উদ্যোক্তা আফসানা সুমীর মূল আগ্রহ ছিল দেশীয় সিল্ক, মসলিন নিয়ে কাজ করার। তাইতো উদ্যোক্তার প্রতিষ্ঠানের নাম গুটিপোকা। সিল্ক, মসলিন সংগ্রহ করে উদ্যোক্তা তুলির আচরে একেঁ যান মনে যা চায়।
চাকরি না করে কেন উদ্যোক্তা হতে চাইলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে আফসানা সুমী বলেন: চাকরী করতাম, মাস শেষ বেতন পেতাম ঠিকই, কিন্তু আনন্দটা পেতাম না। কোনভাবেই চাকরিরর বাধাধরা জীবনটাতে নিজেকে বাধতে পারলাম না।
পোশাকে হ্যান্ডপেইন্ট করতাম আগেই। পুরোনো শখটা নিয়ে কাজ করতে ইচ্ছে হল। ফেসবুকে পেজ খুললাম, মুলধন বলতে কিছুই ছিল না। তবু হাত খরচ থেকে টুকটাক চেষ্টা। অনেকের ভাল লাগল, উৎসাহ পেলাম, নিজের মনেও আনন্দ, তৃপ্তি বোধ করতে লাগলাম। একদম নিজের একটা কাজ, নিজের শ্রম, নিজের চিন্তাকে কাজে লাগানো খুব ভাল লাগতে থাকলো। তখন সিদ্ধান্ত নিলাম, আর চাকরি না। এটাই করব।
কেমন সাড়া পাচ্ছেন? হ্যান্ড পেইন্টের জনপ্রিয়তা কেমন? জবাবে তিনি বলেন, ব্লক, স্ক্রিনপ্রিন্ট, ডিজিটাল প্রিন্টের যুগেও হ্যান্ডপেইন্ট বেশ জনপ্রিয়। তাছাড়া আমরা কাস্টমাইজেশনের সুযোগ দিই। একটা তৈরি পণ্য দোকানে সাজিয়ে বিক্রি করার চেয়ে মানুষ কি চায়, কেমন কল্পনা করে তা জেনে তার চাহিদামত আঁকিয়ে দিতে আমাদের বেশি ভালো লাগে। কাজটার সাথে মনের একটা বন্ধন থাকে। তাই নিজেদের কাজের ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি সাড়া পাই।
ছবি আঁকায় উদ্যোক্তার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। তিন বললেন, আমি স্বভাবশিল্পী বা পটুয়া। তবে আমি বিশ্বাস করি, একটা পটুয়া মন সব মানুষের মাঝেই থাকে। কেউ চর্চা করে, কেউ করে না। আমি আপনমনে চর্চা করে যাওয়া মানুষদের দলে।
গুটিপোকায় কি কি পাওয়া যায় ? জানতে চাইলে সুমী বলেন, হাতে আকাঁ শাড়ি, কামিজ, ব্লাউজ, ওড়না, ছেলেদের ফতুয়া, পাঞ্জাবি, বাচ্চাদের পোশাক সবই পাওয়া যায়। একই রকম ডিজাইনের পারিবারিক পোশাক আর যুগল পোশাক বেশ জনপ্রিয় আমাদের।
নারী উদ্যোক্তা হিসেবে কোনো সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন কি? উদ্যোক্তা বললেন, নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে নিজেকেই দাঁড়াতে হবে। যে চাকরি করে আনন্দ পায় চাকরি করবে, যে ব্যবসায়িক উদ্যোগে নিজেকে প্রকাশ করতে চায় সে তা করবে। নিজেকে আবিষ্কারই মূল কথা। এটা সবসময় মাথায় রাখি। তখন কোনো সমস্যাই সমস্যা মনে হয় না।
খাদিজা ইসলাম স্বপ্না