২০১৭ সালের ডিসেম্বরে আতিকা রোমা তার ১১০ সিসি’র স্কুটি নিয়ে তিন দিনের জন্য ‘ডিম পাহাড়’ ভ্রমণে যান। সেসময় তার মনে ইচ্ছে জন্মে তার ১১০ সিসি’র স্কুটি নিয়ে তিনি দেশজুড়ে ভ্রমণ করে বেড়াবেন, উপভোগ করবেন দেশের অপরূপ সৌন্দর্য।
তিনি বেরিয়ে পড়লেন স্কুটি নিয়ে, ভ্রমন করলেন। তখন অনেকেই উদ্যোক্তার ভ্রমণ সম্পর্কে জানবার পর তাকে ফেসবুক ইনবক্সে অনুরোধ করা শুরু করলেন যেনো তিনি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সমাজের অন্যান্য নারীদেরও স্কুটি চালাবার প্রশিক্ষণ দেন।
সে বছরই চলাফেরার পথে বা বাসে নারীদের সাথে ঘটা কিছু নির্যাতনের ঘটনা তাকে মানসিকভাবে বেশ যন্ত্রণায় ভুগিয়েছে। পাশাপাশি অনেক বাবারাও তাকে জোর অনুরোধ করেন তাদের মেয়েদের নিরাপদভাবে যাতায়াত সুবিধার্থে কিছু একটা করবার জন্যে।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে উদ্যোক্তার লালিত সেই স্বপ্নকে তিনি বাস্তবে রূপ দেন, নারীদের জন্যে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করেন স্কুটি ট্রেনিং ইন্সটিটিউট ‘যাব বহুদূর’ ।
নারীদের নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ এবং ভিন্নমাত্রার ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে উদ্যোক্তা তুমুল গতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন ‘যাব বহুদূর’ নিয়ে।
আতিকা রোমা তার উদ্যোগ সম্পর্কে বলেন, “নারীদের যাতায়াত ব্যবস্থাকে নিরাপদ ও সহজ করার জন্যে আমি প্রায়ই ভাবতাম যে কি উদ্যোগ গ্রহণ করা যায়। সেই লক্ষ্যে আমি চাইলেই একটা বাস ক্রয় করতে পারবো না। পরিবেশ পরিস্থিতি দেখে তাই ভাবলাম নারীদের যদি স্কুটি চালাবার ট্রেনিং দেয়া হয় তাহলে অধিকাংশ নারী নিজেদের যাতায়াত ব্যবস্থার জন্যে অন্যের ওপর নির্ভর করবেন না।”
বর্তমানে তিনি ২০তম ব্যাচকে স্কুটি চালাবার প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, তাদের আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠতে সাহায্য করছেন এবং সকল বাবাদের অনুরোধগুলোকে স্বযত্নে বাস্তবায়নের চেষ্টায় নিয়োজিত আছেন।
তিনি আরো বলেন, “যাব বহুদূরের পথচলা খুব সহজ ছিলো না। সাহায্য পাবার আশায় অনেক জায়গায় আমি গিয়েছি কিন্তু কেউই সাহায্যের হাত বাড়ায়নি। একটা সময় পরে, ধানমন্ডি মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। তবে নারীরাই নারীদের পাশে এসে দাঁড়ালেন।”
উদ্যোক্তা আতিকা রোমা তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানান, তিনি স্বপ্ন দেখেন অন্তত ৫০ জন নারী যদি স্কুটি চালানো শেখেন তবে আরো ৫০ জন নারী তাদের সাহায্যে হয়তো নিরাপদ ও সহজ যাতায়াত ব্যবস্থা খুঁজে পাবেন।
জেবুননেসা প্রীতি
এসএমই করেস্পন্ডেন্ট ,উদ্যোক্তা বার্তা