লেটেস্ট ট্রেন্ড-হাফ সিল্ক শাড়িতে এমব্রয়ডারড লেস বর্ডার সাথে প্রজাপতি স্টাইলে কটন ব্লাউজে লেসের কাজ!
ছোটখাটো অনুষঙ্গ যোগ করে শাড়ির নকশায় ভিন্নতার পাশাপাশি বুননে বৈচিত্র্য এনেছে ‘দ্য রিয়েল’। উদ্যোক্তা তানজিদা আক্তার শিফার এই শাড়ি যেন বাজারে এক ‘হট কেক’। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে উদ্যোক্তা শাড়ি মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও আমেরিকা রাঙাচ্ছে।
তানজিদা শিফা প্রধানত হাফসিল্ক, মসলিন, জামদানী, অর্গাঞ্জা ইত্যাদি শাড়িতে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মিশেল দিয়ে কাজ করে থাকেন। সেখান থেকেই মেঘ, পায়রা, নভোনীল, আভা ইত্যাদি শাড়ির ডিজাইন করা হয়। প্রজাপ্রতি স্টাইলে কটন ব্লাউজ ছাড়াও ছোট্ট সোনামণিদের প্রজাপতি ব্লাউজ, মা-মেয়ের কম্বো প্যাক রয়েছে। সম্প্রতি তারা ওয়েডিং কালেকশন যুক্ত করেছেন।
ফেসবুকের মাধ্যমে শাড়িতে ফিউশন কী ভেবে শুরু করা এমন প্রশ্নে তানজিদা শিফা উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই নিজে নিজের পোশাক ডিজাইন করতাম। অন্যদের করে দিয়েও বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছি। একটু বুদ্ধি খাঁটিয়ে নিজের ভালোলাগার বিষয়টিকে উদ্যোগ হিসেবে বাছাই করে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে মাত্র ২০ হাজার মূলধন নিয়ে উদ্যোক্তা জীবনে প্রবেশ করলাম।’
‘গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে কিছুদিন চাকরি করার পর সিদ্ধান্ত নেই নিজে কোন প্রতিষ্ঠান গড়ব এবং অন্যদের সেখানে কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে দিব। কি নিয়ে কাজ শুরু করব এটা নিয়ে খুব একটা চিন্তা করতেই হয়নি আমার’
এক কথাই যদি জানতে চাই গ্রাহকের সাড়া কেমন? উদ্যোক্তা জানালেন, ‘‘আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ গ্রাহকের কাছে। তারা আমার কাজকে যেমন ভালোবেসেছে, ঠিক তেমনি আমিও পণ্যের গুণগত মান সঠিক রেখে তাদের প্রত্যাশা পূর্ণ করছি। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আমেরিকা, নিউইয়র্ক, কানাডা,অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, বেলজিয়াম, ইটালিসহ আরো কিছু দেশে গেছে আমার শাড়ি।’’
ফেসবুক পেজে ‘দ্য রিয়েল’ চালুর পর এখন পর্যন্ত দু’জন সহযোদ্ধা নিয়ে কাজ করে চলেছেন তানজিদা শিফা। মাত্র ২০ হাজার মূলধন অতিঅল্প সময়ের মধ্যেই লাখ টাকায় পৌঁছে গেছে।
আপনার কোন শাড়ির প্রতি গ্রাহকের আগ্রহ বেশি জানতে চাইলে তানজিদা বললেন, ‘‘হাফ সিল্ক শাড়িতে এমব্রয়ডারড লেস বর্ডার শাড়ির বেশি চাহিদা। ফুল বডি এমব্রয়ডারড শাড়ির দাম পাঁচ হাজার ২০০ টাকা আর হাফ বডি শাড়ির দাম তিন হাজার টাকা। এছাড়াও প্রজাপতি স্টাইলে কটন ব্লাউজে লেসটাও জনপ্রিয়। এই ব্লাউজের দাম এক হাজার ২০ টাকা। এছাড়াও মসলিন, জামদানি, অর্গাঞ্জা শাড়িতে নানা কাজ রয়েছে। আমার এখানে আড়াই হাজার থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত শাড়ি রয়েছে।’’
সিলেট সরকারি মহিলা কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্য অনার্স শেষ করেন শিফা। ফজলুল হক এবং হাসিনা আক্তার দম্পতির কন্যা তানজিদা শিফার জন্ম থেকে বেড়ে উঠা সবটাই নিজ এলাকা সিলেটে।
তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রতি তানজিদা শিফার ভাষ্য, ‘অনেকে ভাবেন একটা উদ্যোগ সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে অধিক পুঁজি থাকতেই হবে এই ধারনার পক্ষে আমি নই। বরং পুঁজি যতটুকুই থাক কাজ করার তীব্র ইচ্ছা এবং শ্রম এই দুটোই আমার কাছে প্রধান। এই দুটি মন্ত্রকে আমি অন্তরে ধারণ করে এগিয়ে যাচ্ছি। আপনারাও শুরু করুন। এগিয়ে যান দেখবেন সফলতা নিজেই দেখা দেবে।’
তামান্না ইমাম
রাজশাহী ডেস্ক, উদ্যোক্তা বার্তা