শিক্ষক জহুরার টিউলিপে সফলতা

0
উদ্যোক্তা জহুরা খাতুন

রাজশাহীর বিখ্যাত শখের হাঁড়ি এবং পাহাড়, সংগ্রাম বিদ্রোহী, গুনটানা সহ বিভিন্ন থিমেটিক ডিজাইনে, কোলাজ, গ্লাস পেইন্টিং, অ্যাক্রিলিক ইত্যাদি চিত্রকর্মে বাজিমাত করছেন রাজশাহীর উদ্যোক্তা জহুরা খাতুন।

ঐতিহ্যবাহী এই ‘শখের হাঁড়ি’ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতেই জহুরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তার প্রতিষ্ঠান টিউলিপের সিগনেচার পণ্য ‘শখের হাঁড়ি’।

ইউনিভার্সিটি অব অলটারনেটিভ ডেভেলপমেন্টের (ইউডা) চারুকলার স্টুডেন্ট মোসা. জহুরা খাতুন। চারুকলাতে অধ্যায়নরত অবস্থা থেকেই আঁকাআঁকিই যেন তার নেশা ছিল। তবে পড়াশোনা শেষে সংসার, সন্তানদের দেখভাল এবং একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরির সুবাদে রংতুলির সাথে খুব একটা সময় কাটাতে পারতেন না জহুরা।

২০২০ সালে করোনা পরিস্থিতিতে যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায় তখন তিনি অবসর সময়টাতে চিন্তা করলেন আবারো রংতুলিতে ফিরবেন।

এভাবেই গতবছর ১০ হাজার পুঁজি নিয়ে উদ্যোক্তা জীবনে পদার্পণ থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পাতায় সৃষ্টি জহুরার প্রতিষ্ঠান ‘ টিউলিপ ‘ এর।

২০০ থেকে ১০ হাজার টাকা, যার যেমন চাহিদা। সকলের কথা চিন্তা করে ভিন্ন ভিন্ন মূল্যের পণ্যে টিউলিপ সাজিয়েছেন জহুরা।সাইজ,নকশা সবকিছুতেই ভিন্নতা আনতে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এই উদ্যোক্তা।

সেইসাথে সংসার,বাচ্চাদের দেখভাল এবং ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলে শিক্ষকতাও করছেন জহুরা খাতুন।

এই স্কুলের বড় বড় দেওয়ালগুলোও তার রংতুলিতে রাঙিয়েছেন তিনি।

নিজের প্রতিষ্ঠান টিউলিপের সিগনেচার পণ্য শখের হাঁড়ি সম্পর্কে জানতে চাইলে মোসা. জহুরা খাতুন উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন: এই হাঁড়ির বিশেষত্ব হলো বিভিন্ন রঙে রাঙিয়ে এই হাঁড়িতে মাছ, পাখি, পদ্মফুল, লতাপাতা ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ফুল তৈরি করা হয়।

তিনি বলেন, একসময় গ্রামীণ গৃহিণীদের ঘরের সাজসজ্জার প্রধান সম্বল ছিল এই শখের হাঁড়ি।ঘরের চালে পাটের তৈরি শিকায় ঝুলিয়ে রাখা হতো এই হাঁড়ি।তারমধ্য রাখা হতো বিভিন্ন ধরনের খাবার। এছাড়া বিয়ে ও অন্যান্য আচার- অনুষ্ঠানে মিষ্টি, পিঠাপুলি সহ শখের হাঁড়ি আত্নীয়-স্বজনের বাড়িতে উপহার হিসেবে পাঠানো হতো।উৎসব, পূজা-পার্বণ এবং গ্রামীণ মেলাগুলোতে শখের হাঁড়ি দেখা যেত।

কিন্তু বর্তমানে রাজশাহীর এই ঐতিহ্যবাহী পণ্য টি বিলুপ্তির পথে, তাই বিলুপ্তি রোধে আমি কাজ করছি শখের হাঁড়ি নিয়ে। বর্তমানে গ্রাহকের কাছ থেকে শখের হাঁড়ির বিষয়ে ভালো সাড়া মিলছে।

রাজশাহী নগরী এবং আশেপাশের এলাকায় টিউলিপের নান্দনিক ডিজাইনের শখের হাড়ি, বিভিন্ন ধরনের পেইন্টিং স্থান দখল করছে প্রতিনিয়ত।

বর্তমানে নিজে হাতে সব পণ্য তৈরি করলেও ভবিষ্যতে টিউলিপে অনেকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চান এই উদ্যোক্তা।

চারুকলার স্টুডেন্ট হলেও জহুরা খাতুন পরবর্তীতে ইএসডিপি থেকে হস্তশিল্পের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।শুধু শখের হাড়ি নয় সেই সাথে বিভিন্ন থিমেটিক ডিজাইনের পেইন্টিং, পাটের টেবিল ম্যাট,বাচ্চাদের জন্য কাগজের রঙবেরঙের ফুল,প্রজাপতিও তৈরি করেন এই উদ্যোক্তা।

তামান্না ইমাম
উদ্যোক্তা বার্তা, রাজশাহী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here