বাবার সরকারি চাকরির সুবাদে বাংলােদেশের বিভিন্ন জেলায় ছোটবেলা কেটেছে । ছোটবেলা থেকে রান্নার প্রতি ভালোলাগা ও ভালোবাসা ছিল। সেই রান্নাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিতেই ব্যবসার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। মায়ের কাছেই রান্নার হাতেখড়ি সুমির। এখন হয়েছেন প্রশিক্ষক ও সফল উদ্যোক্তা।
তিনি একই সাথে শেফ, রন্ধনশিল্পী, উপস্থাপিকা, রেসিপি ডেভেলপার এবং অভিনয় শিল্পী। বিভিন্ন গুণে গুণান্বিত এই উদ্যোক্তা।
আফরোজা নাজনীন সুমি পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ বিভাগে। এক মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে এখন ঢাকাতেই বসবাস করেন সুমি। ২০১৪ সালে ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে “সুমি’স কিচেন” নামে পেজ খুলে যাত্রা শুরু করেন। ১ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসায় নেমে বর্তমানে ৫০ লাখ টাকা মূলধনে পরিণত করেছেন এই উদ্যোক্তা।
সুমি’স কিচেনে পাওয়া যায় সব রকমের খাবার; ফুচকা থেকে শুরু করে সেট মেন্যু, সব ধরনের কেক। যার মূল্য নির্ভর করে পরিমাণের ওপর।
সুমি তেমন কোন বাধার সম্মুখীন হননি, তবে মায়ের পরিবার থেকে সহযোগিতা পেলেও স্বামীর পরিবার থেকে তেমন কোন সহযোগিতা পাননি। বরং নিষেধ করেছিলেন তারা। কিন্তু সুমি সেদিনের সেই নিষেধাজ্ঞা না মানার কারণেই আজ একজন আত্মনির্ভরশীল মানুষ হয়েছেন এবং হয়েছেন সফল উদ্যোক্তা। নিজের একটি পরিচয় তৈরী করতে পেরেছেন।
ভবিষ্যতে রেস্টুরেন্ট দেওয়ার ইচ্ছা আছে এই উদ্যোক্তার। বর্তমানে ১০ জন কর্মী নিয়ে সুমি’স কিচেন চলছে।ভবিষ্যতে আরো বেশি কর্মী নিয়ে কাজ করতে চান সুমি।
রান্নার উপর নিয়েছেন বিশেষ প্রশিক্ষণ। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন থেকে ফুড এন্ড বেভারেজ প্রোডাকশনের উপর ন্যাশনাল সার্টিফিকেট কোর্স ও করেছেন এছাড়াও আরো বেশ কিছু প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ।
ক্রেতাদের কাছ থেকে অনেক ভালো সাড়া পাচ্ছেন বলে জানান। কারণ সবার থেকে সুমির রেসিপিগুলো আলাদা। যার কারণে ক্রেতারা বেশি পছন্দ করেন
পেয়েছেন বেশ কিছু সম্মাননা তার মধ্যে কলকাতা থেকেও পেয়েছেন দুইটি সম্মাননা (সৃজন সম্মাননা-২০১৮ ও ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী সম্মাননা-২০১৮)। এছাড়া বাবিসাস অ্যাওয়ার্ড ২০১৮, ডিআরইউ অ্যাওয়ার্ড – ২০১৮, গোল্ডেন পেন অ্যাওয়ার্ড -২০১৭, প্রজন্মের সেরা রন্ধন শিল্পী – ২০১৬ সহ অনেক সম্মাননা যোগ হয়েছে এই রন্ধনশিল্পীর ঝুড়িতে।
ঘর-সংসার, ছেলে মেয়ের দেখাশোনা, রান্নার জগতের বাইরে একজন উদার মনের নারী হিসেবে পরিচিত সুমি। রন্ধন শিল্পী আফরোজা নাজনীন সুমির স্বপ্ন ভবিষ্যতে এতিম, অসহায়, সুবিধা বঞ্চিত শিশু ও মানুষদের জন্য কিছু করার।
খাদিজা খাতুন স্বপ্না