স্বামীর দেওয়া ৮ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে যাত্রা শুরু উদ্যোক্তা দিবার

0

বিবিএ শেষ করে অস্থায়ী চাকরি নিয়েছিলেন সাবেকুন নাহার দিবা। যেহেতু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বিবিএ, এমবিএ করেছেন সেজন্য পড়াশোনার খরচ নিজে কিছুটা বহন করার জন্য পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করতেন। সিটি ব্যাংক-এর কাস্টমার সার্ভিসের গুলশান অফিসে ৩ বছর চাকরি করেছেন।

এমবিএ শেষ হলে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় দিবার। স্বামীর পোস্টিং ছিলো যশোর-এ। যার জন্য বিয়ের ৬ মাসের মাথায় চাকরি ছাড়তে হয়। চাকরি ছাড়ার পর অনেক বাধা আসে তার সামনে। তখন থেকেই উদ্যোক্তা হওয়ার ভাবনাটা মাথায় আসে।

দিবা উদ্যোক্তা হয়েছেন কিছুটা প্রয়োজনে আবার কিছুটা নিজেকে ব্যস্ত রাখতে। যেহেতু তিনি চাকরি করতেন সেহেতু ঘরে বসে থাকতে ভালো লাগতো না। আর ছোটবেলা থেকে তার নিজের একটা পরিচয় তৈরি করার অদম্য ইচ্ছা ছিল। উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে তার স্বামীর অনুপ্রেরণা ছিলো সবচেয়ে বেশি। মাত্র ৮০০০ টাকা পুঁজি নিয়ে প্রথম ব্যবসা শুরু করেন। যার পুরাটাই তার স্বামী দিয়েছিল।

দেশীয় সকল কাপড়, নকশীকাঁথা, বিছানার চাদর, ব্লক, বাটিক এবং সুন্দরবনের খলিশা ফুলের মধু নিয়ে কাজ করছেন দিবা। বাটিকটা তিনি নিজ হাতে করেন। কাঁচামালের প্রাপ্তি, ভালো সোর্সিং সবকিছু মিলিয়ে এই পন্যগুলো নিয়ে কাজ করা। তবে নকশিকাঁথা এবং ব্লক বাটিক তার সিগনেচার পণ্য। তার কর্মী আছে ১ জন। যে বাটিকের কাজে তাকে হেল্প করে। এখনো পর্যন্ত তার কোনো দোকান বা ফ্যাক্টরি নেই। পুরো ব্যবসাটা সম্পূর্ণ অনলাইন ভিত্তিক। অনলাইনে ‘গ্যালারিয়া দি দিবা’ নামে তার একটা গ্রুপ এবং একটা পেইজ আছে।

যশোর, খুলনা, ঢাকা, কক্সবাজার, বাগেরহাট, চুয়াডাঙ্গা, চৌগাছা, ঝিনাইদহ, বেনাপোল, সৈয়দপুর, বরিশাল, কুষ্টিয়া, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় তার পণ্য যায়। বিদেশে রপ্তানি বলতে তার স্বামীর বড় ভাই আমেরিকায় থাকেন। তারা যখন আসে তখন তার কাছ থেকে অনেক পণ্য নিয়ে যায়। এছাড়া অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইংল্যান্ড সহ অনেক জায়গা থেকে তার পন্যের অর্ডার করেছে বাংলাদেশে তাদের আত্মীয়দের কাছে দেওয়ার জন্য। বর্তমানে মাসে ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকার পন্য বিক্রি করছেন।

ভবিষ্যতে নিজের একটা শোরুম খোলার ইচ্ছা আছে তার। পাশাপাশি গ্রামের মহিলাদের নিয়ে কাজ করতে চান। নকশীকাঁথা বিক্রি করার মাধ্যমে তিনি গ্রামের নারীদের খুব কাছ থেকে দেখেছেন। তিনি চান তার নকশীকাঁথা বিদেশে রপ্তানি হোক যার মাধ্যমে গ্রামের মহিলাদের আরও বেশি আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হোক।

সাইদ হাফিজ, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here