সাহসী নারীদের জীবন নিয়ে রচিত ‘অষ্টাদশী’ এবং ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’ নিয়ে রিডিং ক্যাফেতে সাহিত্য আড্ডার আয়োজন করে ব্র্যাক ব্যাংক

0

ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪: সম্প্রতি ব্র্যাক ব্যাংক চট্টগ্রাম রিডিং ক্যাফের সদস্যরা হরিশংকর জলদাসের গল্পগ্রন্থ ‘অষ্টাদশী’ এবং চুয়াডাঙ্গা রিডিং ক্যাফের সদস্যরা আবু ইসহাকের কালজয়ী উপন্যাস ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’ নিয়ে সাহিত্য আড্ডার আয়োজন করেছেন। উভয় সাহিত্যকর্মেই ফুটে উঠেছে এদেশের অদম্য নারী চরিত্র ও তাঁদের সংগ্রামী জীবন কাহিনী।

ব্র্যাক ব্যাংক চট্টগ্রাম রিডিং ক্যাফেতে পঠিত হরিশংকর জলদাসের অন্যতম এই সাহিত্যকর্মে লেখক জেলে এবং সমাজের তথাকথিত নিম্নবর্ণের মানুষদের কষ্টকর জীবনের প্রতিচ্ছবি চিত্রায়িত করেছেন।

৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ চট্টগ্রামে আয়োজিত এই সাহিত্য আড্ডায় লেখক নিজেই উপস্থিতি ছিলেন, যা আলোচনাকে করে তুলেছিল আরও প্রাণবন্ত। লেখকের সাথে পাঠচক্রের সদস্যরা গল্পের চরিত্রগুলোর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনার এক পর্যায়ে লেখক উপস্থিত পাঠকদের এই বই সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নেরও জবাব দেন।

হরিশংকর জলদাসের অষ্টাদশীতে উঠে এসেছে এদেশের নারীদের নিয়ে বহুকাল থেকে চলে আসা বিদ্রুপ, পক্ষপাতদুষ্টতা, একতরফা নিয়মকানুন এবং প্রিয়জন কর্তৃক বিশ্বাসঘাতকতার মতো চিরায়ত বিষয়গুলো। মনোমুগ্ধকর লেখনশৈলী দিয়ে লেখক ১৮টি ছোটগল্পের মাধ্যমে সমাজে নারীর ভালোবাসা, প্রতিবাদ, প্রতিশোধ এবং সহনশীলতার চিত্র তুলে ধরেছেন। প্রতিটি গল্প একজন অনন্য নারী চরিত্রকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে, যা আলোচকদের নারী জীবনের অনেক বিষয় আরও ভালোভাবে উপলব্ধি করতে সহায়তা করেছে।

অন্যদিকে সূর্য দীঘল বাড়ী নিয়ে আলোচনা করতে ব্র্যাক ব্যাংক চুয়াডাঙ্গা রিডিং ক্যাফের সদস্যরা ১৫ অক্টোবর ২০২৪ একত্রিত হয়েছিলেন। এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র জয়গুনের সাহসিকতায় পাঠকরা মুগ্ধ হয়েছিলেন। উপন্যাসে জয়গুন হলো এমন একটি চরিত্র, যিনি ছিলেন একজন তালাকপ্রাপ্ত সিঙ্গেল মা। বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজে সাধারণ জীবনযাপন করতে গিয়ে তিনি শিকার হয়েছিলেন নানান বাধা-বিপত্তি, সামাজিক ভ্রান্তবিশ্বাস, কুসংস্কার এবং ত্রুটিপূর্ণ বিচারব্যবস্থার।

সূর্য দীঘল বাড়ী হলো এমন একটি সাহিত্যকর্ম, যেখানে ভারত বিভাগের সময় ১৯৪৩ সালে ঘটে যাওয়া দুর্ভিক্ষের সময় গ্রামবাংলার একজন সাহসী নারীর জীবনে নেমে আসা বাধা-বিপত্তি মোকাবেলার অনন্য চিত্র ফুটে উঠেছে।

ব্র্যাক ব্যাংকের বইপড়ার সংস্কৃতি নিয়ে ব্যাংকটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন বলেন, “ব্র্যাক ব্যাংকে আমরা বিশ্বাস করি যে, দলগত বইপড়া আমাদের সহকর্মীদের মাঝে শেখা এবং বিশ্লেষণধর্মী চিন্তাভাবনার বিকাশ ঘটানোর পাশাপাশি তাঁদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কেরও উন্নয়ন ঘটায়। সাহিত্য ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনে উন্নতির দ্বার উন্মোচন করে দেয়। আমাদের প্রতিষ্ঠানের পড়ার সংস্কৃতি নিয়ে আমি সত্যিই অনেক আনন্দিত এবং আমি আশা করি, দেশব্যাপী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোতেও এই চর্চা পৌঁছে যাবে।”

উল্লেখ্য,ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ১৮৭টি শাখা, ৫৩টি উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৫৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,০৮০টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং ৮ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। আঠারো লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৩ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।

ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here