কোনো উদ্যোগ শুরুর জন্য মূলধনই যে সব চেয়ে জরুরী নয় তা আর একবার প্রমাণ করলেন উদ্যোক্তা তানিয়া ইসলাম তৃণা। নিজের অধ্যাবসায়, গভীর মনোনিবেশ ও ধৈর্য নিয়ে এগিয়ে গেলে কোনো কিছুই সফলতার পথে বাধা হতে পারে না।
মাত্র ৩৫ টাকা দিয়ে অনলাইনে ফ্রোজেন খাবার বানিয়ে ছোট্ট একটা উদ্যোগ শুরু করেছিলেন। তারপর সেখান থেকে আস্তে আস্তে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করেন কাপড়ের ব্যবসা। বর্তমানে দেড় বছরে তার সেই ৭০ হাজার টাকার পুঁজি ২০ লাখ টাকা ব্যবসায়িক মূলধনে দাঁড়িয়েছে। তার নিজের কারখানা এবং শপ আছে। নিজের উদ্যোগের নাম দিয়েছেন ‘পাঁচমিশালি’। এই নামে তার একটি ফেসবুক পেইজও আছে।
দেশীয় পণ্য নিয়ে কাজ করছেন উদ্যোক্তা তৃণা। শুরুটা করেন অফলাইনে কিন্তু সেভাবে সফল হননি। অনলাইনে আসেন দেড় বছর আগে উই গ্রুপের মাধ্যমে। শুরুতে নিজের পরিচিতিতে বেশি ফোকাস করেন তৃণা। তারপর যতো দিন যেতে থাকে তিনিও পরিচিত হতে থাকেন। উই গ্রুপ হাত ধরেই নিজের কাজের ব্যাপক প্রসার এবং প্রচার বাড়াতে পেরেছেন তিনি।
টানা এক বছরের বেশি সময় উইতে নিজের কাজ এবং নিজের পরিচিতি এতো বেশি নজর কেড়েছেন যে, এখন শুধু মাত্র অনলাইন সেলের উপর ভিত্তি করে নিজের নতুন কারখানা এই নভেম্বরের এক তারিখে চালু করেছেন। তার কারখানা ঢাকার লালমাটিয়াতে। বর্তমানে তার অধীনে সাত জন কর্মী কাজ করেছেন।
উদ্যোক্তা তানিয়া ইসলাম তৃণা ঢাকার শনি আখড়ার একে হাই স্কুল থেকে এসএসসি এবং ঢাকার সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্স ফাইনাল ইয়ারে অধ্যয়নরত আছেন।
ব্লকের কারখানায় কাজ করছেন ব্লকের থ্রি পিস, বিছানার চাদর, পরদা, শাড়ি, শীতের শাল সহ নানা রকম কাস্টমাইজ পণ্য নিয়ে কাজ করছেন। তার পণ্যের প্রধান ডিজাইনার তিনি নিজেই। প্রতিদিন নতুন নতুন ডিজাইনে সমৃদ্ধ করছেন তার প্রোডাক্ট লাইন। দেশের বাহিরে ১৯টা দেশে তার পণ্য যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি পণ্য যাচ্ছে কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এছাড়া দেশের মধ্যে বিভিন্ন জেলায় তার পণ্য যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি পণ্য যায় চট্টগ্রামে।
তানিয়া ইসলাম তৃণা উদ্যোক্তা বার্তাকে জানালেন, ‘‘উদ্যোক্তা হবার চিন্তা করেছি মূলত নিজেকে কিছু করতে হবে, নিজের একটা পজিশন গড়তে হবে এই রকম ভাবনা থেকে। সামনের দিনগুলোতে আমার প্ল্যান, আমি আমার বুটিকসের কারখানাটাকে আরো অনেক বেশি বড় করবো এবং আমার অধীনে অনেক মানুষ কাজ করবে।’’
উদ্যোক্তার ভাষ্য, ‘কাজের সাথে লেগে থাকতে হবে হাল ছাড়া যাবে না। একবার পিছিয়ে গেলেই আমরা হতাশ হয়ে হাল ছেড়ে দেই। ভুল আমরা এইখানে করি বলেই আর এগিয়ে যেতে পারি না। তাই আমাদের হতাশ না হয়ে বার বার চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করে যেতে হবে।’’
সাইদ হাফিজ
উদ্যোক্তা বার্তা, খুলনা