গামছা মোটিভে শাড়ি, হলুদের গহনা, মেটাল এবং মুক্তার গহনা, বিভিন্ন থিমেটিক ডিজাইনে কাঠের গহনা সহ আরো অসংখ্য পণ্যের উদ্যোক্তা তাসনিয়া আদনিন সাজিয়েছেন তার উদ্যোগ “ফ্লেইরি ফ্যাশন এন্ড এক্সোসরিজ”।
শ্বাশুড়ি মা খুব ভালো ফ্রুট এবং ভেজিটেবল কার্ভিং করতেন। পুত্রবধূ তাসনিয়া আদনিনের বিয়ের ডালা কুলাও সাজিয়েছিলেন নিজ হাতে। উদ্যোক্তা তাসনিয়া আদনিন বিয়ের পর থেকে লক্ষ্য করতেন শাশুড়ি মা এই সমস্ত কাজ গুলোতে ভীষণ পারদর্শী। আর ২০১৮ সালে বিয়ের পর বিভিন্ন প্রোগ্রামে এ কাজ গুলো দেখে উদ্যোক্তা নিজেও কাজগুলো আয়ত্ব করে ফেললেন। তখন থেকেই উদ্যোক্তা তাসনিয়া আদনিন কে শ্বাশুড়ি মা বলতে থাকলেন তুমি বসে না থেকে কিছু একটা কাজ শুরু করো, তুমি পারবে। বেশকিছুদিন এভাবে বলার পর তাসনিয়া আদনিন কাজ শুরুর সিদ্ধান্ত নিলেন।
পাঁচ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে প্রথমে বুটিকের কাজ শুরু করলেন তবে শুরুটা হলো ব্যর্থতা দিয়ে। তবুও সাহস হারালেন না। পরবর্তীতে ভাবলেন শ্বাশুড়ির থেকে শেখা বিভিন্ন নকশা কাজে লাগালেন। যেই ভাবনা সেই কাজ। শুরু করলেন কাঠ, মুক্তা, মেটাল দিয়ে গহনা তৈরি।
বৈবাহিক সূত্রে বর্তমানে তাসনিয়া আদনিন চট্টগ্রামে বসবাস করছেন। মুক্তার গহনা তৈরীর জন্য সেখান থেকেই মুক্তা সংগ্রহ করে মালা, কানের দুল তৈরি করে থাকেন। সম্প্রতি উদ্যোক্তা তাসনিয়া আদনিন তার প্রতিষ্ঠান ফ্লেইরি ফ্যাশন এন্ড এক্সোসরিজে যুক্ত করেছেন ছোট বাচ্চাদের শাড়ি। তার নিজস্ব ডিজাইনে তাঁতিদের মাধ্যমে ছোট্ট বাচ্চাদের জন্য টাঙ্গাইল থেকে শাড়ি তৈরি করে নেন এই উদ্যোক্তা।
সংস্কৃতিমনা ক্রেতাদের থেকে গামছা মোটিভের শাড়ি তৈরি করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়াচ্ছেন এই উদ্যোক্তা। এছাড়াও তার রং-তুলির আচড়ে কাঠ, মেটালের গহনাগুলো সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিচ্ছেন বহুগুণে।
ফ্লেইরি ফ্যাশন এন্ড এক্সোসরিজের কোন পন্যের চাহিদা বেশি, এমন প্রশ্নের উত্তরে উদ্যোক্তা বার্তাকে তিনি বলেন, “গায়ে হলুদের ফ্লোরাল জুয়েলারিগুলো তৈরি করি সেগুলোর চাহিদা বেশি থাকে। ইতোমধ্যে আমার তৈরি হলুদের গহনা দেশের বিভিন্ন যায়গায় যাওয়ার পাশাপাশি বিদেশেও গেছে। আলহামদুলিল্লাহ অল্প সময়ে সকলের থেকে ভালো রেসপন্স পাচ্ছি। হলুদের গহনার পাশাপাশি কাঠবেলী বা অন্যান্য ফ্লোরাল থিমে যে হেয়ার ক্লিপ, হিজাব পিন তৈরি করি সেগুলোর অর্ডারো প্রায় নিয়মিত থাকে। আর গহনা সেক্টরে আমাকে সহযোগিতা করে আমার ছোট বোন তাসনিয়া তাবাসসুম।”
উদ্যোক্তা তাসনিয়া আদনিনের জন্ম থেকে বেড়ে উঠা সব কিছুই রাজশাহী নগরীতে। ছাত্রজীবন থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি নাচ, গান, খেলাধুলাতেও ভীষণ পারদর্শী ছিলেন এই উদ্যোক্তা। বাবা এবং কলেজ শিক্ষিকা মায়ের কাছে হয়েছিল সঙ্গীতের হাতেখড়ি। মার্কেটিং এর স্টুডেন্ট তাসনিয়া আদনিন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরিও করেছেব বেশ কয়েকবছর।
অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইনেও তার প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত রুপ দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে সামনে এগোচ্ছেন উদ্যোক্তা তাসনিয়া আদনিন।
তামান্না ইমাম,
উদ্যোক্তা বার্তা।