ছোট থেকেই রান্না করা একটা শখের বিষয় ছিল শাহিনা আক্তার ইতির। খুব ভাল লাগতো রান্না করতে। ভাবলেন নিজের কিছু করতে হবে। নিজের একটা প্রতিষ্ঠান এবং অন্যদের কর্মসংস্থান হবে। যেহেতু বর্তমান সময়ে স্বাস্থ্যকর খাবারের অভাব, তাই স্বাস্থ্যসম্মত খাবার তৈরী করে তা বাজারজাত করতে পারলে সবাইকে খুশি করা যাবে। এমন ভাবনা থেকে উদ্যোক্তা হয়ে উঠলেন ইতি।
মাত্র ৭ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে খুব ভয়ে ভয়ে শুরু করেছিলেন অনলাইন ব্যবসা। নাম দিলেন ইয়াম্মী স্ন্যাকস। শুরুটা বেশ ভাল ছিল খুব প্রশংসা পেয়েছেন সবার কাছ থেকে আর তাই কাজ করতে আরো আগ্রহী হয়ে উঠেন ইতি।
ইউনিভার্সিটি অব ডেভলেপমেন্ট অল্টারনেটিভ (ইউডা) থেকে ফাইনান্স এ ২০১৭ সালে বিবিএ শেষ করেন ইতি। ৭ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করে সব বাধা অতিক্রম করে এখন মূলধন ২ লাখ টাকা।
ইয়াম্মী স্ন্যাকস এ পাওয়া যায় কেক, পিঠা, ডেজার্ড, ফ্রোজেন, চাইনিজ আইটেম থেকে শুরু করে একশ’র বেশি খাবার যার সর্বনিম্ন মূল্য ২০ টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার টাকা পর্যন্ত খাবার আছে।
ইতি উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, তেমন কোন বাধা পাইনি ব্যবসা করতে যেয়ে আসলে বেশি মূলধন আর ডেলিভারি সার্ভিস না থাকার কারণে তেমন সামনে যেতে পারছিলাম না তবে সেই সমস্যা টাও কাটিয়ে উঠেছি একটা ডেলিভারি সার্ভিস ও পেয়ে যাই আর খাবার বিক্রি করা শুরু করি।
তিনি আরো বলেন, খাবার বিক্রির টাকা দিয়েই আর একটা খাবারের এর কাজে লাগিয়ে ফেলতেন আর এভাবেই এক এক করে সমস্যা দূর হওয়া শুরু করল ইতির ব্যবসায়।
ইতি পরিবার থেকে সহযোগিতা পেয়েছেন বিশেষ করে মায়ের কাছ থেকে এবং দুই ভাই অনেক সহযোগিতা করেছেন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে ইতি বলেন, আমি নিজের একটি প্রতিষ্ঠান করতে চাই যেখানে আমি নারী পুরুষ সবাইকে রান্না শিখাতে পারবো ও পাশাপাশি রেস্তোরাঁও দেয়ার পরিকল্পনা করছি।
চাকরি না করে উদ্যোক্তা হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, চাকরি করেছিলেন দেড় বছর তবে চাকরি করতে গিয়ে বুঝেছেন তা, অন্যের অধীনে যে সময়টি দিবেন সেই সময়টি নিজে কিছু করলে আরও ভাল কিছু করা যাবে।
ক্রেতাদের কাছ থেকে খুব অল্প সময়ে ভালো সাড়া পেয়েছেন যার জন্য সামনে পথ চলতে আরো বেশী আগ্রহী হচ্ছেন । তবে অল্প সময়ে সাড়া পাওয়াও খুব সহজ ছিল না প্রচুর কাজ করতে হয়েছে রাত দিন। কখনো কখনো সারা রাত ফুড বানাতে হতো ইতিকে। বর্তমানে ইতির সঙ্গে তিন থেকে পাঁঁচ জন কাজ করে।
শিল্পকলা একাডেমির আন্তর্জাতিক পিঠা উৎসবে সার্টিফিকেট ও উইবিডির মেলায় উপস্থিত হয়ে সম্মাননাও পেয়েছেন উদ্যোক্তা ইতি।
রান্না শেখা কিভাবে হয়ে উঠল জানতে চাইলে ইতি বলেন, ছোট থেকে রান্নার প্রতি আগ্রহী বলে অনেক কিছুই পারতাম তা ছাড়া আম্মুর কাছ থেকে ও আমার এক আপু তার কাছ থেকে রান্নার অনেক কিছু শিখেছি। তবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কোনো কোর্স করা হয়নি।
খাদিজা ইসলাম স্বপ্না