বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় বিভিন্ন সাংগঠনিক কার্মকান্ডে যুক্ত ছিলেন শেখ মোঃ ইউসুফ হোসেন। ২০১৫ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত “ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ সামিট”-এ বাংলাদেশের তরুণদের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণের পর তিনি সেখান হতেই বিশ্বব্যাপী উদ্যোক্তাদের সম্পর্কে জানতে পারেন। কিন্তু আমাদের দেশে সামাজিক উদ্যোক্তার সঠিক ধারণা তখনও সুপ্ত ছিল বলে তিনি মনে করেন। তাই দেশে ফিরেই সামাজিক উদ্যোক্তাদের জন্য একটি সাংগঠনিক প্লাটফর্ম ও ট্রেনিং সেন্টারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন তিনি। তখনই প্রথম প্লান করেন ‘ইউথ স্কুল ফর সোশ্যাল এন্ট্রাপ্রেনিউরস’ এর।
দেশের যুব সমাজের একটা বড় অংশ চাকরীর পেছনে ছুটছে বিধায় তারা আজও বেকার। তবে আত্মকর্মসংস্থান ও সামাজিক উদ্যোগের মাধ্যমে নিজের ও অন্যের কর্মসংস্থান তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু দেশের শিক্ষিত তরুণরাই এ সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখেন না বললেই চলে। তার উদ্যোগের সাথেই জুড়ে যায় একদল তরুণ, উদ্যমী ও জেদি পাগলের দল। আর পরিবার থেকে কিছুটা অর্থ নিয়ে গড়ে তুললেন তার উদ্যোগ আজকের ‘ওয়াইএসএসই’।
উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার কারণ জানতে চাইলে শেখ মোঃ ইউসুফ হোসেন বলেন, “পরিবারের মানুষও সহজে বুঝতে চায় নি, তাদের আগ্রহ ছিল আমার চাকরী করার প্রতি। কিন্তু তা না করে ‘ওয়াইএসএসই’ নিয়ে কাজ করা বড় একটি চ্যালেঞ্জ ছিলো। উদ্যোক্তা মূলত একটা স্বাধীন পেশা বলা যায়। একজন উদ্যোক্তা যখন নিজের কর্মসংস্থান করে, তার সাথে সাথে অনেক বেকারদেরও চাকরীর সুব্যবস্থা করতে পারেন”।
‘ওয়াইএসএসই’ বর্তমানে ২১টি দেশে কাজ করছে। নতুন উদ্যোক্তাদের পথ প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে এখন পর্যন্ত ১০০টিরও বেশি অনুষ্ঠান (ইম্প্যাক্ট টক, বাংলাদেশ ইউথ সিম্পোজিয়াম) করেছে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। তাতে প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী ও পেশাজীবি অংশগ্রহণ করেছেন। অনুষ্ঠানগুলোতে প্রায় ২০০ জন দেশী-বিদেশী অতিথি এসেছেন। যাদের মধ্যে বহুজাতিক কোম্পানির সিইও, বিশ্ব সংস্থার প্রতিনিধি, স্বনামধন্য এসেছেন দেশের তরুণ প্রজন্মকে উদ্ধুত করতে।
তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “হাল ছাড়া যাবে না, হতাশ হওয়া যাবে না। বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকগুলোর কাছে যেতে হবে। নিজের উদ্যোগের কথা মানুষের কাছে বলতে হবে, এক্ষেত্রে সঙ্কোচ বোধ করা যাবেনা যে মানুষ কী ভাববে, বলবে। কোম্পানির নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স, ট্যাক্স, ভ্যাট, TIN ইত্যাদি সবসময় হালনাগাদ রাখতে হবে”।
শেখ মোঃ ইউসুফ হোসেন তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানান, একজন ব্যক্তিকে পূর্ণাঙ্গভাবে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলবার জন্যে সকল রকম প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে ‘ইউথ স্কুল ফর সোশ্যাল এট্রাপ্রেনিউরস’ এর মাধ্যমে।
জেবুননেসা প্রীতি
এসএমই করেস্পন্ডেন্ট ,উদ্যোক্তা বার্তা