রূপবান শিম এখন গোদাগাড়ীর কৃষি উদ্যোক্তা শ্রীসংকরের খেতে। শিমের পাশাপাশি এ বছর পটল, মরিচ, সবুজ-শাক, লাল-শাক ও বেগুনের আবাদ করেছেন এই উদ্যোক্তা।
তিনি উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, “আমি গত পাঁচ বছর ধরে শিম চাষ করছি। বিগত বছরগুলোতে লাভবান হওয়ায় এ বছর এক বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছি। আমার এই খেতে যে শিমগুলো আপনারা দেখছেন, এটিকে বলে রূপবান শিম। পাবনাতে এই শিম বেশি চাষ হয়। এখন আমাদের এলাকাতেও হচ্ছে।”
বাঁশ দিয়ে মাচা তৈরি করে চলতি মৌসুমে এক বিঘা জমিতে শিম চাষ করে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে লাভজনক দামে বিক্রি করছেন কৃষি উদ্যোক্তা শ্রী কর। প্রতি বিঘা জমিতে শিম চাষ করতে খরচ হয় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা এবং গড়ে প্রতি বিঘায় দেড়শ’ থেকে দুইশ’ মণ শিম পাওয়া যায়।
শ্রীসংকর বলেন: বর্তমানে আমাদের স্থানীয় বাজারে ১০০ টাকা কেজি দরে শিম বিক্রয় হচ্ছে। এ দাম অব্যাহত থাকলে আমিসহ আমাদের এলাকার আরও যারা শিম চাষ করেছেন, সকলেই লাভবান হতে পারবেন। এ দাম কমে ৫০ টাকা কেজিতে গেলেও আমাদের খরচ উঠে আসবে বলে আশা করছি।
বরেন্দ্রভূমিসহ এই অঞ্চলে গত কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষের মাধ্যমে কৃষকরা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হয়ে উঠছেন। এতে তারা খুব সন্তুষ্ট। শিম সাধারণত শীতকালীন সবজি হলেও গ্রীষ্মকালে এর চাষ করা হচ্ছে। এতে উৎপাদনকারী এবং ভোক্তা উভয়ই খুশি। বর্তমানে স্থানীয় বাজারে নিয়মিতভাবে শিম দেখা যাচ্ছে।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার পালপুর, ধরমপুর এলাকায় উদ্যোক্তা শ্রীসংকরের সবজি খেতগুলোর পাশে চাষ করেছেন আরও একজন উদ্যোক্তা শামীম হোসেন। তিনি এ বছর বাঁধাকপির আবাদ করেছেন। শামীম হোসেন বলেন, “আমাদের খেত থেকেই পাইকাররা এসে পিস হিসেবে বাঁধাকপি কিনে দূর-দূরান্তে নিয়ে যান। স্থানীয় বাজারেও কিছু বিক্রয় করে থাকি।”
এই দুই উদ্যোক্তার খেতের পাশে পাঁচ বিঘা জমিতে হাইব্রিড-সতের জাতের ধান চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা আলহাজ্ব দেলোয়ার হোসেন। তিনি ধানের মৌসুমে ধান, সরিষার মৌসুমে সরিষা চাষ করে থাকেন।
তিনি বলেন: আমি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অবসরপ্রাপ্ত একজন সদস্য। অবসরে চলে যাওয়ার পর মনে হলো অযথা সময় নষ্ট না করে কৃষি আবাদ করি। এতে আমার সময়ও কেটে যাচ্ছে, স্থানীয় কিছু লোকের কর্মসংস্থানও হচ্ছে।
এভাবেই বরেন্দ্র অঞ্চলে সম্প্রসারিত হচ্ছে কৃষিকাজ। গড়ে উঠছেন নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তা।
তামান্না ইমাম
উদ্যোক্তা বার্তা