গায়ে হলুদ, বিয়ে, বৌভাত, জন্মদিন, সুন্নতে খাতনা সহ সকল প্রকার অনুষ্ঠানে ফ্রুট কার্ভিং ও ওয়েটার সরবরাহ করেন উদ্যোক্তা। কখনো মিষ্টি কুমড়া দিয়ে তৈরি করছেন ফুলদানি কখনো বা মুলা, গাজর কেটে পাখির রুপ দিচ্ছেন। চোখের সামনে কামরাঙা কেটে তৈরি করছেন ‘আকাশের তারা’। এ এক অন্যরকম উদ্যোগের গল্প। যে গল্পের প্রধান চরিত্র উদ্যোক্তা শামিউল আহমেদ শামীম।
এভাবেই বিয়ে বাড়ি, জন্মদিন সহ অন্যান্য প্রোগ্রামে ফল এবং সবজি কেটে বাহারি নকশায় রুপ দিয়ে বাহবা কুড়াচ্ছেন এই তরুণ। কিন্তু কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিয়ে এই অঙ্গনে প্রবেশ করেননি শামীম। একটি কমিউনিটি সেন্টারে ওয়েটারের কাজ করতেন তিনি। সেখানেই অন্য সহযোদ্ধাদের দেখে এই কাজগুলো আয়ত্ত্ব করেছিলেন তিনি।
নিজে ওয়াটার হওয়ার সুবাদে হোটেল এবং কমিউনিটি সেন্টারের ওয়েটারদের নিয়েও তার বেশ ভালো অভিজ্ঞতা তৈরি হয়। পরিশ্রমী এই তরুণ খুব সহজে সেখানকার সকল কাজ আয়ত্ত করে ফেললেন। এবং ৬ মাসের মাথায় সেখানে তার সহোযোদ্ধাদের লিডার নির্বাচিত হলেন। এভাবে ১ বছর কেটে যায় তখন তিনি সিদ্ধান্ত নেন আমি ওয়েটার সরবরাহ করবো। সেই চিন্তা ভাবনা থেকে সামাজিক পাতায় ২০১৩ তে ‘রাজশাহী ক্যাটারিং’ নামে পেজ চালু করেন। পরিশ্রমী এবং সৎ লোক বাছাই করে তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেন এই তরুণ। পরবর্তীতে রাজশাহীর শাহ মখদুম থানার কাছাকাছি তার রাজশাহী ক্যাটারিং এর অফিস নেন এই উদ্যোক্তা।
সেখান থেকেই নিয়মিত রাজশাহী শহরের অসংখ্য খাবার হোটেল এবং ২০টি কমিউনিটি সেন্টারে ওয়েটার সরবরাহ করেন তিনি। বর্তমানে তার ১৭০ জন সহযোদ্ধা বিভিন্ন হোটেল এবং কমিউনিটি সেন্টারে দক্ষতার সাথে কাজ করছেন।
প্রতিমাসে ফ্রুট এবং সবজি কার্ভিং এ ১৫ থেকে ২০ টা অর্ডার থাকে তার।কখনো নিজ প্রতিষ্ঠানে বা কখনো সরাসরি প্রোগ্রামে যেয়েই গায়ে হলুদের ডালা, বরের খঞ্চা সাজিয়ে দিয়ে আসেন এই তরুণ। তার এ কার্ভিং এর কাজে ১ জন সহযোদ্ধা তাকে সহোযোগিতা করে থাকেন।
বিভিন্ন প্যাকেজে ফ্রুট কার্ভিং করে থাকেন তিনি। কেউ চাইলে সবজি এবং ফল উদ্যোক্তাকে কিনে দিয়ে শুধু নকশা করিয়ে নিতে পারেন। আবার চাইলে উদ্যোক্তা নিজেই সবজি, ফল ক্রয় করে নকশা করে দেন এগুলোর উপর নির্ধারন করে মূল্য ঠিক করা হয় এই শিল্পের। এই প্যাকেজ গুলোর কোনটা সর্বনিম্ন শুরু পাঁচশত টাকা থেকে আবার কোনটা হাজার টাকা। এর ওপরে সর্বোচ্চ যার যার চাহিদা অনুযায়ী তৈরি করে নিতে পারেন ক্রেতারা।
রাজশাহী নগরীর অসংখ্য মানুষের চাওয়ায় ২০২২ এর মাঝামাঝি ফ্রুট কার্ভিং প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা চালু করবেন এই উদ্যোক্তা।
পরিশ্রমি এই তরুণের জন্ম থেকে বেড়ে উঠা রাজশাহীর নওদাপাড়া এলাকায়। বর্তমানে শাহমখদুম থানার কাছেই তার প্রতিষ্ঠান অবস্থিত। সেখান থেকেই তিনি ক্যাটরিং এবং ফুড কার্ভিং সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছেন।এছাড়াও সামাজিক পাতায় ‘ রাজশাহী ক্যাটারিং’ পেজে যোগাযোগ করেও তার সেবাগুলো গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।
তামান্না ইমাম,
উদ্যোক্তা বার্তা