সেরা ৪ জনসহ ১২ জন মেধাবী যুব প্রতিবন্ধী জাতীয় আইটি অ্যাওয়ার্ড’২৩ পেয়েছেন। সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে ৬ মে ৭ম বারের মতো যুব প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জাতীয় আইটি প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) আয়োজিত দিনব্যাপী প্রতিযোগিতাটি রাজধানী ঢাকার মিরপুরে বিইউবিটি ক্যাম্পাসে সেন্টার ফর সার্ভিসেস এন্ড ইনফরমেশন অন ডিজ্যাবিলিটি (সিএসআইডি) ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউবিটি) এর সহযোগিতায় আয়োজন করা হয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রত্যেক ক্যাটাগরি থেকে সেরা প্রথম তিনজনকে অর্থাৎ ৪ ক্যাটাগরিতে মোট ১২ জন প্রতিযোগীকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রত্যেক ক্যাটাগরি থেকে একজন করে অর্থাৎ ৪ ক্যাটাগরিতে ৪ জন মেধাবীর নাম আয়োজক কর্তৃপক্ষ বিজয়ী হিসেবে ঘোষনা করে।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ক্যটাগরিতে বরিশালের মো: রবিউল বিশ্বাস ১ম, রাজশাহীর মো: হাসিবুর রহমান ২য় এবং রংপুরের মো: আবুজর রহমান ৩য় হয়েছেন।
শারীরিক প্রতিবন্ধী ক্যটাগরিতে ঝিনাইদহের মো: শাকিল আহমেদ ১ম, বরিশালের মো: সাজ্জাদুল ইসলাম স্বাধীন ২য় এবং পটুয়াখালীর নিয়ামুর রশিদ শিহাব ৩য় হয়েছেন।
বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী ক্যটাগরিতে লালমনিরহাটের মো: রবিউল আউয়াল শুভ ১ম, ঢাকার সুমাইয়া আকতার মিতু ২য় এবং রংপুরের মো: তাহিমুর ইসলাম ৩য় স্থান অধিকার করেন।
এনডিডি ক্যাটাগরিতে ঢাকার মুহ্তাছিন চৌধুরী ১ম, ময়মনসিংহের নাঈম ইসলাম ২য় এবং বরগুনার মো: সাইফুর রহমান পিয়ান ৩য় স্থান অর্জন করেন।
আয়োজনের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিসিসি এর নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিইউবিটি বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান মোঃ সামশুল হুদা, এফসিএ এবং সিএসআইডি’র নির্বাহী পরিচালক খন্দকার জহুরুল আলম।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিইউবিটির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোঃ আলী নূর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিসি এর প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন বিষয়ক পরিচালক মোঃ গোলাম সারওয়ার।
বিসিসি এর নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার বলেন, এ ধরণের আয়োজন যুব প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উৎসাহ প্রদান করার পাশাপাশি আইসিটি ক্ষেত্রে শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগগুলোতে প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা যে সকল বাধা এবং চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হয় তা হ্রাস করতে ভুমিকা রাখবে। তিনি আরও বলেন, যুব প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পিছিয়ে পড়ার সুযোগ নেই। তাদের সাথে নিয়েই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
বিইউবিটি প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোঃ আলী নূর বলেন, প্রতিবন্ধী যুবকদের দেশের উন্নয়নে সক্রিয় অবদান রাখতে তাদের সক্ষম করে তোলার এক অন্যতম প্রয়াস হল জাতীয় আইটি প্রতিযোগিতা। বর্তমান সরকার প্রতিশ্রুত আগামী ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমাণে বাংলাদেশের উপযুক্ত মানব সম্পদ হিসেবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এ প্রতিযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্ব রাখছে।
সিএসআইডি’র নির্বাহী পরিচালক খন্দকার জহুরুল আলম সারাদেশ থেকে অংশ নেওয়া যুব মেধাবী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অনুপ্রাণিত করেন। তিনি বলেন, আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে যুব প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভুমিকা থাকবে। তাই সকলে মিলে একসাথে কাজ করবার আহ্বান জানান তিনি।
প্রাথমিকভাবে ১৪ থেকে ২২ বছর বয়স পর্যন্ত আগ্রহীগণ ডাক, ই-মেইল এবং অনলাইনের মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় তাদের নিবন্ধন সম্পন্ন করেন। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, শারীরিক প্রতিবন্ধী, বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী এবং নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার (এনডিডি) অর্থাৎ মোট ৪ ক্যাটাগরিতে সারাদেশ থেকে মোট ১১৭ জন প্রতিযোগী এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতায় মাইক্রোসফ্ট ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট ও ইন্টারনেট ব্যবহারের দক্ষতা যাচাই করা হয়।
প্রত্যেক বিজয়ী প্রতিযোগীকে পুরস্কার হিসেবে স্যামসাং ব্রান্ডের স্মার্ট ফোন এবং জেনওয়েব টু কোম্পানির উপহার সামগ্রীসহ ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়।
বিজয়ীরা বিসিসি কর্তৃক পরিচালিত উচ্চতর প্রশিক্ষণ কোর্সে বিনা ফি’তে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। বিজয়ী ১২ জনের মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই করে শ্রেষ্ঠ ৪ জন আগামী অক্টোবরে দুবাইয়ে অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন বলে জানান বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) ম্যানেজার (সিস্টেমস) এবং এই আয়োজনের সমন্বয়ক মো. গোলাম রব্বানী।
ডেস্ক রিপোর্ট
উদ্যোক্তা বার্তা