কাজী রিফাহ্ নূর পড়াশোনা করেছেন বিএসসি ইন কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং এ ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) থেকে। পেশায় বাংলাদেশ বেতারের চট্টগ্রাম কেন্দ্রের ইংরেজি সংবাদ পাঠিকা ।
শুরুটা ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। তখন রিফাহ্ ৩য় বর্ষের ছাত্রী। পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের একটা পরিচয় সৃষ্টি করার জন্য ভাবছিলেন কিন্তু ঐ সময় হাতে টাকা-পয়সা তেমন ছিলনা। ছোটবেলা থেকেই ডিজাইনিং এর প্রতি অনেক ঝোঁক ছিল রিফাহ্’র। গহনার প্রতি আলাদা একটা ভাল লাগা কাজ করত সব সময়। সেই ভাবনা থেকে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ট্রেনিং ছাড়াই, ইউটিউব থেকে গহনা বানানো শেখে, সেই সাথে ব্যবসার বাজার সম্পর্কেও ধারণা নেন । মাত্র ৮৫০ টাকার মূলধন নিয়ে যাত্রা শুরু করেন হঠাৎ করেই। ভাবলেন যা হবার হবে মাঠে নেমেই দেখি!
সেই ভাবনাতেই ফেইজবুক পেজ খুলেন ‘অ্যামেজবলস’ নাম দিয়ে। প্রথমে সুতার তৈরি বালার পোস্ট দেন আর পোস্ট দেয়ার দুই ঘন্টার মাথায় প্রথম অর্ডারটা পান উদ্যোক্তা রিফাহ্। আর তাতেই কাজ করার মনোবল বেড়ে যায়। সুতার গয়নার পাশাপাশি আস্তে আস্তে এন্টিক, কাঠ, আর্টিফিশিয়াল ফুল সহ নানান গয়না বানানো শুরু করেন বলে জানান উদ্যোক্তা বার্তাকে।
৩-৪ মাসের মধ্যেই বিপুল সাড়া পান এবং প্রচুর উৎসাহ পাচ্ছিলেন পরিবার এবং বন্ধুদের কাছ থেকে। তবে, অনেক কটুক্তির সম্মুখীনও হতে হয়েছে, তাতে ভেঙ্গে পড়েননি রিফাহ্।
তিনি উদ্যোক্তা বার্তাকে আরও বলেন, সব সময় চেষ্টা করি ডিজাইনে বৈচিত্র্য রাখার, যেন বাকি আর দশ জনের চেয়ে ইউনিক হয়। বালা, দুল, মালা, পায়েল, ব্রেস্লেট, টায়রা, হিজাব পিন, আংটিসহ মেয়েদের সকল গহনা পাওয়া যায় অ্যামেজবলস-এ। যার সর্বনিম্ন মূল্য ৮০ টাকা এবং সর্বোচ্চ মূল্য ডিজাইনের ওপর নির্ভর করে।
চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ডেলিভারি যায় তার পণ্য নিজের পছন্দমত কাস্টমাইজ করার সুবিধা থাকায় ক্রেতারা আরও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন গয়না কিনে। ক্রেতাদের কাছ থেকে ভাল সাড়া পাচ্ছেন বলেও জানান। চট্টগ্রামে এর মধ্যে তিনটি মেলায় অংশ নিয়ে ভালো সাড়া পেয়েছেন উদ্যোক্তা রিফাহ্।
রিফাহ্ ‘অ্যামেজবলস’ নিয়ে স্বপ্ন দেখেন, অ্যামেজবলস এর অনেক বিশাল একটা আউটলেট হবে যেখানে থাকবে দেশীয় সব গহনার ভিন্নতা। যাতে বিদেশী পণ্য না, দেশীয় পণ্য নিয়ে বাঙালী নারীরা গর্ব করবে।’
তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে বলেন, নতুন কিছু করতে গেলে বাধা আসবেই। চেষ্টা এবং আত্মবিশ্বাস রেখে সব বাধা অতিক্রম করতে হবে। নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রেখে কাজ করতে হবে।”
মেয়ে বলে ব্যবসা করতে পারবে না বলে অনেকে অনেক কথা বলতো। তাদের কথার জবাব রিফাহ্ কাজের মাধ্যমে দিয়েছে। ধৈর্যের সাথে কাজ করে হয়েছেন সফল নারী উদ্যোক্তা।
খাদিজা খাতুন স্বপ্না