ঢাকার মেয়ে তাজরীন করিম মিথিলা। পড়াশোনা করেছেন ইংরেজি সাহিত্যে ইডেন কলেজ থেকে।মেকাপের প্রতি আগ্রহ থাকায় চেয়েছিলেন বিউটিফিকেশন নিয়ে কাজ করতে। কিন্তু বর্তমানে কাজ করছেন মেটালের অলংকার উৎপাদন নিয়ে।
অনেক আগে থেকেই তার ইচ্ছা ছিল নিজে কিছু একটা করার। আর সেই ইচ্ছা থেকেই শুরু হয় তার পথ চলা। তরুণী এই উদ্যোক্তা উপলব্ধি করতেন নিজের চলার পথ তিনি নিজেই তৈরি করবেন। কাজে সার্বক্ষণিক পাশে পেয়েছিলেন তার মা এবং তার স্বামীকে। অনুপ্রেরণার সবচেয়ে বড় অংশও ছিলেন তারা।
২০১৫ সালে উদ্যোক্তা হবার পথে প্রথম যাত্রা শুরু করেন তিনি। উদ্যোগে প্রথম মূলধন ছিল তিন লক্ষ টাকা আর বর্তমানে উপার্জন করছেন প্রতিমাসে ১২ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। সারাদেশে আজ পাওয়া যাচ্ছে উদ্যোক্তার তৈরি পণ্য। কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হয়েছে অনেকের।
মা চাইতেন সবসময় মেয়ে যেন নিজে স্বাবলম্বী হতে পারে। পায়ের নিচের মাটি যেন শক্ত করতে পারে। সেখান থেকেই সাহস পান তরুণ উদ্যোক্তা মিথিলা। আর স্বামীর দিক থেকেও সহযোগিতার কোনো ঘাটতি ছিল না। স্বামী নিজেও চাইতেন স্ত্রী যেন কারো আন্ডারে জব না করে নিজেই নিজের ওনার হতে পারে। সকলের অনুপ্রেরণা আর সহযোগিতায় উদ্যোক্তা পেয়েছিলেন সামনে আগানোর সাহস। দেখেছিলেন স্বপ্ন লক্ষ্যে পৌঁছানোর। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং স্বপ্নকে সত্যি করতে পেরেছেন। লক্ষ্য অটুট রেখে জীবনে আসা সমস্ত বাধা-বিপত্তিকে অতিক্রম করেছেন অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে। জীবন মানেই এগিয়ে চলা। নিজের লক্ষ্যকে সেট করে সে অনুযায়ী এগিয়ে চলেছেন উদ্যোক্তা হবার পথে।
তার প্রতিষ্ঠান নাম “মেসার্স রাকমিথ কোম্পানি”। তার প্রতিষ্ঠানে তৈরিকৃত পণ্যগুলোর মধ্যে অর্নামেন্টস, গ্লাস, এলুমিনিয়াম সেট, টিস্যু বক্স অর্নামেন্টস বক্স, হেয়ার ক্লিপ এবং টয়েস উল্লেখযোগ্য। উদ্যোগ শুরু করার পর তিনি কালার এবং মার্কেটিং নিয়ে প্রবলেমেই পড়েছিলেন বলা চলে। প্রোডাক্টস এর কালার যেন টেকসই হয় সেজন্য অনেক কষ্ট করতে হয়েছে তাকে। অনেক খোঁজাখুঁজি এবং গবেষণা করার পর তিনি ভাল কালারের খোঁজ পেয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি কালার ইমপোর্ট এর কাজও করছেন। প্রোডাক্ট উৎপাদনেই শুধু নয় প্রোডাক্ট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রেও প্রবলেম হয়েছিল তার। কিন্তু জীবনে আসা কোনো বাধাই বড় হয়ে দাঁড়াতে পারেনি তার সাহসিকতার কাছে। আগের চেয়ে দ্বিগুণ উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে চলেছেন তিনি।
এসএমই মেলা সহ অন্যান্য মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনেক বেশি লাভবান হতে পেরেছেন এই উদ্যোক্তা। একজন সফল উদ্যোক্তা হবার জন্য কাজের ক্ষেত্রে আপোসহীন থাকতে হয় বলে মনে করেন মিথিলা। কাজকে ভালবাসতে হয়, সময় দিতে হয় তবে আসে সফলতা। তিনি মনে করেন, “উদ্যোক্তা হবার জন্য ট্রেনিং অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ট্রেনিং একদিকে যেমন কাজের অভিজ্ঞতা বাড়ায় তার পাশাপাশি কখন কি কাজ করলে সফলতা পাওয়া যাবে, কিভাবে কাজের সমাধান করতে হবে, এগুলো ট্রেনিং এর মাধ্যমে একজন উদ্যোক্তা ভালোভাবে শিখি নিতে পারেন।”
মার্জিয়া মৌ,
উদ্যোক্তা বার্তা