কোনো কাজই আসলে ছোট নয়, যদি ভবিষ্যতে বড় কিছু করতে চাও তবে ছোট থেকেই শুরু করতে হয় – এমনটাই বিশ্বাস করেন ব্র্যাক শিক্ষার্থী আদৃতা।
ভবিষ্যতে একজন বড় উদ্যোক্তা হতে চান আদৃতা, বড় ব্যবসায়ের কাজে প্রয়োজন বড় মূলধন। তাই তো পড়াশোনার পাশাপাশি ছোট উদ্যোগের মাধ্যমে সেই মূলধনের ব্যবস্থা করছেন।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনের ‘পকেটগেট’ এর চিপিচাপা গলিতে দেখা মেলে বেশ কিছু ফুড কোর্ট। সেখানে পাওয়া যাচ্ছে, নানা ধরনের খাবার। মধ্যাহ্নভোজে এসব দোকানই অনেকের ভরসা। তবে দুপুরের খাবারটা ঠিকঠাক জমে না বলে অনেকেরই খানিকটা আক্ষেপ ছিল। এসব দেখেই মেহরীয়ান মহসীন আদৃতা দুপুরে স্বাস্থ্য সম্মত খাবারের ব্যবস্থা করেন।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ষষ্ঠ সেমিস্টারের বিবিএ’র শিক্ষার্থী বলেই হয়তো ব্যবসার প্রতি একটা বাড়তি আগ্রহ আদৃতার।
মেহরীয়ান মহসীন আদৃতা বলেন, ক্যাম্পাসের পাশেই অনেক নামীদামি রেস্তোরাঁ আছে, কিন্তু সবাই তো দৈনিক সেখানে খেতে পারে না। বাড্ডায় আমাদের নতুন ক্যাম্পাস হওয়ায় বিকল্প ব্যবস্থাও সেভাবে গড়ে ওঠেনি। তাই আমরা দুজন মিলে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিই।
১০ ফেব্রুয়ারি ছিল প্রথম দিন। একটা সাধারণ টেবিল, তার ওপর বাক্সভর্তি খাবার। ছোট করেই আয়োজন। এক দিন পরই আমাদের খাবার নিয়ে এক আপুর ফেসবুক স্ট্যাটাস ভাইরাল হয়। সেদিন থেকে সপ্তাহজুড়েই প্রচুর সাড়া পেয়েছি। বিশেষ করে বন্ধু ও পরিচিতজনদের কাছ থেকে। সবাই এসে অভিনন্দন ও শুভকামনা জানাচ্ছিল। তাদের আনন্দ দেখে মনে হচ্ছিল, ওরা আসলেই আমার উদ্যোগের জন্য অনেক খুশি।
আপাতত খাবারের মেন্যুতে থাকছে ডিম-খিচুড়ি ও চিকেন-খিচুড়ি। ডিম-খিচুড়ি ৭০, চিকেন-খিচুড়ি ৯০ টাকা, ভর্তা ফ্রি। বাসায় রান্না হয় ডিম ও মুরগির আইটেম। মেহরীয়ানের মা রান্না করেন খিচুড়ি ও ভর্তা। যেহেতু বাসায় রান্না হয়, তাই একদম স্বাস্থ্যকর খাবারই সবাইকে খাওয়াতে পারছেন। বাইরের তুলনায় দাম সাশ্রয়ী হওয়ায় অনেকেই দুপুরের খাবার খাচ্ছেন আদৃতার মায়ের হাতের খিচুড়ি। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন রিপিট ক্রেতা হয়েছে, যাঁরা নিয়মিতই খেতে আসেন।
নিজ ক্যাম্পাসের পাশেই এভাবে খাবার বিক্রি করার উদাহরণ খুব বেশি নেই। আদৃতা বলেন, ‘আমি চাই অন্যরাও সাহস করে এগিয়ে আসুক, শত শত উৎসাহের মধ্যে কিছু বাজে কথা কানে আসবেই। সেগুলোকে পাশ কাটিয়ে এগোনোই চ্যালেঞ্জ। মন্দ কথায় থেমে থাকলে জীবন চলবে না।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে আদৃতা বলেন, যদি সবার সাপোর্ট পাই তাহলে ভবিষ্যতে এটাকে বড় করে রেস্তোরাঁ দেওয়ার চেষ্টা করব। এছাড়াও ক্লোদিং আইটেম নিয়ে নিজস্ব প্রোডাকশনে বড় কিছু করার ইচ্ছে আছে।
সেতু ইসরাত,
উদ্যোক্তা বার্তা