প্রাকৃতিক উৎস থেকে কলকল শব্দে বেয়ে পড়া পানি দেখতে অনেকেই ছুটে যান পাহাড়ে। এমন একটা ঝর্না যদি বাড়িতেই থাকে, তবে সেটা কেমন লাগবে? নিশ্চয়ই ভিন্ন অনুভূতি। পাহাড় কেটে প্রাকৃতিক ঝর্না তো আর তুলে আনা সম্ভব নয়। তবে চাইলে একই আদলে কৃত্রিম পানির ঝর্না ঘরে রাখতে পারেন। পানির অবিরাম কলকল শব্দে কেটে যাবে সারা দিন-সারা বেলা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পেজ এশিয়া ক্রাফট্ অ্যান্ড আর্টস্ (ASA craft and arts) নিয়ে এসেছে ঘরের সৌন্দর্য বাড়াতে নান্দনিক রেডিমেড ফোয়ারা। চাইলে অর্ডার করে বানিয়েও নিতে পারেন নিজের পছন্দমতো।

গল্পের শুরুতে উদ্যোক্তা মোহসেনা জামান জানালেন, ছোটবেলা থেকেই আমি হাতে তৈরি জিনিসের প্রতি খুব আকর্ষিত ছিলাম।যেসব জায়গায় হাতে তৈরি মাটির, কনক্রিটের যে কোনো পণ্য যারা বানিয়ে প্রদর্শন করতেন। আমি সবসময় পাশে দাঁড়িয়ে দেখতাম। সেখান থেকেই মূলত আমার হ্যান্ডি ক্রাফটের প্রতি শখের আগ্রহ তৈরি হয়।
প্রথম পণ্য নিয়ে উদ্যোক্তা মোহসেনা বলেন, যে পণ্য নিয়ে উদ্যোগটি শুরু হয়েছিলো সেটি হলো, আমার নিজের জন্যে একটা ওয়াটার ফাউন্টেন বানিয়েছিলাম। সেটা থেকেই শুরু। ফাউন্টেনগুলো যাকে ঝর্না বলে সবাই জানে। অর্থাৎ বাসায় শোপিসের মত করে সাজিয়ে রাখে। এর পরে উদ্যোগ নেওয়ার পূর্বে শখ করে নিজের জন্য একটি এবং মায়ের জন্য একটি পণ্য তৈরি করলাম ।তবে পণ্যটি এতোটাই সুন্দর হয়েছিলো যে ছবি দেখে ভীষণ মুগ্ধ হয় আশপাশের লোকজন এবং পরিবারের মানুষ। এরপর জিজ্ঞেস করলো তুমি কি এটা নিয়ে ব্যবসা করতে পারো না? ভাবতে থাকলাম। নিজের শখকে সংসারের কাজের পাশাপাশি ব্যবসার উদ্দেশ্যে বানানো যাক। সঙ্গে নিজেকে স্বাবলম্বী করাটাও খারাপ হবে না।

উদ্যোক্তা জানান, এরপর একটি সামাজিক মাধ্যমের পেজ দিয়ে শুরু করে দিলাম ব্যবসায়ীক যাত্রা। বিভিন্ন সেলার পেজের মাধ্যমে বিক্রি করার জন্য পণ্যগুলো পোস্ট করা শুরু করলাম। যেহেতু বিভিন্ন পোস্টের মাধ্যমে পণ্যগুলো প্রচার করছিলাম। খুব দ্রুতই ক্রেতারা পণ্যগুলো পছন্দ করে। ঘর সাজাতে কে না চায়? আশপাশের মানুষও কেনা শুরু করলো।

উদ্যোক্তা নিজের উদ্দেশ্য ও পণ্য সম্পর্কে জানালেন, শুধু নিজের ঘরেই নয়, মানুষের ঘর সাজিয়ে দিতে চান উদ্যোক্তা মোহসেনা জামান। যেখানে পাহাড়ের ফাঁক বেয়ে কলকল শব্দে বেরিয়ে আসা ঠাণ্ডা পানির উৎস ইচ্ছে ঝর্না। এছাড়া অন্যান্য পণ্য দিয়েও সাজাতে চাই অনেকের ঘর যেমন- টেবিল টপ ফাউন্টেন, মিনি ঝরনা, ক্লে দিয়ে তৈরি বিভিন্ন শোপিজ, স্টকিং ফ্লাওয়ার। হাতে তৈরি ফুলদানি। খাবারের জন্য মাটির তৈরি ডিনার সেট। এ সবকিছুই ক্রেতাদের রুচির ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা।

উদ্যোক্তা মোহসেনা জামান ব্যবসায়িক সমস্যা সম্পর্কে বলেন, চিরাচরিত পেশায় আর আগের মত সুবিধা নেই। তাই উদ্যোক্তা হওয়ার দিকে ঝুঁকছে মানুষ। উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য স্বপ্ন দেখেন। শুরুতে হয়তো কিছুটা নিরাশ হয়েছিলাম। ডেলিভারি করার সময় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো। কিন্তু ধীরে ধীরে সে সমস্যার সমাধানে এসে গেছে। যেহেতু পণ্য বড়-ছোট মিলিয়ে আছে।তাই ডেলিভারি দেওয়ার সময় অনেক অসুবিধা হয়ে যাচ্ছিলো। তবুও হাল ছাড়িনি, চালিয়ে যাচ্ছি নিজের যুদ্ধ, বলেন উদ্যোক্তা।

নতুন তরুণ-তরুণী ব্যবসায়ীদের নিয়ে তিনি বলেন, পুঁজি অনেক হতে হবে এমন কোনো ব্যাপার নেই। কিন্তু মেধা খাটিয়ে কাজ করলে স্বল্প পুঁজির মাধ্যমেও মানুষ ব্যবসা করতে পারে। নিজেকে স্বাবলম্বী করতে ধৈর্য ধরে ব্যবসা চালিয়ে যেতে হবে এতেই সফলতা আসবে বলে অভিমত উদ্যোক্তা মোহসিনা জামানের।
মেহনাজ খান
উদ্যোক্তা বার্তা ঢাকা।