জামদানি দেশীয় ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির এক অনবদ্য নিদর্শন। জামদানি শাড়ি বাঙালি নারীদের অতি পরিচিত। মসলিনের উপর নকশা করে জামদানি কাপড় তৈরি করা হয়। জামদানি একটা সময় শুধু শাড়ীতে সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে জামদানি দিয়ে পাঞ্জাবি, সালওয়ার কামিজ,ওড়না, কুর্তা,রুমালসহ আরো অনেক কিছু তৈরি হচ্ছে। জামদানি বরাবরই ছিল একটি আভিজাত্যের প্রতীক।
পড়াশুনা শেষ করে যে কারো ইচ্ছে থাকে একটা ভালো চাকরি করার৷ কিন্তু উদ্যোক্তা আমিনুল ইসলামের ইচ্ছেটা ছিল একটু ব্যতিক্রম। ইচ্ছে ছিল পড়াশোনা করে নিজে কিছু করবেন। সেই ভাবনা থেকেই দীর্ঘ ৬ বছর ধরে উদ্যোক্তা আমিনুল ইসলাম নিজস্ব তাঁত এবং তাঁতীদের দিয়ে সম্পূর্ণ নিজস্ব ডিজাইনে তৈরি করছেন অরিজিনাল ঢাকাই জামদানি শাড়ি,পাঞ্জাবি, থ্রী পিস, টু পিস, ওয়ান পিস এবং বেবিড্রেস সহ জামদানি আরো নানান ধরনের পোষাক।
নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জে প্রায় ৫০ জন তাঁতিদের নিয়ে নিরলস পরিশ্রমে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন উদ্যোক্তা আমিনুল ইসলাম। দেশের গন্ডি পেরিয়ে নিয়মিত ভারত, ইতালি, ইউকে, আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়াতে রপ্তানি করছেন ঢাকাই হ্যান্ডলুম জামদানি। শতভাগ কোয়ালিটি নিশ্চিত করতেই নিজ তত্ত্বাবধায়নে সুষ্ঠভাবে তাঁতিদের পরিচালনা করে আসছেন এবং নিয়মিত কারখানায় প্রোডাকশনের বিষয়টি নজরদারি করছেন।
শান্ত- মারিয়াম ইউনিভার্সিটি থেকে প্রোডাক্ট এন্ড ফ্যাশন মার্চেন্ডাইজিং এ এমবিএ করে ২০১৬ সালে উদ্যোক্তা আমিনুল ইসলাম টেডি টেক্স নামে অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা শুরু করেন। এছাড়াও ঢাকার কদমতলীতে টেডি টেক্স এর একটি অফিস চালু করেছেন।
দেশীয় পন্য নিয়ে কাজ করতে গিয়ে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয় উদ্যোক্তাকে।বাংলাদেশে জামদানির সম্ভাবনা নিয়ে তিনি বলেন,
“পণ্য রপ্তানি, কাঁচামালের সহজলভ্যতা এবং মূলধন, এসবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরো এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। জামদানি বাংলাদেশের একটা সাংস্কৃতিক পণ্য যেটা বিশ্বস্বীকৃত। বাংলাদেশে এর সম্ভাবনা ব্যাপক। কিন্তু বর্তমানে ভারতের এবং বাংলাদেশের কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে নকল জামদানি পণ্যে বাজার সয়লাব যার কারণে মানুষ আসল জামদানি পণ্য চিনতেই ভুল করছেন “
উদ্যোক্তা আমিনুল ইসলাম তার উদ্যোগের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে উদ্যোক্তাবার্তাকে জানান,”ঢাকাই হ্যান্ডলুম জামদানি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চাই”
সেতু ইসরাত, উদ্যোক্তা বার্তা।