ভারতের হরিয়ানা প্রদেশের ফরিদাবাদে ১৬ দিনব্যাপী সুরাজকুন্ড আন্তর্জাতিক হ্যান্ডিক্রাফটস মেলায় অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে শুরু করে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের মেলাটি ছিল ৩৪তম। এ মেলায় বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে বিসিকের ৮টি প্রতিষ্ঠান। বিসিক চেয়ারম্যান জনাব মোঃ মোশতাক হাসান, এনডিসি গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলা পরিদর্শন করেন। বিসিক চেয়ারম্যান দেশে ফিরে তাঁর অনুভূতি ব্যক্ত করেন উদ্যোক্তা বার্তায়।
মেলাটি প্রায় ৮০ একর জায়গা নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সুরাজকুন্ড নামের কোন এক ধনাট্য ব্যক্তির দান করে দেওয়া জমির উপর এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবছর মেলাতে একটি অংশীদার (পার্টনার) দেশ থাকে। অংশীদার দেশ মেলাতে বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকে। অংশীদার দেশ মেলাতে বড় আকারে প্যাভিলিয়ন পেয়ে থাকে। বিসিক কর্তৃপক্ষ ভারতীয় হাই কমিশনে যোগাযোগ করে আগামী বছর অংশীদার দেশ হওয়ার প্রস্তাব দিবে।
সুরাজকুন্ড আন্তর্জাতিক হ্যান্ডিক্রাফটস মেলায় পাকিস্তান ব্যতিত আমাদের প্রতিবেশী প্রায় সবদেশ অংশগ্রহণ করে। নেপাল, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ডসহ এশিয়া, আফ্রিকার ৩৫টি দেশ এবারের ৩৪তম সুরাজকুন্ড আন্তর্জাতিক মেলায় অংশ নিয়েছে।
মেলায় ভারতের প্রতিটি প্রদেশ থেকে উদ্যোক্তাগণ অংশগ্রহণ করে থাকে। পিছিয়ে পড়া রাজ্যগুলোকে বিনামূল্যে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়।
সুরাজকুন্ড আন্তর্জাতিক হ্যান্ডিক্রাফটস মেলার ব্যাপক প্রচার প্রচারণা ছিল। বিসিক যে সকল মেলার আয়োজন করে সেগুলোরও ব্যাপক প্রচার প্রচারণার দরকার আছে। বড় মেলা শুরু হবার কমপক্ষে দুই মাস পূর্বে প্রচার প্রচারণা চালানো দরকার।
মেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল সন্তোষজনক। পুরো মেলা প্রাঙ্গন ছিল সিসিটিভর পর্যবেক্ষনের আওতায় । সাথে ছিল পর্যাপ্ত নিরাপত্তা রক্ষী। বাংলাদেশর মেলাগুলোতেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোড়দার করা দরকার।
মেলায় উদ্যোক্তাগণকে দুপুরের খাবার সরবারহ করা হতো। দুর দুরান্ত থেকে আসা মহিলা উদ্যোক্তাগণের আবাসন ( থাকার ব্যবস্থা) মেলা কর্তৃপক্ষ করেছিল। বিসিক কর্তৃক আয়োজিত মেলাগুলোতেও দুর দুরান্ত থেকে আগত মহিরা উদ্যোক্তাগণকে আবাসন সুবিধা দেওয়া যেতে পারে।
মেলার সাজ সজ্জায় ঐতিহ্যের সাথে আধুনিকতার সমন্বয়ে প্যাভিলিয়ন ও স্টলগুলোকে দৃষ্টিন্দন করে গড়ে তোলা হয়েছিল। প্রতিটি স্টল ছিল এক একটি ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক। বিসিক কর্তৃক আয়োজিত মেলার স্টলগুলো সাজ সজ্জার ক্ষেত্রে ইতিহাস ঐতিহ্যের সমন্বয়ে আধুনিকভাবে সাজিয়ে তোলা যেতে পারে। সুরাজকুন্ড আন্তর্জাতিক হ্যান্ডিক্রাফটস মেলার মত বড় পরিসরে মেলা করা যেতে পারে।
বাংলাদেশি মেলাগুলোতে বিদেশি উদ্যোক্তাগণ আমন্ত্রণ জানানো যেতে পারে। বিদেশি উদ্যোক্তাগণকে সকল রকমের সুযোগ সুবিধা প্রদানসহ আবাসন ( থাকার ব্যবস্থা) করা যেতে পারে।
সুরাজকুন্ড আন্তর্জাতিক হ্যান্ডিক্রাফটস মেলায় বিভিন্ন উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে প্রশিক্ষনার্থীদের পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হয় যাতে প্রশিক্ষণার্থীগণ অনুপ্রাণিত হন। বিসিক কর্তৃক আয়োজিত মেলায় বিভিন্ন উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে প্রশিক্ষনার্থীদের পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। পরিদর্শনের ব্যবস্থা করলে প্রশিক্ষণার্থী অনুপ্রাণিত হয়ে উদ্যোক্তা হবেন। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা