শীতের আমেজে রাজধানীর সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমিতে চলছে দক্ষিণ এশিয়ার চারুকলার সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী, এশিয়ান আর্ট বিয়েনালের ১৯তম আসর। ৮ ডিসেম্বর শুরু হওয়া মাসব্যাপী আয়োজনে প্রদর্শনীটি ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত চলার কথা থাকলেও ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। মেলা সকলের জন্য সকাল ১১টা থেকে রাত ৮.৩০ পর্যন্ত উন্মুক্ত।
শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত চারুকলা বিষয়ক সর্ববৃহৎ প্রদর্শনী ‘দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর চিত্রশিল্পীদের অংশগ্রহণে ১৯৮১ সালে যাত্রা শুরু করে। এ ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মিসর, তুরস্ক, পর্তুগাল, ভেনেজুয়েলাসহ ১১৪টি দেশের ৪৯৩ জন শিল্পীর অংশগ্রহণে চলছে প্রদর্শনী।
মেলার অংশ হিসেবে বিভিন্ন আয়োজনে সৃজনশীল উদ্যোক্তারাও অংশ নিয়েছেন।
মাস ব্যাপি মেলা সম্পর্কে রংপুরের শতরঞ্জি উদ্যোক্তা আরিফ জানান, ‘আমার কোন অনলাইন পেজ নেই। একটি ছোট শো-রুম আছে যা রংপুরে অবস্থিত। তাই পণ্যের প্রচার ও প্রসার করতে ঢাকা অথবা অন্যান্য বিভাগের মেলাগুলোতে অংশগ্রহণ করি। এ সূত্রে বিনা মূল্যে স্টল নিয়ে মেলায় অংশগ্রহণ করেছি। ভালোই সাড়া পেয়েছি মেলায়। আনন্দের সাথে বাড়ি ফিরে যাবো।’
সোনারগাঁও থেকে মেলায় অংশগ্রহণ করে হাত পাখা উদ্যোক্তা বাসন্তী জানান, ‘সোনারগাঁওয়ে আমাকে অনেকে চেনে। কিন্তু আমি সোনারগাঁও এর বাইরে আমার পণ্য ছড়িয়ে দিতে মেলায় অংশগ্রহণ করেছি।আমাদের সোনারগাঁওতে সংসারের হাল ধরার জন্য অনেক নারীদের কাজ করতে হয়, কিন্তু আমরা যেসব পণ্য নিয়ে কাজ করি সেগুলো বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। তাই মেলাগুলোতে পণ্য প্রদর্শনী করে আমরা বিলুপ্তপ্রায় পণ্য তুলে ধরতে চাচ্ছি, যাতে এ পণ্যগুলো হারিয়ে না যায়।’
রাঙ্গামাটি থেকে এসেছেন উদ্যোক্তা টিপু। তিনি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী উদ্যোক্তাদের প্রসঙ্গে বলেন, আমি এসেছি নিজের পণ্য ও বিভিন্ন ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর উদ্যোক্তাদের পণ্যসহ। আমাদের পণ্য গুলো সূক্ষ্মভাবে তৈরি করা হয়। কিন্তু সেভাবে আমরা সাড়া পাই না। তাই রাঙ্গামাটির বাইরে মেলাগুলোতে অংশগ্রহণ করে চেষ্টা করছি পণ্যগুলো তুলে ধরার। আমি শুধু নিজে না, পুরো ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীকে তুলে ধরে এগিয়ে যেতে চাই।’
চার দশক ধরে এই উৎসবের আয়োজন করে আসছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। করোনার কারণে ২০১৮ সালের পর পিছিয়ে এ বছর আবার আয়োজিত হলো।
মেলায় হাতের কাজের পণ্য, নানা ধরণের শাল, ডায়েরি, শীতের পোশাক, বিচিত্র গহনা, নকশি পাখা, নকশি কাঁথা ও চাদর, হাতের তৈরি ক্যানভাস, জামদানি শাড়িরআছে। এছাড়াও আছে বিভিন্ন ধরনের পিঠা ও সুস্বাদু খাবার। বিনোদনের জন্য রয়েছে বায়োস্কোপ।
মেহনাজ খান
উদ্যোক্তা বার্তা