৭ হাজার টাকা দিয়ে শুরু,এখন মাসেই বিক্রি ৫০ হাজার টাকার উপরে

0
উদ্যোক্তা তাসমেরী জাহান ইরানী

পড়াশোনার পাশাপাশি দীর্ঘ সময় শিক্ষকতা পেশায় ছিলেন। তাসমেরী জাহান ইরানী। প্রথম স্কুল ছিল পাইওনিয়ার একাডেমি দ্বিতীয় স্কুল ছিল নবারুণ পাবলিক স্কুল। ব্র্যান্ডিংটা ছেলেবেলা থেকেই মাথায় ছিলো। পত্রিকায় দেখে, দেশে, দেশের বাইরের কোম্পানি দেখে মন হতো তারও এমন কিছু হবে।

এরপর বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহণ করে উদ্যোক্তাদের দেখে নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জাগে একটু আধটু শুরুও করেন। কিন্তু স্কুল সামলে নিজের পড়াশোনা সামলে কঠিন হয়ে গিয়েছিল তাই কিছু সময় বন্ধ রাখেন। ২০২০-এর ফেব্রুয়ারিতে জব ছেড়ে দিয়ে বাসায় সময় কাটান। তার কিছুদিন পরই লকডাউন শুরু হয়। তার এক কলিগের অনুপ্রেরণায় আবার নতুন করে কাজ শুরু করেন। তার মাধ্যমেই উই-য়ের দেখা পান। উই থেকেই আবার নতুন পথচলা শুরু।

প্রথমদিকে তিনি মায়ের রান্নার জন্য রেখে দেয়া তুলশীমালা চাল নিয়ে ফটোগ্রাফি করেন। যেহেতু নিজেদের উৎপাদন সেহেতু সহজ ছিল তার জন্য। আর উই-তে জেলা ব্র্যান্ডিং নিয়েই পড়াশোনা করেছেন অনেক। তুলশীমালা শেরপুর জেলার জেলা ব্র্যান্ডিং পণ্য। সাড়া পেয়েছিলেন বেশ কিন্তু স্টক কম ছিল বলে আর সেল বাড়াতে পারেননি। ভাইয়ের দেয়া ৭ হাজার টাকায় হাতের কাজের পণ্য নিয়ে নতুন পণ্য এড করেন। নিজের আসলে কোন পুঁজি ছিল না তার।

বর্তমানে তিনি তুলশীমালা চাল, সিদল, হাতের কাজের পণ্য, নকশীকাথাঁ, সরিষার তেল, মধু, ব্লক, বাটিক, খেজুরের গুড় নিয়ে কাজ করছেন। মূলত তুলশীমালা চাল আর হাতের কাজের ড্রেস নিজে থেকে শুরু করেন। বাকি পণ্যগুলো ক্রেতাদের চাহিদার প্রেক্ষিতে সংযুক্ত করেন। তুলশীমালা চাল তার নিজস্ব উৎপাদন। আগেই ব্লক-বাটিক ট্রেনিং করে কাজগুলো শেখা ছিল। সিদল, তেল তার নিজস্ব উৎপাদন। মূলত তার সোর্সিংটা সহজ ছিল।

স্থায়ী, অস্থায়ী বেশ কয়েকজন কর্মী রয়েছে তার। ব্যক্তিমালিকানায় এখনও কারখানা করে উঠতে পারেননি, তবে ইচ্ছে আছে। ‘DESHI 64/দেশী ৬৪’ এটাই তার প্রতিষ্ঠানের নাম এবং অনলাইন পেইজের নাম। তার সকল পণ্য দেশিয় এবং অর্গানিক। ক্রেতারা দেশিয় পণ্য সহজেই যেন পেতে পারেন তাই এ ধরণের নামকরণ। ক্রেতাদের মাধ্যমে বেশ কয়েকবার তার পণ্য দেশের বাইরে গিয়েছে। একটা বড় অর্ডার পেন্ডামিকের জন্য ক্যানসেল হলেও আবার নতুন করে এর কার্যক্রম চলছে। দেশের মধ্যে বিভাগীয় সহ বেশ কয়েকটি জেলায় তার পণ্য যায়, তবে ঢাকায় বেশি যায়। বর্তমানে মাসে ৫০ হাজার টাকার উপরে পণ্য বিক্রি করছেন উদ্যোক্তা ইরানী।

নিজের উদ্যোগের বর্তমান সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে উদ্যোক্তা জানান, ‘আল্লাহর কাছে শুকরিয়া যে বর্তমানে যেখানে আছি এতটুকু কখনও কল্পনা করিনি। জেলা প্রশাসন থেকে জেলা ব্র্যান্ডিং-এর লোগো সহ প্যাকেজিং DESHI 64/দেশী ৬৪ একমাত্র এবং ১ম কাজ করার সুযোগ পেয়েছে। উই-এর সহ-প্রতিনিধি হিসেবে শেরপুর জেলার দায়িত্ব পালন করছি। পৌর নারী উদ্যোক্তা এবং উদ্যোক্তা কমিউনিটি সদস্য হতে পেরেছি। নিজের জেলার জেলা ব্র্যান্ডিংপণ্য সকলের কাছে পৌঁছে দেয়ার সুযোগ পেয়েছি। তবে মন বলে এখনও একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারিনি। আরও কাজ করতে হবে নিজের জন্য, মানুষের জন্য, নিজের প্রতিষ্ঠানের জন্য’।

উদ্যোক্তা তাসমেরী জাহান ইরানীর জন্ম শেরপুর সদরের বাজিতখিলায়। শৈশব কেটেছে নিজ গ্রামেই। বাবা-ব্যবসায়ী, মা-গৃহিণী। ৩ ভাই ১ বোন। তিনি সবার বড়। স্কুল,কলেজ জীবন পার করেছেন শেরপুর শহরেই। পরিশেষে অর্থনীতি বিষয়ে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ২০১৭ সালে মাস্টার্স শেষ করেছেন।

সাইদ হাফিজ,
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here