দেখতে ফুলের মতো হলেও এটি কোন সাধারণ ফুল নয়। এটি পেঁয়াজের বীজের সাদা অংশ যা স্থানীয়দের কাছে কদম নামে পরিচিত। সাদা কদমের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে কালো সোনা। রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার হাড়িয়াপাড়া গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা সৌরভ সরকার, গত পাঁচ বছর ধরে পেঁয়াজের বীজ চাষ করে আসছেন। ইতোমধ্যে তার পেঁয়াজ বীজের সুনাম নিজ এলাকার বাইরেও ছাড়িয়ে গেছে। নাটোর, বগুড়া সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সৌরভ সরকারের পেঁয়াজ বীজ সংগ্রহ করতে আসেন অন্যান্য কৃষি উদ্যোক্তাগণ।
উদ্যোক্তা বার্তার সাথে আলাপকালে কৃষি উদ্যোক্তা সৌরভ সরকার বলেন, ‘এবার ১০ কাঠা জমিতে পেঁয়াজ বীজ চাষ করেছি। অগ্রহায়ণ মাসে জমিতে বীজ বপণ করেছিলাম। ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত ১১০ থেকে ১২০ দিন সময় লাগতে পারে।’ তিনি আরো বলেন, ‘কদম চাষ করে অন্যান্য ফসল-এর তুলনায় অধীক লাভবান হওয়া যায় তাই আমার মতো দুর্গাপুরের অনেক কৃষক ভাই কদম চাষ করে থাকেন।’ আগে অনেকেই শুধুমাত্র নিজেদের জন্য করতেন তবে বর্তমানে অনেকে বাণিজ্যিক ভাবে কদম চাষের দিকে ঝুঁকেছেন।
এবার ১০ কাঠা জমিতে পেঁয়াজ বীজ চাষ করতে চল্লিশ হাজার টাকা ব্যায় হয়েছে সৌরভ সরকারের। আবহাওয়া ঠিক থাকলে এবং পেঁয়াজ বীজের বাজারদর ঠিক থাকলে লাভের হিসাব দ্বিগুণ পেরিয়ে তিনগুণের আশা রয়েছে বলে জানান এই উদ্যোক্তা। পেঁয়াজ বীজ চাষে অধিক পরিচর্যার দরকার হয় আর তাই নিয়মিত জমি নিড়ানো, সার প্রয়োগ সহ বিভিন্ন কাজে গুনতে হয় অধিক শ্রমিক মজুরি। বীজ সংগ্রহের সময় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজ গাছের ঘাড় শুকিয়ে হলুদ রঙ হলে বা নরম হয়ে গেলে বুঝতে হবে যে উত্তোলনের সময় হয়েছে।’
সৌরভ সরকারের জন্ম থেকে বেড়ে উঠা সব কিছুই দুর্গাপুরের ঝালুকা ইউনিয়ন-এর হাড়িয়াপাড়া গ্রামে। পিতার ছয়-সাত বিঘা জমি থাকলেও সেগুলোতে অন্যান্য ফসল হয়। সেইসাথে তিনি আলাদা করে জমি লিজ নিয়েও ফসল ফলিয়ে থাকেন। সৌরভ সরকার দশ বছর ধরে কৃষি পেশায় নিয়োজিত। কখনো পেঁয়াজ কখনো আলু আবার কখনো বা লাউ- মিষ্টি কুমড়া। আর এগুলোর সাথে গত পাঁচ বছর ধরে যুক্ত হয়েছে পেঁয়াজের কদম(বীজ) চাষ। আগামী বছরগুলোতে অধিক পরিমাণ জমিতে পেঁয়াজ বীজ চাষ করতে চান এই উদ্যোক্তা।
তামান্না ইমাম,উদ্যোক্তাবার্তা
খুব সুন্দর নিউজ করেছেন।