নদী অববাহিকা, চরাঞ্চল ও সুন্দরবনের মতাে দুর্গম এলাকায় বসবাসরত দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা সেবা দিতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের যৌথ উদ্যোগে চালু হচ্ছে ভাসমান হাসপাতাল ‘জীবন খেয়া’।
বিদ্যানন্দের কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সাথে যৌথভাবে ১০০ শয্যার করােনা হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পর ‘জীবন খেয়া’ হতে যাচ্ছে সংগঠনটির আরেকটি প্রয়াস।
বিদ্যানন্দের স্বেচ্ছাসেবক সালমান খান বলেন, ‘খুলনার রূপসা নদীতে থাকা একটি পর্যটন তরীকে হাসপাতাল বানানাের জন্য সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকদের কোস্টগার্ডের সহায়তায় ব্যাপকভাবে কাজ করছেন।’
‘‘বােটটিতে রয়েছে ২১টি কেবিন। ‘নিউ রেইনবাে ট্যুর’ নামে একটি পর্যটন প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন এই বােটটি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতাল হিসেবে তৈরি হয়ে যাবে।”
প্রাথমিকভাবে হাসপাতালটির রুট প্ল্যান কী হবে তা কোস্টগার্ড নির্ধারণ করছে বলে জানান তিনি।
সালমান খান বলেন, বুধবার সারাদিন সেই বোটে রংয়ের কাজ চলেছে। ডাক্তার, নার্সসহ পর্যাপ্ত লােকবল থাকবে হাসপাতালে। এছাড়া অন্তত ৮ জন সাপাের্ট স্টাফ থাকবেন বােটটি পরিচালনার জন্য। নিরাপত্তার পুরাে দায়িত্বে থাকবে কোস্টগার্ড।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কিশোর কুমার দাশ এই ভাসমান হাসাপাতাল প্রতিষ্ঠার পেছনের কারণ উল্লেখ করে বলেন, মানবতার সেবায় সংগঠনটি নানা সৃষ্টিশীল ভাবনা ভেবে থাকে। সব সময় আমরা কিছু উদাহরণ তৈরি করতে চেয়েছি। এটিও তার অংশ।
‘‘নদীমাতৃক বদ্বীপ বাংলাদেশে ঝড়, বন্যার মতাে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মােকাবেলা করেই মানুষকে বাঁচতে হয়। দীর্ঘস্থায়ী বন্যা তাদেরকে নাস্তানাবুদ করে দিচ্ছে, তারা সব হারিয়ে হয়ে যাচ্ছেন ক্লাইমেট রিফিউজি।’’
তিনি বলেন ‘এই সব হারাচ্ছেন জীবিকা, অসুখবিসুখে হচ্ছেন জর্জরিত। এই মানুষগুলােকে কিছুটা স্বস্তি দেবার জন্যই এ উদ্যোগ নিয়েছে আমার সহকর্মীরা । স্বাস্থ্য সেবায় সরকারি নানা ভালাে উদ্যোগের পাশাপাশি বিদ্যানন্দ সব সময় ভালাে উদাহরণ নিয়ে সামনে এসেছে। নানা যাতায়াত অসুবিধার কারণে উপকূল ও নদী অববাহিকায় বসবাসরত মানুষ দূরের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে যেতে পারেনা। ‘জীবন খেয়া’ তাদের তার কিছুটা ভাগ নেবে কেবল।’
বাংলাদেশের জনগণের অর্থে পরিচালিত বিদ্যানন্দ সব সময়ই জনগণের কাছে সহায়তার আহবান জানিয়েছে। ‘জীবন খেয়া’ চালু করতেও সকলকে অর্থ, ওষুধ বা অন্য যে কোনো কিছু নিয়ে এগিয়ে আসতে আহবান জানান কিশাের কুমার দাশ।
ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা