচ্ছে কামিজ, পাঞ্জাবী, শাড়ি, ব্লাউজ, ব্যাগ, শাল, পাজামা, গজ কাপড়, থ্রিপিস, গহনা, ক্রাফট ইত্যাদি। সকল পণ্য তারা নিজেরাই উৎপাদন করেন ও বিক্রয় করে থাকেন।
উদ্যোক্তারা জানান তারা বাধার সম্মুখীন প্রতিনিয়তই হয়েছেন। প্রথমেই আসে পুঁজি। খুব বেশি পুঁজি নেই আর ওভাবে লোন নিয়ে ব্যবসা করার ইচ্ছাও ছিল না তাদের। তাই তারা আস্তে ধীরেই আগাচ্ছেন।
এছাড়া ডিজাইন চুরি, প্রতারণা, পন্য নষ্ট হয়ে যাওয়া- হারিয়ে যাওয়া, একজন কর্মীর মৃত্যু, প্রোডাকশন এমন কোন সেক্টর নেই যেখানে সমস্যা বা বাধার সম্মুখিন হোননি তারা। অনেক কষ্ট করে সেগুলো সমাধান করতে হয়েছে আবার অনেক কিছু সমাধান হয় না যা স্কিপ করে যেতে হয়েছে এভাবেই এগিয়ে যাচ্ছেন এই দুই উদ্যোক্তা।
মোট ৫ জন অফিস কর্মী আছেন। এছাড়া কারখানা সহ নানা জায়গায় প্রায় ২৫-৩০ জন মানুষের কাজের ফলাফল আজকের হরিতকি।
দেশের ভেতর সকল জেলা উপজেলা ইউনিয়ন এমন কি গ্রামেও হরিতকির পন্য যায়। দেশের বাইরেও যায় তবে প্রবাসীরা কেনে তাদের আত্মীয় বন্ধু বান্ধবের কাছে পৌছে দেন পরে তারা বিদেশে পৌঁছায়।
উদ্যোক্তারা আসলে দুইজনই প্রথমে মালিক ও পরে তারাই কর্মী ছিলেন এখনো কর্মী হিসেবেই কাজ করেন তারা।হরিতকি তে আসলে কর্মী মালিক সবাই সমান। ভাতৃত্ববোধের সাথে মিলেমিশে কাজ করেন। সবার ই কোন না কোন অবদান রয়েছে তাই কোনটা বেশি কোনটা ছোট এভাবে আসলে ভাবা হয়না। এমনকি হরিতিকীর সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক নেই এমন মানুষের অবদান ও রয়েছে। দশে মিলে করি কাজ লাভ- লস যাই হোক নেই কোন লাজ! এমন ব্যপারটা।
ভবিষ্যত পরিকল্পনায় তারা জানান হরিতকীর ব্র্যান্ডিং ভ্যালু কে অনেক শীর্ষে নিয়ে যাওয়া। দেশের বস্ত্রশিল্পে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা। সারাদেশে হরিতকীর শাখা প্রশাখা ছড়িয়ে দেওয়া। মূল কথা হরিতকী অনেক বড় হবে সেই সপ্ন দেখে চলার চেয়ে সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়া। হেরে যাওয়া নয়, বরং সফলতার স্বাদ গ্রহণ সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে।
মাসুমা শারমিন সুমি,উদ্যোক্তাবার্তা