ঠাকুরগাঁয়ের মেয়ে সায়কা ইকবাল। পড়াশোনা করেছেন বাংলা সাহিত্যে ইডেন কলেজ থেকে।স্বপ্ন ছিল সরকারি ব্যাংক কিংবা বড় কোন চাকরি করবেন। একটি প্রাইভেট সেক্টরে কিছুদিন চাকরিও করেছিলেন তিনি। কিন্তু প্রথম সন্তান হবার কিছু দিন আগে কাজের প্রেসার এবং শারীরিক অসুস্থতা সব মিলিয়ে চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। এর পরের গল্পটা অন্যরকম। তিনি হয়েছেন একজন সফল উদ্যোক্তা।বর্তমানে “সুফিয়ানা দি গ্লামার ” এই প্রতিষ্ঠান উনার সায়কা ইকবাল নিজেই।
২০১৭ সালে মাত্র ৫,০০০ টাকা নিয়ে যাত্রা শুরু করেন উদ্যোক্তা হবার পথে। বর্তমানে কাজ করছেন থ্রিপিস, কুর্তি, প্লাজু, শাড়ি এবং মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের পোশাক নিয়ে।বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহণ এবং অনলাইনে বিজনেস পরিচালনা করেন সায়কা। ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রোডাক্টের ম্যাটেরিয়ালস নিজেই সংগ্রহ করেন এবং কর্মীদের দিয়ে সেগুলো তৈরি করে নেন তিনি। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নিত্য নতুন ডিজাইন করে তৈরি করেন এক একটি পোশাক।প্রত্যেকটি পোশাকে যেন লেগে থাকে উদ্যোক্তার স্বপ্ন আর ভালোবাসা ।
বাংলা সাহিত্যে অনার্স এবং মাস্টার্স কমপ্লিট করেছেন তিনি ইডেন কলেজ থেকে। নিজের এবং পরিবারের স্বপ্ন ছিল তিনি একজন চাকুরীজীবি হবেন। কিন্তু আজ তিনি হয়েছেন একজন উদ্যোক্তা। একজন সফল উদ্যোক্তা। ঢাকার বিভিন্ন মেলায় যাওয়া-আসার কারণে তিনি বিভিন্ন উদ্যোক্তাদের দেখে অনুপ্রাণিত হন।পরিবারের কারও সাপোর্ট না থাকলেও তিনি উদ্যোক্তা হবার পথে পা বাড়ান। শুধু তাই নয় ছোট বেবি কে নিয়েও তিনি মেলায় অংশগ্রহণ করেন। ছোট বেবি কে দুটি চেয়ারের মাঝে ঘুমিয়ে রেখে ক্রেতাদের কাছে নিজের পণ্যের পরিচিতি করান।উদ্যোক্তা হবার জন্য নিজে কঠোর পরিশ্রম করেছেন, আত্মবিশ্বাসের সাথে লড়াই করেছেন কিন্তু কখনো দমে যাননি। নিজের মনোবল এর উপর ছিল কঠিন আস্থা আর বিশ্বাস। আমি পারবো আমাকে পারতেই হবে এই বিশ্বাসই যেন সফলতার মুকুট পড়িয়েছে আজ সায়কা ইকবালকে।করোনার প্রকপের সময়ও তিনি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন।কিন্তু তাই বলে তিনি মনোবল হারাননি। নিজের ভেতরেই দ্বিগুণ সাহস আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়েছেন সামনের পথে। জয় করেছেন সমস্ত বাধা আর বিপত্তিকে নিজের আত্মবিশ্বাস এর দ্বারা।
তিনি মনে করেন জীবনে আসা কোনো বাধাই নিজের আত্মবিশ্বাস এর চাইতে বড় হতে পারেনা। নিজের প্রতি বিশ্বাস থাকলে সামনে যতই বাধা আসুক না কেন সামনে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন সায়কা। সঠিক কর্ম পরিকল্পনা আর গাইড পেলে ভালো কিছু করা সম্ভব বলে বিশ্বাস রাখেন এই উদ্যোক্তা।নিজের আগ্রহ থাকায় বিসিক থেকে তিনি ব্লক বাটিকের উপর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। একজন উদ্যোক্তা হবার জন্য ট্রেনিং অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ। একটা ভালো ট্রেনিং একজন উদ্যোক্তার পথপ্রদর্শক বলা চলে। এর মাধ্যমে একজন উদ্যোক্তা তার চলার পথ কতটা মসৃণ সে সম্পর্কে জানতে পারেন।প্রোডাক্ট ধরন, প্রডাক্ট কোয়ালিটি কিংবা মার্কেট চাহিদা সম্পর্কে আগে থেকে ধারণা থাকলে পরবর্তীতে সমস্যার সম্মুখীন কম পড়তে হয় বলে জানান সায়কা।
এসএমই মেলা সহ অন্যান্য মেলায় অংশগ্রহণ এর মাধ্যমে অনেক বেশি লাভবান হতে পেরেছেন এই উদ্যোক্তা। একজন সফল উদ্যোক্তা হবার জন্য কাজের ক্ষেত্রে আপোস হীন থাকতে হয় বলে মনে করেন তিনি। কাজকে ভালবাসতে হয়, সময় দিতে হয় তবে আসে সফলতা।
মার্জিয়া মৌ, উদ্যোক্তা বার্তা