রংপুর জেলার মংলাহাটা গ্রামে জন্ম আরিফুজ্জামান বিপ্লবের। দেবী চৌধুরানী কলেজ থেকে ডিগ্রি পাশ করে তিনি বেছে নিয়েছেন উদ্যোক্তা জীবন।
মূলত পারিবারিক সূত্র থেকেই উদ্যোক্তা হয়ে উঠা। বাবা-মাও শতরঞ্জির উদ্যোক্তা ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই বাবা-মার সাথে বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহণ করতো বিপ্লব। লোক কারুশিল্প মেলা, সোনারগাঁও বৈশাখী মেলা – এসকল মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে শতরঞ্জির ধারণা ও পণ্য সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেন এবং তা থেকেই শতরঞ্জির ব্যবসার ভাবনাটা পাকাপোক্ত হয় বিপ্লবের।
মাত্র ২০ হাজার টাকা নিয়ে উদ্যোগ শুরু করেন। প্রতিষ্ঠানের নাম বিউটি শতরঞ্জি কারখানা। প্রথমে শতরঞ্জি দিয়ে শুরু করলেও পরে জায়নামাজ, ওয়াল ম্যাট, টেবিল ম্যাট, ব্যাগ, ওয়াল হ্যাঙ্গার, পাটের তৈরি বিভিন্ন লেডিস ব্যাগসহ নানা পণ্য নিয়ে কাজ করছেন তিনি।
রংপুরে তার নিজস্ব একটা কারখানা রয়েছে। সেখানে ২০ জন নারী ও ৫ জন পুরুষ কাজ করে থাকেন। বতর্মানে মাসে তিনি ১ লক্ষ টাকার পণ্য উৎপাদন করেন এবং মাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার মতো বিক্রি হয়। ক্রেতাদের সাথে ফোনে আলাপ করে ও পণ্যের ছবি পাঠিয়ে তিনি অর্ডার নিয়ে থাকেন। বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ডেলিভারি দিয়ে থাকেন তিনি।
বাংলাদেশের নানা প্রান্তে শতরঞ্জিসহ নানা পণ্য পাঠিয়ে থাকেন। এছাড়া জাপানেও তার পণ্য গিয়েছে। প্রচার ও প্রসারের জন্য তিনি দেশের বিভিন্ন মেলায়ও অংশগ্রহণ করে থাকেন।
আরিফুজ্জামান বিপ্লব বলেন, ‘শতরঞ্জি রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিল্প যা এখন বিলুপ্তির পথে। এই শিল্পকে ধরে রাখা এবং শুধু দেশের ভেতরে না, সারাবিশ্বে তুলে ধরা প্রয়োজন। বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যবাহী শতরঞ্জি পণ্য নিয়ে আরো কাজ করা উচিত এবং এক্ষেত্রে আমি বিপ্লব ঘটাতে চাই।
তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পুঁজি ছাড়াও ব্যবসা হয়, যদি মনে সাহস ও কাজের প্রতি প্রবল ইচ্ছা শক্তি থাকে। কাজের প্রতি কঠোর পরিশ্রমই সফলতা এনে দেয়।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি জানান,’দেশের ঐতিহ্যবাহী শতরঞ্জি পণ্য নিয়ে আমি সবসময় কাজ করে যাবো। সেই সাথে দেশের মানুষকে এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের এই পণ্য নিয়ে কাজ করার জন্য উৎসাহ দিয়ে যাবো।
উদ্যোক্তা আরিফুজ্জামান বিপ্লব ২০১৩ সালে কারুশিল্প ফাউন্ডেশন ও বেঙ্গলের উদ্যোগে শতরঞ্জিতে কারুশিল্পী পুরুস্কার এবং বিসিক থেকে কারুগৌরব পুরস্কার পেয়েছেন।
আফসানা অভি
উদ্যোক্তা বার্তা