২০২০ সালে উইতে যখন দেখলেন বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নারীরা নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে কাজ করছে, তখন ফাতেমা খাতুন ভাবলেন ‘আমিওতো ইচ্ছে করলে পারি কাজ করতে, উদ্যোক্তা হতে। মাথায় এলো বেকিং কেক ও চকলেট নিয়ে কাজ করার আইডিয়া। স্বামী, সন্তানদের সাথে পরামর্শ করলেন, তারাও সাপোর্ট দিলো।
যেই ভাবা সেই কাজ। শুরু করলেন সব আইটেমের হোমমেইড কাস্টমাইজ কেক, থীমকেক ও চকলেট তৈরির কাজ। প্রথম দিকে যদিও এটা শখের বসে করতেন পরে এটাকে পেশা হিসাবে নিলেন। তিনি চেষ্টা করেন কাস্টমারের চাহিদা মতো ডিজাইন ও ফ্লেভার দিতে। বেস্ট কোয়ালিটি সম্পন্ন ফ্রেশ কেক সরবরাহ করার জন্যই তার রিপিট কাস্টমারের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বেশ ভালো সাড়াও পাচ্ছেন। উদ্যোক্তা হওয়ার বছর খানেক আগে তিনি প্রফেশনাল বেকার্সদের কাছে কয়েকটি বেকিং কেকের কোর্স করেন। বর্তমানেও কিছু কোর্স করছেন।
মাত্র ৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে কাজ শুরু করেন উদ্যোক্তা ফাতেমা। তিনি মূলত সব ধরনের কাস্টমাইজ কেক, থিমকেক ও চকলেট নিয়ে কাজ করছেন। তার সিগনেচার আইটেম কাস্টমাইজ কেক, আর এই কেকই তাকে একটা পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং তৈরি করে দিচ্ছে। কেক নিয়ে সামনে বহুদূর এগিয়ে যেতে চান উদ্যোক্তা ফাতেমা। ভবিষ্যতে একটি কেকশপ দেওয়ার ইচ্ছে আছে তার।
কেক তৈরি তাছাড়াও তিনি একজন বেকিং ট্রেইনার, প্রতি সপ্তাহে বেশকিছু স্টুডেন্টকে নিয়ে অনলাইন ও অফলাইনে বেকিং কেকের ক্লাস করান। কেক তৈরির কাজে দুজন কর্মী তাকে সাহায্য করে।
অনলাইনে ‘ফাতেমা’স ফুড, কেক অ্যান্ড পেস্ট্রি হাউস। ঢাকার মিরপুর সহ সমগ্র ঢাকায় তিনি পণ্য ডেলিভারি দিয়ে থাকেন। মাসে ৫০/৬০টার মতো কেক তৈরি করেন। অকেশন অনুযায়ী বিক্রির তারতম্য হয়। মাসে কমবেশি প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো পণ্য বিক্রি করেন উদ্যোক্তা ফাতেমা খাতুন।
২০২০ সালে ওমেন এন্ড ই কমার্স (উই)-তে যুক্ত হন, সেখান থেকেই উদ্যোক্তা জীবনের শুরু।
নিজের কাজ সম্পর্কে উদ্যোক্তা ফাতেমা খাতুন উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, ‘করোনাকালীন সময়ে মানুষের জীবন যাপন যখন প্রায় অচল হবার অবস্থা, ঠিক তখনি আমার মাথায় আসল আমি যেহেতু বেকিং কেকের কাজটা ভালো যানি তাহলে তো আমি আমার পণ্য দিয়ে কিছুটা হলেও মানুষের প্রয়োজন মেটাতে পারবো। ফ্রেশ, নির্ভেজাল, কোয়ালিটি সম্পন্ন কেক যদি কাস্টমারের দরজা পৌঁছে দেই, কিছুটা হলেও মানুষের প্রয়োজন মিটবে। ডিজিটাল যুগে প্রায় বেশিরভাগ মানুষই কিছু করুক না করুক একটা কেক কেটে তাদের জন্মদিন সেলিব্রেট করে বিশেষ করে ছোট ছোট বাচ্চারা এটাতে বেশি খুশি হয়, আর বাচ্চাদের এই খুশিটুকু দেখতে আমার খুব ভাল লাগে। এই জন্যই কেক নিয়ে উদ্যোগতা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমার এই পণ্যেটা একটা সেলিব্রেটি আইটেম, কাস্টমাররা এই পণ্যেটা নিয়ে সেলিব্রেট করে আনন্দ পায়, তাই এই পণ্য নিয়ে কাজ করি এবং আমিও আনন্দ পাই। আমি আমার সৃজনশীল মেধা দিয়ে কেকের ওপর বিভিন্ন ডিজাইন করে থাকি। তাই এই কাজে আমি তৃপ্ত। কাস্টমারদের এইভাবেই সেবা দিয়ে যাবো’।
সাইদ হাফিজ ,
উদ্যোক্তা বার্তা
আমাদের বেকিং হাউজ এ একজন দক্ষ ট্রেইনার প্রয়োজন।